SAHA ANTAR

Published:
2020-12-07 03:23:33 BdST

মমতাময়ী মমতা খালা আর নেই


 

 

কবি ও চিকিৎসক মোশতাক আহমেদের মমতাময়ী জননী ছিলেন সর্বমঙ্গলা; সর্বমমতার সর্বজয়া । তাকে নিয়ে শোক এপিটাফ লিখেছেন

সালেহ এ জামী । লেখাটি প্রকাশ হল।
__________________

১০৮৪ পূর্ব শেওড়াপাড়ায় আজ শোকের মাতম। "মমতা মহল" এর মমতাময়ী খালাম্মা কিছুক্ষণ মারা গেছেন। বেশ কিছুদিন যাবৎ তিনি জটিল শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন। করোনাও ছিল মাঝে। রেখে গেছেন তিন পুত্র সন্তানসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী যাদের তিনি পেটে না ধরেও মায়ের মমতায় জড়িয়ে রেখেছিলেন গত ৪০/৫০ বছর। মাত্রই এক সপ্তাহ আগে দাদুমনিকে হারিয়ে আমি এমনিতেই দিশেহারা হয়ে আছি। আজ হারালাম মমতা খালাকে আসলে আমাদের খালাম্মাকে।
আমাদের "খালাম্মা" বলছি এই কারণেই যে উনি ১৯৯২-৯৪ ব্যাচের রেমিয়ানদের "খালাম্মা"। অবিসংবিদিতভাবে শ্রেষ্ঠ খালাম্মাদের একজন। সর্বজন শ্রদ্ধেয়, সবচেয়ে বেশি সহনশীল, উদার, আন্তরিক এবং প্রেরণাদায়ী 'মা' হিসাবে আমরা তাঁকে পেয়েছিলাম একেবারেই শুরু থেকে। আমার ব্যাচের কোন ছেলে বা মেয়ে বন্ধু তাঁর হাতের খাবারের স্বাদ নেয়নি তা অসম্ভব। তাঁর পেটের সন্তানদের চাইতে তিনি আমাদের কখনোই কম করে ভালোবাসেননি। এই তালিকায় তাঁর দ্বিতীয় পুত্র রুমির বন্ধুরা যেমন আছেন, তেমনি আছেন কবি ডা. মোশতাক আহমেদ রোকন ভাইয়ের বন্ধুদের অনেকেই। আজ যখন এই খবরটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়বে তখন পৃথিবীর ৪টি মহাদেশেই শোকের ছায়া নেমে আসবে নিশ্চিত। পরিচিত সব পরিজনেরা ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছেন সারা পৃথিবীতেই।
তাঁর সাথে আমার অজস্র স্মৃতি। লিখতে গেলে অনেক কথা। সব কি আর লেখা সম্ভব? শুধু জানুন তিনি আমার আত্মার আত্মীয়। আমার মা জানতেন তিনি আমার আপন খালা। এই সম্বোধনে কোন লুকোছাপা নেই বরং আছে এক অলিখিত সম্বন্ধ যা রক্তের সম্পর্ককেও হার মানাবে। ১৯৮৯ সালে যেদিন আমি প্রথম তাঁর বাসায় গিয়েছিলাম তখন মনে হয় খালুজানের চাকুরীসূত্রে তিনি সৌদি আরব। প্রথম দেখা হয়েছিল কি ১৯৯২ সালে? সঠিক মনে করতে পারছি না। এরপর থেকে তিনি হাসিমুখে আমার সহস্র অত্যাচার সহ্য করে আমাকে করেছেন তাঁর পুত্রসম। শুধু জানি একবারই তাঁর ছেলের মতন একটা কাজ আমি করেছি অপরদিকে তিনিই দিয়ে গেছেন বিরামহীনভাবে নির্মোহ ভালোবাসা, অবিরত দোয়া ও নিঃস্বার্থ ভালোবাসা। কোনোদিন কোন প্রতিদান চাননি। বড় একপেশে সেসব প্রশ্রয়। মনে করেই চোখের কোণ ভিজে উঠছে বারবার। প্রবাসী আমি আবারো বঞ্চিত হলাম এক নজর তাঁকে দেখা থেকে। পারিবারিকভাবেই আমরা জড়িয়ে বহুবছর। প্রবাসী হওয়ায় গত কিছুদিন কথা কম হয়েছে। কিন্তু আমি দেশে গিয়েছি অথচ তাঁর সাথে দেখা হয়নি এমনটি কখনো হয়নি। এই আপনত্ব তৈরী তিনি করেছিলেন তাঁর নামের সাথে মিলিয়ে পরম মমতায়।

আপনার মতামত দিন:


কলাম এর জনপ্রিয়