রাতুল সেন
Published:2020-06-14 06:11:51 BdST
নিরহংকারী ভাল মানুষ প্রকৌশলী সৈয়দ নসরুল আহসানের অকাল মৃত্যু করোনায়
সদ্য প্রয়াত প্রকৌশলী সৈয়দ নসরুল আহসান স্ত্রী অধ্যাপক ডা. নাহিদ মাহজাবিন মোর্শেদ-এর সঙ্গে । ছবি ফেসবুক থেকে নেয়া।
ডেস্ক
_____________________
ছিলেন অসম্ভব ভাল মানুষ। সদাপরোপাকারী । সজ্জন। হাসিমুখ ছাড়া কেউ কখনও তাকে দেখে নি। কখনও কোন সামান্য ক্ষতি করেন নি কারও। উপকার কল্যাণ করেছেন অসংখ্য মানুষের। তিনি প্রকৌশলী সৈয়দ নসরুল আহসান । মানুষকে অকাতরে ভালবাসতেন। তেমনি ভালবাসা পেয়েছেন সকলের। সেই ভালমানুষটি সবাইকে কাঁদিয়ে অসময়ে চিরতরে ছবি হয়ে গেলেন। করোনায় চলে গেলেন তিনি।
ফ্রেমে বাঁধানো চির উজ্জ্বল , দেদীপ্যমান মুখ।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় প্রাক্তন ছিলেন। করোনায় আক্রান্ত হয়ে মাত্র সোমবার থেকে কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। ১৩ জুন শনিবারে অকাল প্রয়াণ ঘটল তার। তাঁর স্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় এর চাইল্ড অ্যান্ড অ্যাডোলেসেন্ট বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. নাহিদ মাহজাবিন মোর্শেদ । শোকের চাদরে ঢাকা এখন একটি পরিবার; বাংলাদেশের মনোরোগ চিকিৎসক সঙ্ঘও। সাইকিয়াট্রিস্টদের মাঝে এই সুদর্শন চিরযুবা ছিলেন তারকার মত সবার প্রিয়। তার প্রয়াণে সবাই শোকার্ত।
এ দু:খ কোথায় রাখি! শিরোনামে এক শোক এপিটাফে বাংলাদেশের শীর্ষ মনোরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. ঝুনু শামসুননাহার বলেন,
করোনায় সাইকিয়াট্রিস্ট অধ্যাপক নাহিদ মাহজাবিনের স্বামীর মৃত্যুবরণ ......
আর তো নিতে পারছি না। মনোরোগ বিদ্যা বিভাগের সদা হাসিমুখের ডাক্তার অধ্যাপক নাহিদ মাহজাবিন মোর্শেদের স্বামী সৈয়দ নসরুল আহসান করোনা আক্রান্ত হয়ে কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে আজ বিকাল সাড়ে চারটায় ইন্তেকাল করেন।
তিনি অত্যন্ত সজ্জন ব্যক্তি ছিলেন।
উল্লেখ্য অধ্যাপক নাহিদ নিজে করোনা পজেটিভ হওয়া সত্ত্বেও শ্বাসকষ্টের সমস্যা নিয়ে তিন হাসপাতাল ঘুরে রাত দুইটায় তাঁর স্বামীকে হাসপাতালে ভর্তি করেছিলেন।
তিনি সেবা দিয়ে যাচ্ছেন বিএসএমউ-তে। এ কান্না কে দেখছে? এ দু:খ কোথায় রাখি?
বাংলাদেশের জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক অধ্যাপক ডা. মোহিত কামাল এক শোক এপিটাফে বলেন, অবশেষে বেপরোয়া আর বিধ্বংসী করোনা হানা দিয়েছে মনোবিদদের ঘরেও। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের চাইল্ড অ্যান্ড অ্যাডোলেসেন্ট বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. নাহিদ মাহজাবিন মোর্শেদের স্বামী, জনাব নসরুল আহসান চলে গেলেন আমাদের ছেড়ে। এমন প্রাণখোলা মানুষটা নেই - ভাবতে পারছি না।
।তাঁর স্বজনরা যেন শোক বহন করতে পারে,তার শক্তি প্রার্থনা করি ।
ডাক্তার প্রতিদিন সম্পাদক ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ডা. সুলতানা আলগিন শোক এপিটাফে বলেন, এ শোক কাটিয়ে উঠবার নয়। এ কষ্ট সইতে পারছি না । অকালে ভাইকে হারালাম। সৈয়দ নসরুল আহসান আমাদের সবার প্রিয় ছিলেন। সত্যিকারের নিরহংকারী মানুষ। ভাল ভাল মানুষগুলো অসময়ে অকালে চলে যাচ্ছেন আমাদের ছেড়ে, এই শোক দুর্বহ।
মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. সরদার আতিক বলেন, সদা নিরহংকারী। অসাধারন বিনয়ী। চমৎকার হিউমর সম্পন্ন একজন আপন মানুষকে হারালাম। খুব কম সময়ই উনার সাহচর্য পেয়েছি কিন্তু কখনই মনে হয়নি উনি দূরের মানুষ।
করোনার তান্ডব শিরোনামে এক লেখায়
বীকন পয়েন্ট লি: এর এসভিপি অপারেশন মোহাম্মদ হানিফ জানান ,
বুয়েটের প্রাক্তন মেধাবী ছাত্র প্রকৌশলী সৈয়দ নসরুল আহসান এবং বিএসএমএমইউ এর মনোরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডাঃ নাহিদ মেহজাবিন মুর্শেদ, এক ছেলে ও দুটি চাঁদের মত কন্যা সন্তান নিয়ে তাঁদের সুন্দর সংসার। এমন মধুময় জুটি বোধহয় খুব কমই হয়। নাহিদ মেহজাবিন মেডামের সুবাদেই নসরুল আহসান ভাইয়ের সাথে পরিচয়। কেন জানিনা, দুজনেই খুব পছন্দ করতেন বীকন পয়েন্ট কে। মানুষকে সম্মান করে কথা বলতে পছন্দ করতেন। দেশ দরদী একজন মানুষ ছিলেন তিনি। বেশ কয়েকবার এসেছেন বীকন পয়েন্টে। গল্প করেছি, খেয়েছি একসাথে।
কিন্তু, আর আসবেন না তিনি। করোনার তান্ডবে তিনি আজ বিকেল ৪ঃ৩০ মিনিটে চলে গেলেন চিরতরে । তাঁর মৃত্যুতে আমরা সবাই শোকাভিভূত।
_____________________________
AD..
আপনার মতামত দিন: