ডা শাহাদাত হোসেন

Published:
2022-04-27 06:33:14 BdST

উপবাস বিজ্ঞান:ইন্টারমিটেনট ফাসটিং ইমিউন সিস্টেমকেও উন্নত করে


অধ্যাপক ডা. শুভাগত চৌধুরী; বাংলাদেশের স্বাস্থ্যাচার্য


অধ্যাপক ডা. শুভাগত চৌধুরী
বাংলাদেশের স্বাস্থ্যাচার্য
-------------------------
আমরা যা খাই শরীর এর দহন করে যোগায় জ্বালানি। বাড়তি খাবার যা দহন হয়ে জ্বালানি হয় না তা মেদ হয়ে জমা হয় শরীরে। আর জমা থাকে ভবিষ্যৎ ব্যবহারের জন্য। ৬ ঘণ্টা উপবাসের পর রক্তের গ্লুকোজ মান কমতে থাকে। এরপর যকৃতে গ্লাইকোজেন রূপে যে শর্করা জমা থাকে সেগুলো ভেঙ্গে গ্লুকোজ আসে রক্তে আর এনার্জি হিসাবে ব্যবহার হয়। ২৪ ঘণ্টা অবিরাম উপবাস করলে যকৃতের গ্লাইকোজেন ভাণ্ডার নিঃশেষ হয়ে যায়। গ্লাইকোজেন নিঃশেষের পর পেশির প্রোটিন আর চর্বি ভেঙ্গে এভাবে আসে এনার্জি। সে ক্ষেত্রে গ্লুকোজের পরিবর্তে চর্বি হয় শরীরের এনার্জি সরবরাহের মুখ্য উৎস। ওজন হ্রাস হয়, ইন্সুলিন সংবেদনশীলতা বাড়ে।

অনেকে করেন ইন্টারমিটেনট ফাসটিং মানে পালাক্রমে উপবাস আর আহার। একদিন অতি সামান্য আহার আর পরদিন স্বাভাবিক আহার। কেউ কেউ দিনে ১৬ ঘণ্টা উপবাস। আর পর ৮ ঘণ্টায় মোট ক্যালোরি গ্রহন করা হয়। ইন্টারমিটেনট ফাসটিং করে দ্রুত ওজন হ্রাস হয়। ডায়েটে লেগে থাকা অনেকে মনে করেন সহজ হয়। প্রাণিদের মধ্যে দেখা গেছে এরকম উপবাস তাদের আয়ু বাড়িয়েছে। একটা গবেষণায় দেখা গেছে , স্বল্পমেয়াদি বার বার উপবাসে আয়ু বাড়ে ইদুরদের। উপবাসে মগজের কাজকর্ম উন্নত হয় আর মগজ থেকে উৎসারিত হয় বিডিএনএফ (ব্রেন ডিরাইভড নিউরোট্রপিক ফ্যাকটার)। বিডিএনএফ প্রোটিন মগজের আদি কোষ ( STEM CELL ) উদ্দীপ্ত করবে আর উৎপন্ন করবে নতুন স্নায়ু কোষ বা নিউরন। এটি অন্যান্য আরও রাসায়নিক গুলোকে উদ্দিপিত করে আর স্নায়ু স্বাস্থ্য উন্নত রাখে।

 

ইন্টারমিটেনট ফাসটিং ইমিউন সিস্টেমকেও উন্নত করে। উপবাস করলে শরীরে বিষাক্ত ফ্রি রেডিক্যাল নাশ হয়। প্রদাহ জনিত অবস্থা নিয়ন্ত্রণ করে উপবাস আর ক্যান্সার জনন রোধ করে। পালাক্রমে উপবাস আর আহার ওজন হ্রাসে সাহায্য করে তবে জৈবিক মানে শরীরের উপর আনতে পারে নেতিবাচক প্রভাব। এটি নারীর চেয়ে পুরুষের ক্ষেত্রে বেশি সুফল প্রদ জানা যায়। স্ত্রী লোকের প্রজননের উপর আছে নেতিবাচক প্রভাব। কমে আসে গ্লুকোজ সহনীয়তা । আর নারীর বিপাক একটু গোলমেলে হতে পারে। আবেগজনিত বা মনোগত আহার বৈকল্যে এরকম উপবাস একে আরও বাড়িয়ে দেয়। বেলার আহার বাদ দিলে স্ট্রেস হরমোন করটিসোল মান বাড়ে। করটিসোল কিছু বাড়লেও রক্তের গ্লুকোজ বাড়ে, মেদ সঞ্চয়, প্রোটিন ভাঙ্গন ঘটতে পারে।

আপনার মতামত দিন:


কলাম এর জনপ্রিয়