Ameen Qudir

Published:
2020-02-03 00:11:12 BdST

মার্স ভাইরাস: মধ্যপ্রাচ্যের ৮০০ লোক মারা গিয়েছিলো:ভাইরাস এসেছিলো উট থেকে



ডা. গুলজার হোসেন উজ্জ্বল
রক্তরোগবিশেষজ্ঞ ও প্রখ্যাত সঙ্গীত শিল্পী

____________________

পৃথিবীর সবচেয়ে দূর্নীতি প্রবন রাষ্ট্রের ভেতর বাংলাদেশ একটি। ছয়বার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। শীর্ষপদ হারালেও এখনো বলা যায় উপরের দিকেই আছে। এদেশের ব্যাংকগুলো থেকে, শেয়ার মার্কেট থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট হয়ে গেছে, যাচ্ছে৷ দূর্নীতি মানে হলো ঘুষ, অবৈধ টাকা। ঘুষ হারাম। অন্যের টাকা মেরে খাওয়া হারাম। সে হিসেবে পৃথিবীর শীর্ষ হারামখোর জাতির একটি হলো বাংগালি। এই বাংগালিরাই চীনাদেরকে হারাম খায় বলে ট্রল করে, তাদের জাতীয় দুর্ভোগ নিয়ে রংগ রসিকতা করে। এতটুকু সংবেদনশীলতা দেখাতে পারেনা। এরচেয়ে বড় হারামিপনা আর কি আছে?

২.
চীনের ২০১৯ নোভেল করনা ভাইরাসের আউটব্রেকটাকে তারা চীনাবাসীর প্রতি আল্লাহর গজব বলে মনে করে। অথচ এই গাধার দল জানেও না যে এই করোনারই পূর্ববর্তী একটি আউটব্রেকের নাম ছিল মার্স। মিডল ইস্ট রেস্পইরেটরি সিন্ড্রোম। এর উৎপত্তি ছিল মধ্যপ্রাচ্যে। সৌদি আরবে হজ্জের মৌসুমেও এটা আঘাত হেনেছে৷ মধ্যপ্রাচ্যের ৮০০ লোক মারা গিয়েছিলো। ধারণা করা হয় এই ভাইরাস মানুষের দেহে এসেছিলো উট থেকে। অতঃপর তোমরা কি উটকেও হারাম বলবে?

৩.
মানুষের ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাত করা যাবেনা বলে মনে করে বাংলার সংখ্যা গুরু মুসলিম। এই মুসলিম সমাজের মুখপাত্র হিসেবে কাজ করছে হেফাজতে ইসলাম। নাম শুনলেই বোঝা যায় তারা ইসলামের হেফাজত করতে আবির্ভুত হয়েছে। তাদের এই দায়িত্ব কেউ দেয়নি, নিজেরাই নিয়েছে৷ তবে কার্যত তারা ইসলামের নামে মাস্তানি করে। দুইদিন পর পর সরকারকে একেকটা ইস্যুতে চাপে ফেলে নানারকম দরকষাকষি করে ফায়দা তোলে। সরকার গায়ে পিঠে হাত বুলিয়ে একটু হালুয়া রুটির বন্দোবস্ত করে তাদের শান্ত করে। দুইদিন পর আবার আরেকটা ইস্যু নিয়ে একইরকম নাটক মঞ্চস্থ করে। এখন আছে কাদিয়ানী ইস্যু নিয়ে। কাদিয়ানীদের কাফের ঘোষণা করতে হবে।কে খাঁটি মুসলিম কে কাফের সেটা নির্ধারণের দায়িত্ব সরকারের না। শফি বা বাবুনগরীর না। কোন মানুষেরই না। কাদিয়ানীরা যদি মুসলিম নাও হয়ে থাকে সেটা তাদের ব্যপার। তারা তো কাদিয়ানিই। তাদেরও নিশ্চয়ই একটা ধর্মানুভুতি আছে। তাহলে সেই অনুভুতিতে আঘাত করবার আপনি কে? শুধু আঘাতই না আপনি রীতিমতো তাদের থ্রেট দিচ্ছেন প্রকাশ্যে। আপনি তাদের কাফের বলছেন। ঘৃণাবাদ ছড়াচ্ছেন তাদের বিরুদ্ধে। তাদের রুদ্ধ করতে উঠে পড়ে লাগছেন। এটাতো আপনি করতে পারেন না।

আর আপনার এত ভয়ই বা কিসের?
তারা তাদের মতবাদ প্রচার করতেই পারে। যার ভাল লাগবেনা সে কাদিয়ানী হবেনা৷ কিন্তু না। এক শ্রেনীর মমিন মুসলমান জোর করে তাদের উৎখাত করবে। আবার এই তারাই বলছে আমাদের ধর্মানুভুতিতে আঘাত করা যাবেনা। কি হাস্যকর!
কাদিয়ানীদের মসজিদে পুলিশ পাহারা দিয়ে রাখে। প্রতি শুক্রবারে সকাল এগারটা থেকে কড়া নিরাপত্তা থাকে। লজ্জা লাগেনা এটা দেখলে?

৪.
শফি হুজুরের মঞ্চ ভেংগে পড়েছে। এই মঞ্চে শ খানেক লোক উঠেছিলো। এত লোক মঞ্চে উঠার কি প্রয়োজন ছিল? আসলে এটাও আওয়ামীলীগ বিএনপির মতই এক্টা ব্যাপার। ব্যক্তি কেন্দ্রিক ফায়দা লোটার ফান্দা। তাই সবাই মঞ্চে উঠতে চায়৷
ভাগ্য ভালো মঞ্চ ভাঙলেও কেউ তেমন হতাহত হয়নি।
তবে কেউ বলছে এটা আল্লাহ পাকের নিশানা। গজবের পূর্বাভাস। কেউ বলছে আল্লাহ তার নেক বান্দার পরীক্ষা নিয়েছেন। কেউ বলছে কাদিয়ানীদের প্রতি আল্লাহর এটা পজিটিভ ম্যাসেজ।

গ্রামে একটা প্রবাদ আছে।

"কৃষ্ণ দেখতে কেমন
যার মনে যেমন"।

লালন সাইজি সাধে বলেননি আত্মতত্ত্ব যে জেনেছে, দিব্যজ্ঞানী সে হয়েছে।

নিজেকে বুঝেন আগে। নিজের ভেতরে কুবৃক্ষের বীজ বুনেছেন। সুফল হবে কোত্থেকে?

৫.
সবাইকে যার যার মত থাকতে দেন। সবার কথাই শুনবার চেষটা করুন। কেউ সত্য পকেটে নিয়ে ঘোরেনা। আপনার ভয়ে অনেকে ঘুমাতে পারেনা। আপনার ভয়ে একদল মানুষ তাদের উপাসনালয়ে পুলিশ পাহারা দিয়ে রাখে। আপনার চেয়ে বড় অধার্মিক আর কে আছে?

আপনার মতামত দিন:


কলাম এর জনপ্রিয়