ডেস্ক

Published:
2021-06-16 05:15:08 BdST

ক্রাইম পেট্রল রোগী সেজে গাড়ি ভাড়া, তারপর অপহরণ ও মুক্তিপন: অবশেষে যা ঘটলো


 

ডেস্ক
_______________________

ঘটনার সূত্রপাত ৩১ মে ২০২১। শামসু নামের এক ড্রাইভার একটি প্রভক্স প্রাইভেট গাড়ি সহ ২ জন যাত্রী নিয়ে ঢাকা থেকে কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। এদের মধ্যে একজন ছিলেন রোগী। তার হাতে লাগানো ছিল ক্যানুলা আর কপালে ছিল ব্যান্ডেজ। গাড়িটি কক্সবাজারের কাছাকাছি পৌঁছালে পথিমধ্যে এক জায়গায় থামতে অনুরোধ করে যাত্রীবেশি অপহরণকারীরা। সেখানে আগে থেকেই উৎপেতে অপেক্ষায় ছিল অপহরণকারী চক্রের অন্য সদস্যরা। গাড়িটি থামার সাথে সাথে তারা এসে গাড়িটিকে ঘিড়ে ফেলে এবং ড্রাইভারের মুখ এবং হাত পা বেঁধে গাড়ির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়। তারপর তারা ড্রাইভারকে কক্সবাজারের উখিয়া থানাধীন কোন এক পাহাড়ে নিয়ে আটকে রাখে।

পরবর্তী পর্যায়ে ড্রাইভারের মাধ্যমে ঢাকায় তার গাড়ির মালিকের কাছে ৬ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে অপহরণকারীরা। টাকা না পাওয়া গেলে ড্রাইভারকে মেরে ফেলাসহ গাড়ি অনত্র বিক্রি করে দিবে বলে মালিককে হুমকি দিতে থাকে তারা।

সম্ভাব্য বিপদের অনুমান করতে পেরে গাড়ির মালিক প্রথমে ৯৯৯ এ কল করে বিষয়টি জানান। ৯৯৯ অপারেটর সাথে সাথে বিষয়টি উখিয়া থানাকে জানায়। পাশাপাশি ঢাকায় অবস্থানরত গাড়ির মালিক তার নিজ এলাকার থানা মিরপুর মডেল থানাকেও বিষয়টি জানান। অভিযোগটি গুরুত্বের সাথে নিয়ে মিরপুর মডেল থানার অফিসার ইন-চার্জ তাৎক্ষণিক প্রযুক্তির সহায়তা নিয়ে ভিক্টিম গাড়ির চালক ও গাড়ির লোকেশন সার্চ দেন। তিনি দেখতে পান ভিকটিম উখিয়া থানার হলদিয়া পালং এর কোনো এক জায়গায় রয়েছেন এবং গাড়িটি একই থানার কোর্টবাজার এলাকায় রয়েছে। ভিকটিম এবং গাড়ির অবস্খান সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে তিনি দ্রুত বিষয়টি উখিয়া থানার অফিসার ইন-চার্জকে জানান এবং তাদের উদ্ধারের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানান।

ঘটনা সম্পর্কে অবগত হয়ে ভিক্টিম ও গাড়ি উদ্ধারে তৎপর হয়ে উঠে উখিয়া থানা পুলিশ। সাথে এসে যোগ দেন উখিয়া সার্কেলের সার্কেল অফিসার। পরবর্তিতে উখিয়া সার্কেল অফিসার, উখিয়া থানার অফিসার ইন চার্জ এবং উখিয়া থানার ইন্সপেক্টর তদন্ত এর নেতৃত্বে উখিয়া থানার ৩ টি চৌকস টিম অনুসন্ধানে নেমে পড়ে। তারা নানা কৌশল ও প্রযুক্তির সহায়তা নিয়ে কাজ করতে থাকে। অবশেষে গতকাল বিকেল থেকে একটানা ৩ টি জায়গায় অভিযান পরিচালনা করে উখিয়া থানার হলদিয়া পালং এর পাহাড়ি এলাকার একটি বাড়ি থেকে ভিকটিম কে উদ্ধার করতে সক্ষম হয় তারা। সেই সাথে অপহরণকারী চক্রের ৮ জনকে ( ৬ জন পুরুষ ও ২ জন নারী) গ্রেফতার করে পুলিশ। পরবর্তিতে আসামিদের দেখানো মতে উখিয়া থানাধীন রত্নাপালং ইউনিয়নের একটি জায়গা হতে গাড়িটি উদ্ধার করে তারা।

প্রাথমিক জিজ্ঞেসাবাদে আসামিরা স্বীকার করে যে তারা প্রায় সময়ে বিভিন্ন জেলার গাড়ি কক্সবাজারে নিয়ে এসে চালককে অপহরণ করে মুক্তিপন আদায় করে আসছে। এছাড়া তারা মাদক চোরাকারবারির সাথেও জড়িত। বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় তাদের মাদকের সিন্ডিকেট রয়েছে। আটককৃতদের ০৪ জনের নামে হত্যা, ডাকাতি ও মাদক আইনে পূর্বে মামলা রয়েছে। তারা এও স্বীকার করে যে তারা বিভিন্ন সময়ে জেলে থাকার কারণে বিভিন্ন জেলার লোকজনের সাথে পরিচয় ঘটে এবং তারা জেল থেকে বের হয়ে মাদক ও অপহরণের এই সিন্ডিকেটটি গঠন করে।

রোগী সেজে গাড়ি ভাড়া, তারপর অপহরণ ও মুক্তিপন দাবি ।।
ভিকটিম গাড়ি চালক ও প্রাইভেটকার উদ্ধার সহ অপহরণ চক্রের ০৮ জন গ্রেফতার করল পুলিশ।

আপনার মতামত দিন:


কলাম এর জনপ্রিয়