Ameen Qudir

Published:
2017-05-25 04:19:58 BdST

ভুল চিকিৎসা সমাচার


 

 

 

 

 

ডা. শিরিন সাবিহা তন্বি
___________________________

 

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ইতিহাসের চেয়রম্যান চিত্তরঞ্জন বাবুর চিকিৎসা বিষয়ক বক্তব্য শুনে মনে হলো রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের ছাত্রদের কি না যেন কি অবোল তবোল শিখাচ্ছে।
১৯/২০ বছর বয়সী রুগী জ্বর নিয়ে এসে বলবে জ্বর,রেশ আছে।তা শুনে এদেশের ডাক্তারদের বলতে হবে ঐ অল্পবয়সী রুগীর ব্লাড ক্যান্সার হইছে।
আর বলতে না পারলে রুগী গাল ফুলিয়ে ইন্ডিয়া চলে যাবে।
কি হাস্যকর!এই শিক্ষক বলেই না ঐ ছাত্র!!
ঢাবির প্রভিসি স্যার বললেন আরো মজার কথা।বন্ধু হাসপাতালে ভর্তি হলো।মারা গেল।আবেগ থেকে হাসপাতাল ভাংচুর করবে।এই আবেগ ডাক্তারদের নিয়ন্ত্রন করার ব্যবস্থা করতে হবে।
কি দিয়া??
আপনার রসায়নের শিক্ষককে জিজ্ঞাসা করেন স্যার।লাফিং গ্যাসের মত কোন গ্যাস আছে নাকি আবেগ নিয়ন্ত্রনের।
অসচেতন এক রোগী।এই ফাঁকে বলি এদেশের নব্বই ভাগ মেয়েরাই এমন।রোগকে পুষে রাখি আমরা।
তার রক্তে ক্যান্সার।রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নষ্ট।মাস খানেক/তিনেক ধরে জ্বর ব্যথা।হাতের কাছে প্যারাসিটামল খেয়ে কষ্ট কমিয়ে রাখত।
হয়ত এতটা গুরুত্ব দেয়নি।বুঝতে পারেনি।ডাক্তার দেখাবার প্রয়োজন মনে হয়নি।
এই সব ই ভুল অযত্ন।

 

 


আফিয়া আক্তার চৈতীর নিজের প্রতি করা নিজের ভুল/অবহেলা।
যদি প্রথম প্রথম অসুস্থ ফিল করেই সে ডাক্তারের কাছে আসত।তার রক্ত পরীক্ষাতে ক্যান্সার ধরা পড়ত।বোন ম্যারো টেষ্ট করে ক্যান্সার কনফার্ম হতো।
আজ যে ছাত্ররা ভাংচুর করছে তারা "সেভ আফিয়া"নামক পেজ ওপেন করে চিকিৎসা খরচ যোগাড় করতে নামত।
মেয়েটি মন খারাপ করা কিছু পোষ্ট লিখত।বাবা মা পরিবার মেয়েটির আসন্ন মৃত্যুর শংকায় শংকিত হতো।তখন মেয়েটির প্লাটিলেট কাউন্ট কমে এমন ব্লিডিং শুরু হলে,আইসি ইউ তে নেয়ার পরে সে মারা গেলে মৃত্যুটা গ্রহনযোগ্য হতো।
তাহলে সম্মানিত সূধী সমাজ বলুন।এই অকাল মৃত্যুতে ভুল বা অবহেলা কার???
চিকিৎসকের???না কি আফিয়া এবং তার পরিবারের???
এই সামান্য বিষয়টি না বুঝে সন্ত্রাসীর মত একটা হাসপাতাল ভাঙ্গল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্ররা।
এই কিসের আবেগ?এই আবেগ নিয়ে এই ছাত্ররা দেশের বিচারক/প্রশাসক/আইন শৃংখলা রক্ষাকারী/কর,শুল্ক,ভ্যাট নিয়ন্ত্রনকারী হয়???
তাইতো আজ দেশটার এই দুরাবস্থা।
আর তাদের শিক্ষকরা এই চরম অন্যায় কাজটার স্বপক্ষে সাফাই গায়???
আবার আস্থার কথা বলছেন?ইন্ডিয়ার ডাক্তারের প্রতি আস্থা আছে।হাজার জন যাচ্ছেন!ওদের মাঝে কতজন সুস্থ হয়ে ফিরে আসেন?কতজন কোয়াক ট্রিটমেন্ট - সর্বরোগের উপশমের মত স্টেরয়েড খেয়ে এসে দেশে বসে মরেন আর কতজন ভূয়া চিকিৎসকের পাল্লায় পরেন,খোঁজ নেন।ইন্ডিয়ার সব ডাক্তার দেবী শেঠী নন।
আর অন্য দেশে আস্থা??থামুন।
কথা সাহিত্যিক হুমায়ুন আহমেদ এই দেশে মারা গেলে দেখা যেত যার যা আছে তাই নিয়ে বাংলাদেশের ডাক্তার আর হাসপাতালের উপর ঝাপিয়ে পরতেন।
বিলেতী ডাক্তার পেরেছে বাঁচাতে??

 


হুমায়ুন আজাদ,হুমায়ুন আহমেদ,জিল্লুর রহমান,সাম্প্রতি সিলেটে বোমা হামলায় নিহত অফিসার আজাদ কিংবা আবৃত্তিকার কাজী আরিফ???
আস্থাহীনতা আপনাদের চরিত্রে।আপন জুয়েলার্সের মালিক দুর্নীতি করে?ঐ দুর্নীতির ভাগ বহু কর,ভ্যাট,পুলিশ,শুল্ককর্মকর্তার পকেটে পৌছে।বহু রাজনীতিবিদের পকেটে পৌছে।
তাইতো অমন কুলাঙ্গার ছেলের দিনের হাত খরচ দু লাখ টাকা।
আপনারা আজ এতটাই দুর্নীতিগ্রস্থ এবং ধর্মহীন যে মৃত্যু নামক অমোঘ পরিনতিকে ভুলে যান।
মায়ের পেটে থেকেই কালো টাকা খেয়ে বড় হন।তাই স্বাভাবিক মৃত্যুকে আর নিতে পারেন না।
যার যা ঘটুক।বেশী বেশী তেল ঝাল বিড়ি খান।অনিয়ন্ত্রিত জীবন কাটান।মদ খান।মাতাল হয়ে গাড়ী চালান।যে যে অপরাধে,যেভাবেই মরেন দ্বায় কাঁধে নেয়ার জন্য এদেশের ডাক্তার সমাজ তো আছেই।
আসলেই আছে।
বর্তমান বি এম এ আজ একদিন প্রাইভেট প্রাকটিস বন্ধ করিয়েছে ডাক্তারদের।তাই সাংবাদিক এবং প্রিয় সাধারন জনগন ভুল চিকিৎসার মিথ্যে কুহেলিকা থেকে নিজ দায়িত্বে বের হয়ে না আসলে সামনে খুব খারাপ দিন অপেক্ষমান।
তাতে ক্ষতি ডাক্তারদের না।অবর্ননীয় কষ্ট পাবেন এদেশের রুগীগন।
তাই সময় থাকতে হোন সাবধান।
ডাক্তারদেরকে বিনা দোষে দোষ দেয়া বন্ধ করেন।

___________________________

ডা. শিরিন সাবিহা তন্বি ; বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল্ সুলেখক ।

আপনার মতামত দিন:


মানুষের জন্য এর জনপ্রিয়