Ameen Qudir

Published:
2017-03-27 15:54:11 BdST

করোনারি স্টেন্টের দাম ৮৫শতাংশ কমাতে আসুন গন পিটিশনে অংশ নেই : মানুষকে বাঁচাই


 

 

 

ডাক্তার প্রতিদিন

_______________________________

 


করোনারি স্টেন্টের সঠিক মূল্য নির্ধারণে
ভারত সরকারের উদ্যোগে যে মহান উদ্যোগটি নেয়া হয়েছে; তেমনই বাংলাদেশে করোনারি স্টেন্টের যথার্থ মূল্য নির্ধারণের জন্য গনদরখাস্ত বা পিটিশনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

এই মহান কাজে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার প্রয়াস নেয়া হয়েছে।


আমি, আপনিও অংশ নিতে পারি এই তৎপরতায় মানুষের জন্য; মানুষের কল্যাণে।
হাজারো মানুষের স্বাক্ষর ও আবেদন সমৃদ্ধ একটি আই পিটিশনের মহত্তর ডাক্তারী উদ্যোগের কথা জানিয়েছেন ডা. জাহিদুর রহমান। তিনি সবাইকে নিচের লিঙ্কটিতে গিয়ে ওই পিটিশনে অংশ নেয়ার আহবান জানান।

ডাক্তার প্রতিদিনও এই মানবিক উদ্যোগের অংশী। আমরাও আহবান জানাই সবাইকে। আসুন , মানুষের কাজে এই গনদরখাস্তে অংশ নেই।
গন দরখাস্তের লিঙ্কটি হল,

ttps://www.ipetitions.com/petition/stent


এবার পাঠকের পাঠের জন্য গন পিটিশনের বিবরণ প্রকাশ করা হল।

বরাবর

সচিব

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়।

বিষয়ঃ করোনারি স্টেন্টের মূল্য নির্ধারণ প্রসঙ্গে।

জনাব,

আপনার অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, একক রোগ হিসেবে বাংলাদেশে প্রতি বছর সবচে বেশি মানুষ মারা যায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে। বিগত বছরগুলোতে জীবন যাত্রার ধরন ও খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তিত হওয়ার কারনে বিভিন্ন ধরনের অসংক্রামক রোগ যেমন উচ্চরক্তচাপ, ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সার, ইত্যাদি রোগের প্রাদূর্ভাব বেড়ে গিয়েছে। ইদানিং শুধু উচ্চবিত্ত নয়, মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তের মানুষদের মধ্যেও অনেকে হৃদরোগে আক্রান্ত হচ্ছেন।

আমাদের দেশে হৃদরোগের কার্যকর চিকিৎসা পদ্ধতি হিসেবে এনজিওপ্লাস্টি চালু হবার পর দেশে হৃদরোগে আক্রান্ত বহু রুগি সুস্থ হয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসেছেন। তবে এই ব্যয়বহুল চিকিৎসা পদ্ধতি এখনো অধিকাংশ মানুষের সাধ্যের বাইরে। বাংলাদেশে এখন প্রায় অর্ধশত ক্যাথল্যাবে এনজিওপ্লাস্টির মাধ্যমে করোনারি স্টেন্টিং বা হৃদপিন্ডে রিং পরানোর ব্যবস্থা চালু রয়েছে।

প্রতিদিন এই ক্যাথল্যাবগুলোতে প্রায় শতাধিক রুগির এনজিওপ্লাস্টি করা হচ্ছে। বাংলাদেশে এনজিওপ্লাস্টি করার ক্ষেত্রে যেসব করোনারি স্টেন্ট ব্যবহার করা হয় তার সবগুলোই বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়। এ সমস্ত রিং আমদানির জন্য সরকারের পক্ষ থেকে মাত্র ১৫-২০ টি প্রতিষ্ঠানের বৈধ নিবন্ধন থাকলে বর্তমানে একশোরও বেশি প্রতিষ্ঠান বিদেশ থেকে স্টেন্ট আমদানি করছে।

করোনারি স্টেন্ট আমদানি সম্পূর্ণ শুল্কমুক্ত হলেও সরকারের পক্ষ থেকে করোনারি স্টেন্টের মূল্য নির্ধারণ করে না দেয়ায় হৃদরোগে আক্রান্ত রুগিদের এসব স্টেন্ট কয়েকগুন বেশি দামে কিনতে হচ্ছে।


বিভিন্ন সরকারী ও প্রাইভেট হাসপাতালে ৫-৭ হাজার টাকা মূল্যের করোনারি স্টেন্ট ৪০-৬০ হাজার টাকা, এবং ৩৫-৪০ হাজার টাকা মূল্যের স্টেন্ট ১.৫ -২.৫ লাখ টাকা রাখা হচ্ছে, যা একই সাথে অনৈতিক ও চরম অমানবিক।


