ডাক্তার প্রতিদিন

Published:
2020-04-16 08:34:29 BdST

করোনা শুনলে লাশ ফেলে যাওয়া মানুষ ডা.মঈনকে নিজ বাসস্থানে কবর দেয়ার দাবী জানিয়েছে


 

 

ডা. ফাতেমা জোহরা

মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ
______________________

করোনা ভাইরাসে মৃত সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক ডা. মঈন উদ্দিন।একজন জনপ্রিয় ডাক্তার ও ভাল মানুষ কে আমরা হারালাম। ডা. মইনুদ্দিনের প্রয়াণের ২৪ ঘন্টা না যেতেই মৃত্যু ঘটল আরেক ডাক্তারের। তার নাম জ্যোতি জয়ন্ত চক্রবর্ত্তী। আল্লাহ ওনাদের জান্নাতবাসী করুন। ওনাদের মৃত্যুতে শুধু ওনাদের পরিবার নয় দেশেরও অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে গেল।একজন শফি হুজুরের জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ম্যানেজ করা যায়,কিন্তু একজন ডাক্তারের জন্য আইসিইউ অ্যাম্বুলেন্স ম্যানেজ করতে পারা যায় না!ডা. মঈন উদ্দিন তো এয়ার এম্বুলেন্স চাননি। চেয়েছেন ICU এম্বুলেন্স। সেটাও দেওয়া হয়নি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে পরোপকারী এই চিকিৎসকের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে তার বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করে অনেকে দোয়া চেয়েছেন। তার স্মৃতিচারণ করে অনেকেই লেখেন, তিনি ছিলেন একজন সত্যিকারের গরিবের চিকিৎসক।এলাকাবাসীর জোর দাবীর মুখে ডা. মইনের লাশ তার গ্রামের বাড়িতে নেওয়া হয়েছে । সেখানে জানাজা পড়ার পর তাকে দাফন করা হয়েছে।যেখানে করোনার নাম শুনলে মানুষ লাশ ফেলে পালিয়ে যায় সেখানে উনাকে উনার নিজ বাসস্থানে কবর দেয়ার জন্য মানুষ দাবী জানিয়েছে।এতেই উনি কতখানি মহৎ তা বোঝা যায়।
অসুস্থ অবস্থায় ঢাকাতে shift করার জন্য ICU Ambulance /Air Ambulance পাননি এমনকি সিলেট এমএজিও মেডিকেল কলেজে হাসপাতালের ICU'র ventilator supportও দেয়নি। আর মৃত্যুর পর লাশ সিলেটে নেওয়ার জন্য বিমান দিচ্ছে সরকার।

একজন ডাক্তারের চলার পথটা কিরকম তা শুধু ডাক্তারদের পরিবারই বলতে পারবে।
আর কতো ডাক্তার হারালে এই দেশটাতে আমরা মানবিক আচরণ পাবো?ফেসবুকে একটা পোস্টে দেখা যায় সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা ডাক্তার হেঁটে হেঁটে যাচ্ছে হাসপাতালে।সেই নাকি দায়িত্বে অনীহার নামে সাময়িক বহিষ্কার করে।।

পিপিই বলতে কোভিড ১৯ এর যথোপযুক্ত পিপিই (তিন লেয়ার বিশিষ্ট), ফেস শিল্ড, এন ৯৫ মাস্ক দিতে হবে। একসেট হাতে ধরিয়ে দিয়ে সারা মাস চালাতে না বলে প্রতিদিনই এগুলো ডাক্তারদের হাতে পৌঁছাতে হবে। তা না হলে এভাবেই সব ডাক্তার আক্রান্ত হবেন এবং কারো কারো জীবন সংশয়ও ঘটবে।একজন একজন করতে করতে লাশের পাহাড় জমবে।

এখন বৈশাখ মাস। বাইরে কাল বৈশাখী ঝড় হচ্ছে। প্রায় পূরো পৃথিবীতে আর এক মহা কাল বৈশাখী ঝড় বয়ে যাচ্ছে।তার নাম করোনা। সেই ঝড়ের চেয়ে বরং এই ঝড় অনেক ভাল।এই ঝড়ের সময় বিপদ থেকে বাঁচার জন্য আমরা যেমন ঘরে থাকি। ঠিক তেমনি পৃথিবীর ঐ মহাঝড় থেকে বাঁচার জন্য আমরা যেন ঘরে থাকি। বাইরের এই ঝড় একসময় থেমে যাবে। পৃথিবীর মহাঝড়ও একদিন থেমে যাবে। কিন্তু আমরা জানিনা সেই মহাঝড় পৃথিবীর কতটা ক্ষতি করে যাবে।

আপনার মতামত দিন:


কলাম এর জনপ্রিয়