Ameen Qudir

Published:
2020-03-12 00:56:27 BdST

বিজ্ঞানী এডিসনের শিক্ষক বলেছিলেন,' ম্যাম, আপনার ছেলে একজন চরম বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী'


ডা. সাঈদ এনাম
__________________

এক হাতে স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষার রেজাল্ট আর অন্য হাতে একটা খাম ধরিয়ে দিয়ে এক অনাথ দুঃস্থ বালক কে স্কুলের কতৃপক্ষ বললেন, "খামের চিঠিটা তোমার মা'কে দিও"।

চিটি আর খাম নিয়ে ছেলেটি খুশিতে খুশিতে মা'য়ের কাছে এসে বললো, "মা আজ রেজাল্ট বেরিয়েছে আর স্কুল থেকে তারা এই চিঠি তোমাকে দিয়েছেন।"

চিঠি পড়ে মা'য়ের দু চোখ বেয়ে অস্রু ঝরতে লাগলো। ছেলেটি অবাক হয়ে মা'কে প্রশ্ন করলো, "মা' তুমি কাঁদছো কেনো"?।

মা সজল চোখে চিঠিটি জোরে জোরে পড়তে লাগলেন,

"ম্যাম, আপনার আপনার ছেলেটি অত্যন্ত মেধাবী। আপনার ছেলেকে পড়ানোর মতো বিদ্যা, জ্ঞান আমাদের এ ছোট স্কুলের কারোরই নেই। দয়া করে আপনি আপনার ছেলেকে আমেরিকার বড় কোন স্কুলে ভর্তি করিয়ে দিন"।

সামর্থ্য না থাকায় মা নিজেই তার ছেলেকে পড়ানোর সিদ্ধান্ত নিলেন। অসীম ধৈর্য্য নিয়ে ছেলেকে লেখাপড়ার প্রতি মনোযোগী করে তুললেন।

মা'য়ের অনুপ্রেরণায় ছেলেটি পড়াশোনায় ভালো করতে লাগলো। এবং একদিন সে সারা বিশ্বের সবচেয়ে সেরা বিজ্ঞানীর খেতাব অর্জন করলো।

একদিন সেই বিজ্ঞানী তার গ্রামের বাড়িতে তার মায়ের পুরোতন স্মৃতি গুলো দেখতে লাগলেন। একটি জরাজীর্ণ পুরোতন বাক্সে তিনি একটা চিঠি পেলেন। এটা ছিলো সেই চিঠি যা ছেলে বেলায় স্কুল থেকে তাঁকে দিয়েছিলেন কর্তৃপক্ষ। চিঠিটি পড়েই তার চোখ দিয়ে অশ্রু ঝরতে লাগলো আর তাঁর মায়ের কথা বার বার মনে হতে থাকলো।

চিঠিতে লেখা ছিলো,

"ম্যাম, আপনার ছেলে একজন চরম বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী। ক্লাস তার যন্ত্রনায় অন্যান্য ছেলেমেয়েদের শিক্ষা দান মারাত্মক বিঘ্নিত হচ্ছে। দয়া করে একে আমাদের স্কুলে আর পাঠাবেন না। তাকে অন্য কোন প্রতিবন্ধীদের স্কুলে ভর্তি করিয়ে দিবেন"।

ছেলের মন ছোট হয়ে যাবে এজন্যে সেদিন মা সেই চিঠি টি মিথ্যে করে পড়ে ছিলেন।

সেই ছেলের নাম হলো, বৈদ্যুতিক বাতি এবং বর্তমানে নানান বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতির মুল আবিষ্কারক বিজ্ঞানী টমাস আলভা এডিসন। যার জন্যে আমরা রাতে আলো জ্বালাতে পারি। মোবাইল চালাতে পারি। ছবি তুলতে পারি, ভিডিও করে স্মৃতি ধরে রাখতে পারি।

ডা. সাঈদ এনাম
সহকারী অধ্যাপক, সাইকিয়াট্রি
সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ।।

আপনার মতামত দিন:


কলাম এর জনপ্রিয়