Ameen Qudir
Published:2017-05-29 17:00:20 BdST
ছাত্রদের গুন্ডামীর প্রতিবাদ করলেন মার্কিন প্রবাসী ঢাবির সাবেক ছাত্র :কারণ পড়লে চমকে যাবেন
খালিদ খান। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী
___________________________
আমাদের দ্বিতীয় সন্তানের জন্ম নিউ ইয়র্কের সেরা প্রাইভেট হাসপাতালগুলোর একটায়। ওয়াটার ব্রেকিং হয়ে যাবার পরেও আমার স্ত্রীকে একঘন্টার উপর বসিয়ে রাখা হল। আক্ষরিক অর্থেই বসিয়ে রাখা। আমরা রিসেপশনের সোফায় বসে অপেক্ষা করলাম, কোনও বেডের ব্যবস্থা তখনও করা হয়নি।
আমাদের প্রথম সন্তানের জন্ম ব্যাংককের বিখ্যাত বামরুনগ্রাদ হাসপাতালে। অত্যন্ত অভিজ্ঞ এবং/অর্থাৎ বৃদ্ধ ডাক্তার একটা টেস্টের রিপোর্ট দেখতে ভুলে গিয়েছিলেন। যখন দেখলেন তখন অনতিবিলম্বে আমার স্ত্রীকে সি-সেকশন করতে বলা হল। আমি তখন ইথিওপিয়ায়। জরুরি ভিত্তিতে ব্যাংককে ফিরলাম।
এই দুই ঘটনার কোনটাতেই আমরা কোনরকম অভিযোগ করিনাই। দ্বিতীয় সন্তানের সময় ধরে নিয়েছি যে এভাবে বসিয়ে রাখায় নিশ্চয় ঝুঁকি নাই তাই ডাক্তার বসিয়ে রেখেছে। প্রথম সন্তানের সময় ভেবেছি অশীতিপর ডাক্তার, তার ভুল হতেই পারে।
কিন্তু এই ঘটনা বাংলাদেশে ঘটলে কি হত? আমরা অথবা আত্মীয়-বন্ধু কেউ না কেউ ডাক্তারের অবহেলার অভিযোগ করে বসতাম।
বাংলাদেশের পাবলিক হেলথ সংক্রান্ত পরিসংখ্যানগুলো দেখুন। গড় আয়ু, মাতৃমৃত্যুর হার, ইমিউনাইজেশনসহ আরও অনেক সূচকে আমরা আমাদের চেয়ে কয়েকগুণ ধনী অনেক দেশের চেয়ে এগিয়ে। এসব সাফল্যের মূল কারিগর কারা?
তার মানে এই না যে ডাক্তাররা দোষ করেননা। নিষ্ঠার অভাব আমাদের সমাজের সব ক্ষেত্রে। ডাক্তাররাতো সমাজের বাইরে নন। সেটার প্রতিকারের জন্য রেগুলেশনের প্রয়োজন। সেই দায়িত্ব নীতিনির্ধারকদের। দল বেঁধে ডাক্তার পেটালে সফট টার্গেটের উপর ঝাল মেটানো যাবে, সমস্যার সমাধান হবেনা।
আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের গুন্ডামি ছাড়া উচিত। আমরা যারা ঢাবিতে পড়েছি, যারা এখন পড়ছে, তারা বেশিরভাগ খুব সাধারণ পরিবারের সন্তান। ঢাবি ছাত্রদের এই হুলিগান প্রবণতাটাকে আমার কাছে অক্ষমের হঠাৎ ক্ষমতালাভের বিশ্রী প্রদর্শণ বলে মনে হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের দেশের মানুষ সম্মান করে দেশের জন্য তাদের ত্যাগ আর অবদানের জন্য, হুলিগানিজমের জন্য না।
_________________________________
লেখক খালিদ খান। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী।
লেখাটি তার ফেসবুক ওয়াল থেকে পাওয়া।
আপনার মতামত দিন: