Dr.Liakat Ali

Published:
2022-10-06 20:15:32 BdST

কানাডায় হেলথ কেয়ার ফ্রি:ওয়েটিং টাইম ৮-১০ ঘন্টা,আর এপয়েন্টমেন্ট পেতে কয়েক মাস


অধ্যাপক ডা শুভাগত চৌধুরী

 

অধ্যাপক ডা শুভাগত চৌধুরী

বাংলাদেশের  স্বাস্থ্যাচার্য
___________________

ক্যানাডা হেলথ কেয়ার ফ্রি কিন্তু ইমারজেন্সি হলেও রোগীর ওয়েটিং টাইম এত বেশি ধরুন অনেক সময় ৮-১০ ঘন্টা,
আর এমনিতে এপয়েনটমেনট পেতে কয়েক মাস তবে চিকিৎসা হাই কোয়ালিটি।


"নদীর এপার কহে ছাড়িয়া নিশ্বাস, ওপারেতে যত সুখ আমার বিশ্বাস। "

অনেকে এপয়েনটমেনটডেট এত দেরি হওয়াতে দেশে এসে চিকিৎসা করিয়ে যান।
তবে ক্যানাডা চিকিৎসা উচু মান মানতেই হবে।
আর টারশিয়ারি হেলথ কেয়ার,গবেষণা উচ্চ মান।
খুব স্কিলড হেলথ কেয়ার কর্মী, নার্স। ডাক্তার আর বিশেষজ্ঞ খুব দক্ষ,।আর চিকিৎসা খুব উচু মানের।নিখরচা
আর ইন্সুইরেন্স কভারেজ ভাল

এখানে যারা ধনী আর গ রীব তারা বেশ ভাল।মধ্য আয়ের লোক বেশি সুবিধায় নন।

প্রাথমিক ভাবে রোগী দেখেন নার্স আর ডাক্তার দেখতে দেরি হয়,আর বিশেষজ্ঞ র দেখা পেলে ভাগ্য আর তার এপয়েনটমেনট হয় অনেক দেরিতে,প্রয়োজন হলে যদি ডাক্তার ম্ নে করেন স্পেশালিষ্ট দেখা দরকার। সিস্টেম ভাল।

এখানে নার্স হলেন ফ্রন্ট লাইনার।খুব দক্ষ,।
প্রাথমিক ভাবে রোগি দেখে জরুরি বিবেচনা করে এরা ওয়েট করার সময় দেন।
জরুরি বিবেচনায় প্রায়োরিটি।একে ট্রায়াজ বলা যায়।প্রাথমিক চিকিৎসা তারা ডাক্তার আসার আগে দেন।
\তবে খুব জরুরি মনে করলে সাথে সাথে ডাক্তার দেখে ব্যবসথা নেন।

প্রথমে জি পি তিনি রেফার করলে তবে বিশেষজ্ঞ

নিজে থেকে যেতে পারবেন না। তবে ইমারজেন্সি তে যেতে পারেন, ওয়েট করতে হবে।

প্রথমে নার্স, এর পর অপেক্ষা, এর পর ডাক্তার আর তিনি জটিল মনে করলে বিশেষজ্ঞ কল দেবেন।

আগে এপোয়েন্টমেন্ট না নিতে পারলে ওয়াক ইন সিস্টেম আছে তবে স্পেশালিষ্ট দেখাতে হলে না।

জিপি রেফারেন্স, এর পর তার সেক্রেটারি দেবেন এপয়েন্টমেন্ট।

ল্যাব টেস্ট জি পি রেফার করা লাগবে আবার সব টেস্ট জি পি লিখতে পারবেনা না.।যেম ন সাধারণ টেস্ট ই এস আর রিউমাটিলজিস্ট ছাড়া জি পি লিখতে পারবেন না ,এরকম।
অনেক ল্যাবে রিএজেনট অনেক সময় থাকে না।সেই টেস্ট তখন হয়না।৩ মাসের মধ্যে টেস্ট লিখলে ও রিপিট করেনা।যেহেতু ফ্রি তাই বুঝে টেস্ট করে,কিছু ক্যানসেল করে।

দেখলাম অনেক ফ্লাবটমিস্ট ট্রেনি থাকে এরা কেউ রক্ত টান্ তে মিস করে।

তবে টেস্ট ফলাফল নিখুত নির্ভুল। কঠিন কোয়ালিটি কনট্রোল। সব ল্যাব এক্রেডিটেশন করা।
সব ল্যাবে সব টেস্টের যোগান না থাকলে ও সব খুব সুশৃঙ্খল আর নিয়ম বদ্ধ। কেউ ভাংগার উপায় নাই।

সম্ভবত সব চেয়ে বেশি দেরি পেডিয়াট্রিক ইমারজেন্সি, বাচ্চাদের জরুরি বিভাগএ দারুন ভিড় হয়।

এখানে একটি জিনিস তা হল সিস্টেম।
এরা সিস্টেম মেনে চলে সবাই, ব্যতিক্রম নাই,ভি আই পি কেউ না প্রধানমন্ত্রী ও দাড়াবেন লাইনে।
সবাই সমান।সমতার এমন নিদর্শন কম দেখেছি।
আর কেউ কোন অজুহাতে সিস্টেম ভাংতে পারবেন না।"আমি অমুকের "স্থান নাই।সব সমান।
রোগির দুরব্যবহার শাস্তি যোগ্য।

দেশের মত গেলাম আর দেখালাম এরকম না।অনেক দুরের মানুষ এরা।

ক্রনিক রোগের চিকিৎসার এপয়েনটমেনট হয় অনেক দেরি তে।

পরিক্ষা নিরিক্ষার ফলাফল আপনার যে চিকিৎসক চিকিৎসা দেন তিনি ছাড়া কেউ জানবেনা।
তিনি খারাপ হলে ডাকবেন নইলে চুপ।
চুপ থাকলে বুঝ বেন ভাল।
সব ডাক্তারি নথি গোপনীয়,কেউ জানবে না।

এখানে এথিক্স,ডাক্তার সুরক্ষা,রোগীর সব নথিপত্রের গোপনীয়তা কঠোর ভাবে মানা হয়।
এখানে ডাক্তার বা হেলথ কেয়ার ওয়ারকার দের এবুজ করলে কঠোর শাস্তি।

ক্যানাডায় মূল ধারার ডাক্তার হওয়া অভিবাসী ডাক্তার দের পক্ষে কঠিন,বেশ কয়েক ধাপ পরীক্ষা আর এতে হাই স্কোর করলে ও কোটা থাকার জন্য মূল ধারার ডাক্তার হওয়া বা প্রাক্টিস লাইসেন্স বা ক্যানাডিয়ান স্পেশালিষ্ট হওয়া খুব কঠিন,
বরং আমেরিকা বা অস্ট্রেলিয়াতে তুলনা মুলক সহজ।

কথা হচ্ছিল সে দিন আলবার্টা বাংলাদেশি মেডিকেল সমিতির সম্মেলনে এক জন মহিলা স্পেশালিষ্ট বাংলাদেশি, রংপুর মেডিক্যালএর গ্রাজুয়েট, পরীক্ষা দিয়ে দিয়ে পিডিয়াট্রিক্স নিওনেটলজিস্ট কানাডায় কোটা ছিল একটা,শ দেড়েক প্রার্থী, ভাগ্য ক্রমে স্পেশালিষ্ট হয়েছেন।এরকম দেখা হল আরেক জন ইন্টারনেল মেডিসিন স্পেশালিষ্ট এর সাথে।আরেক জন পেডিয়াট্রিস্ট চট্টগ্রাম এর সবার এক কাহিনি।
"দুর্গম গিরি কান্তার মরু দুস্তর পারাবার লংঘিতে হবে কঠিন শ্রম আর ভাগ্য।"

কঠিন কবার মুল কারন এদের কোটা অভিবাসীদের জন্য খুব সীমাবদ্ধ আর এখানকার সাদা ডাক্তার, অভিবাসী ডাক্তার মুল ধারায় ঢুকবে তা চায়না আর এরা খুব ডমিনেটিং এরা নির্দেশনা দেন এসব ব্যাপারে

তবে অভিবাসী মুল ধারায় ঢুকতে পারলে দারুন সম্মান, আয়। কিছু ওভারসিজ আছেন এমন।আছেন গুটি কয়েক বাংলাদেশী ডাক্তার দেখা হয়েছে কয়েক জনের সাথে।
তবে উপরে উঠা কঠিন এখানকার সাদা ডাক্তার রা কোটা বেধে দেওয়াতে প্রায় অসম্ভব। এখানে সাদা ডাক্তার খুব শক্তিশালী, সরকার বুঝে কথা বলেন।
এ হল অবস্থা।
তাই অভিবাসী ডাক্তার বুঝে শুনে এখানে আসা ভাল,এখানে অনেকে এসে করেন ওড জব বা চিকিৎসকের চাকরি না তবে অন্য হেলথ কেয়ার জব
এমনকি অনেকে হয়ে যান রিয়েল।এস্টেট ব্যবসায়ী।
এভাবে চলে দিন রাত্রি, কঠিন শ্রম, ভাগ্য,ধৈর্য। এরপর আনন্দ ময় মসৃণ। নিরাপদ জীবন। নিরংকুশ অবসর।

তবু অনেক ডাক্তার আসেন।বলেন।নিজের জন্য না হোক আসি ছেলে মেয়েদের উন্নত ভবিষ্যতের জন্য।আর ক্যানাডিয়ান পাসপোর্ট ধারি হলে অনেক সুবিধা।এখানে অভিবাসন ও সহজ অনেক উন্নত দেশের তুলনায়।

আপনার মতামত দিন:


কলাম এর জনপ্রিয়