বাংলাদেশে প্রায় ৪ শতাধিক হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ থাকলেও তাদের মধ্যে হাতে গোনা কয়েকজন এনজিওপ্লাস্টি করতে থাকেন। মূলত তারাই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, স্টেন্ট আমদানিকারক ও স্টেন্ট সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে একটি অশুভ চক্র তৈরি করে দীর্ঘদিন ধরে কোটি কোটি টাকার অবৈধ স্টেন্ট বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছেন। সম্প্রতি উচ্চ আদালতের হস্তক্ষেপে ভারত সরকারের পক্ষ থেকে করোনারি স্টেন্টের দাম ৮৫% পর্যন্ত কমিয়ে আনা হয়েছে। গোটা ভারতবাসী সরকারের এই সিদ্ধান্তের ভূয়সী প্রশংসা করছে।

সবিনয়ে নিবেদন এই যে, বাংলাদেশের প্রচলিত আইন অনুসারী কার্ডিয়াক স্টেন্ট একটি 'ডি' ক্যাটাগরির মেডিকেল ডিভাইস যার উৎপাদনকারী বা আমদানিকারককে অবশ্যই স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রনালয়ের অধিনে পরিচালিত ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর কর্তৃক নিবন্ধিত হতে হবে। এ ধরনের মেডিকেল ডিভাইসের মূল্য নির্ধারণ করে দেয়ার দায়িত্ব ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের হলেও কোন এক অজানা কারনে সেটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে না। খোদ সরকারি হাসপাতালগুলোতেই প্রতিদিন অসংখ্য অনিবন্ধিত প্রতিষ্ঠান কয়েক গুন বেশি দামে স্টেন্ট বিক্রি করে যাচ্ছে। এসব নাম গোত্রহীন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা লাখ লাখ টাকার পন্য বিক্রি করলেও ক্রেতা অর্থাৎ রুগিকে কখনই কোন ধরনের রশিদ প্রদান করে না। ফলে রুগির পক্ষ থেকে পরবর্তীতে কোন অভিযোগ আনারও সুযোগ থাকে না। এমতাবস্থায় আমরা মাননীয় দশম সংসদের মাধ্যমে সরকারের কাছে নিম্নের সিদ্ধান্তগুলো গ্রহণ করতে বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি।

১) রেজিস্ট্রেশন গাইডলাইন ফর মেডিক্যাল ডিভাইসেস ২০১৫ এবং ড্রাগ অর্ডিন্যান্স ১৯৮২ এর নির্দেশনা অনুসারে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর কর্তৃক একটি 'ডি' ক্যাটাগরির মেডিকেল ডিভাইস হিসেবে অবিলম্বে সব ধরনের করোনারি স্টেন্টের মূল্য নির্ধারণ করে দেয়া হোক।

২) সব ধরনের করোনারি স্টেন্ট আমদানিকারকদের ওষুধ প্রশাসন কর্তৃক নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করা হোক। এবং অবৈধ আমদানিকারকদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।

৩) সরকার নির্ধারিত করোনারি স্টেন্টের

মূল্য তালিকা এবং বৈধ আমদানিকারকদের নাম দেশের প্রতিটি ক্যাথল্যাবের সামনের দেয়ালে টাঙ্গানো বাধ্যতামূলক করা হোক।

৪) কোন হাসপাতাল নির্ধারিত মূল্যের অতিরিক্ত দাম আদায় করলে অনতিবিলম্বে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।

৫) ক্যাথল্যাবের মত স্পর্শকাতর একটি বিভাগে স্টেন্ট সরবারোহকারী প্রতিষ্ঠান সম্পৃক্ত যে কোন ব্যক্তির প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হোক।

৬) অহেতুক বা অতিরিক্ত স্টেন্ট ব্যবহার বন্ধ করতে এনজিওপ্লাস্টি করার সিদ্ধান্ত গ্রহনের ক্ষেত্রে একজন কার্ডিয়াক সার্জনের মতামত নেয়া বাধ্যতামূলক করা হোক।

৫) সরকারি উয্যোগে আরো অধিক সংখ্যক হৃদরোগ বিশেষজ্ঞদের এনজিওপ্লাস্টির উপর প্রশিক্ষণ প্রধান করা হোক।

অতএব, সবিনয় নিবেদন এই যে, আপনি উল্লেখিত প্রস্তাবগুলো বিবেচনা করে সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের করোনারি স্টেন্টের মূল্য নির্ধারন করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।

 

নিবেদক

স্বাক্ষরঃ

নামঃ

ইমেইলঃ
__________________

আপনার মতামত দিন:


মানুষের জন্য এর জনপ্রিয়