ডেস্ক

Published:
2022-02-07 09:39:33 BdST

ক্রাইম পেট্রল বাংলাদেশনিরাপত্তাকর্মীর চাকুরি নিয়ে মাস্টার প্ল্যান করে ২ কোটি ৩৫ লাখ টাকার সোনা হীরা চুরি


 

সংবাদ দাতা

ঢাকার কচুক্ষেতের রাঙাপরী জুয়েলার্স নামের একটি প্রতিষ্ঠানের দুটি দোকানের তালা ভেঙে ৩০২ ভরি সোনার সঙ্গে হীরার গয়না ও পাঁচ লাখ টাকা চুরি হয়েছে। ক্রাইম স্টোরির গল্পকে হার মানাল এই রহস্য ঘন চুরি কান্ড।  মালিকের বক্তব্য অনুযায়ী এর দাম ২ কোটি ৩৫ লাখ টাকা।

ঢাকার কচুক্ষেতের দুটি গয়নার দোকানে চুরির ঘটনায় সেখানকার দুজন নিরাপত্তাকর্মীর সংশ্লিষ্টতা পাওয়ার কথা জানিয়েছে পুলিশ। তদন্তসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, আলম ও মনির নামের এই দুজন সেখানে চুরি করার উদ্দেশ্যেই বেস্ট সিকিউরিটি অ্যান্ড লজিস্টিকস লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি নিয়েছিলেন।

সাত বছর ধরে কচুক্ষেতের রজনীগন্ধা টাওয়ারে নিরাপত্তাকর্মী সরবরাহের দায়িত্বে রয়েছে বেস্ট সিকিউরিটি অ্যান্ড লজিস্টিকস। পুলিশ বলছে, ওই দুজন এই প্রতিষ্ঠানে চাকরি নেওয়ার সময় যেসব তথ্য দিয়েছিলেন, সেগুলোর সবই ভুয়া। এমনকি জাতীয় পরিচয়পত্রের যে কপি সরবরাহ করেছিলেন, তা–ও নকল। তাঁরা মুঠোফোনে যে নম্বর ব্যবহার করছিলেন, সেগুলোও অন্যের নামে নিবন্ধন করা।

গতকাল শনিবার ভোররাতে রজনীগন্ধা টাওয়ারের নিচতলায় রাঙাপরী জুয়েলার্স নামের একটি প্রতিষ্ঠানের দুটি দোকানে তালা ভেঙে চুরির ঘটনা ঘটে। ক্লোজড সার্কিট (সিসি) ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে পুলিশ বলছে, ভোর সাড়ে চারটার দিকে দুই নিরাপত্তাকর্মী আলম ও মনিরকে ভবনের ভেতরে তিন ব্যক্তিকে ঢুকতে ও বের হতে সহায়তা করতে দেখা গেছে। ঘটনার পর তাঁরা দুজন পালিয়ে গেছেন।

ভাষানটেক থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি বলেন, ‘নিরাপত্তাকর্মী আলম ও মনিরের অসৎ উদ্দেশ্য ছিল। চুরি করার জন্যই তাঁরা ভুয়া তথ্য দিয়ে এখানে চাকরি নিয়েছিলেন। তাঁরা মোবাইলে শুধু নিজেদের মধ্যেই কথা বলতেন।’


এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, নিরাপত্তাকর্মী হিসেবে চাকরি নেওয়ার সময় আলম মাদারীপুর এবং মনির খুলনার ঠিকানা দিয়েছিলেন। তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তাঁরা ভুয়া নাম-ঠিকানা ব্যবহার করেছেন। তাঁরা যেসব নথি দিয়েছেন, সবই ভুয়া। নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান কোনো ধরনের খোঁজ না নিয়েই নিরাপত্তাকর্মী নিয়োগ দিয়েছে। ওই প্রতিষ্ঠান এর দায় এড়াতে পারে না।


পুলিশের একজন কর্মকর্তা বলেন, দুই নিরাপত্তাকর্মী পরিকল্পনা করেই বেস্ট সিকিউরিটি অ্যান্ড লজিস্টিকসে চাকরি নেন। দেড় মাস আগে নিয়োগ পান আলম। দেড় মাস ধরে পর্যবেক্ষণ করে গয়নার দোকানে চুরির পরিকল্পনা করেন। নির্বিঘ্নে চুরি করতে চার দিন আগে মনিরও ওই প্রতিষ্ঠানে চাকরি নেন। তাঁদের মুঠোফোন নম্বরের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, সেগুলো অন্যের নামে নিবন্ধন করা। এই নম্বর দুটি থেকে আরও একটি নম্বরে যোগাযোগের তথ্য পাওয়া গেছে। ঘুরেফিরে এই তিন নম্বরেই যোগাযোগ করা হতো। ঘটনার পর থেকে এই নম্বরগুলো বন্ধ।

 

চুরির ঘটনায় গত শনিবার রাতে ভাষানটেক থানায় একটি মামলা করেছেন দোকানের মালিক আবুল কালাম ভূঁইয়া। তিনি অভিযোগ করেন, তাঁর দোকান থেকে ৩০২ ভরি সোনা খোয়া গেছে। এর দাম দুই কোটি টাকার বেশি। পাশাপাশি ৩০ লাখ টাকার হীরা এবং পাঁচ লাখ টাকাও নিয়ে গেছে চোরের দল। সব মিলিয়ে প্রায় আড়াই কোটি টাকার মালামাল চুরি হয়েছে।

আপনার মতামত দিন:


কলাম এর জনপ্রিয়