Ameen Qudir
Published:2017-05-30 16:44:34 BdST
পতেঙ্গা এলাকার মানুষের লাশের গন্ধ এখনো নাকে লাগে
ডা. আশীষ দেবনাথ
______________________
স্কুল জীবন দক্ষিন হাতিয়া কাটিয়েছি। সিগনাল যতই বাড়ত নাচতে নাচতে সাগর পাড়ের দিকে এগিয়েছি। সিগনাল বাড়ার সাথে সাথে তীর ছাপিয়ে কূলের দিকে জল আসতে দেখলে আনন্দে বন্ধুরা সে জলে নাচতে থাকতাম। স্রেফ বাল্যকালের দুরন্তপনা! কারন স্কুলের সময় হলে এই মেঘনাতেই পুকুরে স্নানের আগে একদফা ডুবোডুবি খেলা হয়ে যেত।
নোয়াখালী থেকে হাতিয়া যাবার পথে সে সময়ে সিগনালে পড়ে চরে মুড়ি খেয়ে ১/২দিন আটকে থাকা কিংবা প্রচন্ড ঘূর্নিঝড়ে ট্রলার/ সী ট্রাকের মেঘনার বুকে চরকীর মতো নিশানাহীন ঘুরতে থাকার মতো ভয়ংকর অভিজ্ঞতাও ফেস করেছি কতো।
তবে ৭৭ থেকে ৮৩ হাতিয়াতে যত সিগনালই দেখেছি গুরুতর বিপদে পড়তে হয়নি কখনো। যদিও ১৯৫৬ সালে চট্টগ্রাম থেকে হাতিয়া আসার পথে প্রচন্ড সাইক্লোনে বাদুরা জাহাজ ডুবিতে বড় ভগ্নীপতিকে সাগরের বুকে হারাই (যে দিদিকে কিছুদিন আগে কোলকাতায় দেখতে গিয়েছিলাম)।
ঝড়ের ভয়াবহতা ফেস করেছি ৯১ সালে চট্টগ্রামে। পরীক্ষার সময় ছিল বলে রাতে হাসপাতালের ৫ম তলার গ্যালারীতে পড়তে গিয়ে প্যাথলজী বই (Govans) মাথায় দিয়ে শুয়ে থাকতে বাধ্য হয়েছি। রাত ৩টার দিকে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে গিয়ে গ্যালারীর দরজা খোলার সাহস পাইনি। ভোরে বের হয়ে দেখি বিরান ক্যাম্পাস! মৃতপ্রায় শহর। বিএমএ এবং ছাত্র সংগঠনগুলোর উদ্দ্যেগে নেমে পড়েছিলাম মেডিকেল টিমের কাজে। পতেঙ্গা এলাকার মানুষের লাশের গন্ধ এখনো নাকে লাগে।
সত্যি কথা বলতে কি প্রকৃতির সাথে কখনো কোন মশকরা নয়! সতর্ক থাকুন। নিরাপদে থাকুন। সবার জন্য শুভকামনা।।
____________________________
লেখক ডা. আশীষ দেবনাথ
বিশেষজ্ঞ এনেসথেসিওলজিষ্ট, নোয়াখালী। সিএমসি ২৮।
আপনার মতামত দিন: