Ameen Qudir

Published:
2019-01-03 22:23:54 BdST

প্রতিবাদ'ওরা যে কারণে নিজের ফ্রাস্ট্রেশন শুধুমাত্র শারীরিক শক্তির বলে বৌয়ের উপর প্রয়োগ করে'


ডা. নাসিমুন নাহার মিম্ মি 

__________________________

পুরুষ( অবশ্যই সব পুরুষ না)যখন নিজের ব্যক্তিত্বের কমতি খামতি, সংসারের প্রতি দায়িত্বহীনতা, সন্তান লালন পালনে বিরক্তি এবং মানসিক অসুস্থতা কন্ট্রোল করতে না পেরে সারা দুনিয়ার সবার কাছ থেকে বাঁশ খেয়ে ; এমনকি নিজের মা, বোনদের কাছ থেকেও ঝাঁটা পেটা খেয়ে নিজের ফ্রাস্ট্রেশন শুধুমাত্র শারীরিক শক্তির বলে নিজের বৌয়ের উপর প্রয়োগ করে তখন আমরা তাকে কেতাবি ভাষায় বলি--- Domestic Violence.

সমাজে এই ধরনের ধ্বজভঙ্গ পুরুষের সংখ্যা নেহায়াত কম না কিন্তু। মজার ব্যাপার হলো ছোটবেলায় আমি মনে করতাম অশিক্ষিত, মূর্খ, বস্তির লোকেরাই শুধুমাত্র এসব নোংরামো করে। কিন্তু বড় হয়ে জানলাম এবং দেখলাম তথাকথিত ডিগ্রী আলা, বহুত পয়সা আলা, এলিট সোসাইটির লোকজন আরো নোংরাভাবে শুধু শারীরিক না মানসিক,অর্থনৈতিক এবং সামাজিকভাবে Domestic violence করতে এক্সপার্ট। আর এসব ক্ষেত্রে এই পুরুষগুলো একা কিছু করে না। তাদের পরিবারের মহিলা সদস্যগুলো প্রচন্ড রকম ভাবে ইন্ধন জোগায় এই ব্যাক বোনলেস কাওয়ার্ড পুরুষটিকে তার বৌয়ের উপর অত্যাচার করতে।

ঘটনা কিন্তু এখানেই শেষ হয় না।
কিছু কিছু মেয়ে ইদানিং এসব অত্যাচার কে বৃদ্ধা আঙুলী দেখিয়ে লক্ষী মেয়ের তকমা ঝেড়ে ফেলে এসব অত্যাচার সহ্য না করে এই লোক দেখানো সংসার নামক সার্কাস থেকে বের হয়ে আসছে সুস্হ সুন্দর স্বাভাবিক একটা জীবন কাটাবে বলে। বাবা মা কি এই অসভ্যদের 'মাইর' খাবার জন্য মেয়েদের আদর যত্ন করে উচ্চ শিক্ষিত করে বড় করেন নাকি ?!

আর আসল খেলাটা শুরু হচ্ছে তখন ই যখন এই নোংরা অসুস্থ পরিবেশ থেকে বের হয়ে এসে মেয়েটি অসহায় হয়ে না থেকে যুদ্ধ শুরু করে টিকে থাকার। যদি সে নিজের যোগ্যতা দিয়ে সৎ ভাবে নিজের আইডেন্টি তৈরি করে ফেলতে পারে এবং পাশাপাশি নিজের শখ,স্বপ পূরণ করতে শুরু করে এবং যেহেতু সে সিঙ্গেল সেহেতু খুব স্বাভাবিকভাবেই কিন্তু মেয়েটির জীবনে অন্য কারো আসতে ধর্মীয় এবং সামাজিকভাবেও বাধা না থাকায় কোন সত্যিকার পুরুষ যদি চলার পথে মিলে যায় তখন ঐসব নপুংসক পুরুষগুলোর এবং তাদের পরিবারের মহিলারা সহ সমাজের কিছু বিকৃত মহিলাদের খুব জ্বলতে শুরু করে। কেন একজন ডিভোর্সি মেয়ে ভাল থাকবে ? কেন তাকে একজন যোগ্য, বীর এবং মানুষ পুরুষ ভালোবাসবে ? তখন আর কিছু না পেয়ে মেয়েটির চরিত্র নিয়ে কাদা ছোড়াছুড়ি শুরু করবে শেষ অস্ত্র হিসেবে। এটা এই সমাজের কালচার যুগ যুগ ধরে। একটা মেয়েকে আর কোনভাবেই যখন আটকানো যায় না তখন চরিত্র নিয়ে বলে দাও , কেল্লা ফতে হয়ে যাবে ! সিরিয়াসলি!!

অথচ খোঁজ করলে জানা যাবে ঐ পুরুষগুলোর জীবনে বহু আগেই আরো নারীদের আগমন ঘটেছে। কিন্তু সবাই কি আর domestic violence সহ্য করার মেয়ে ? সুতরাং বহু ঘাটের জল খাওয়া ব্যক্তিত্বহীন ঐ পুরুষগুলোর মাঝ বয়সে এসে প্রথম জীবনে যে নারীর সমস্ত স্বপ্ন এবং পৃথিবীতে চলার পথটা ধ্বংস করে দিয়েছিল তার ভালো থাকাটা আর নিতে পারে না কিছুতেই।

আহারে.......
আফসোস আর এক দলা থুথু ঐ সব ব্যক্তিত্বহীন পুরুষ নামের নর কীটগুলোর এবং তাদের মতো চিন্তাধারার মহিলাগুলোর জন্য ।

মনে রাখবেন----- চরিত্র নিয়ে একশ বছর আগে তৈরি করা সমাজের সুবিধাজনক সংগাটি এখনার এই সময়ে বাজারে বড্ড অচল। পৃথিবীতে এখনো বহু অসাধারণ পুরুষ আছেন যারা আপনাদের মতো নোংরা পুরুষগুলো যারা মেয়েদের জীবন শুরু করার আগেই মেয়েগুলোকে খুন করে জীবন্মৃত করে দিয়েছিল
তাদের জীবনে সোনার কাঠি রুপোর কাঠির পরশ বুলিয়ে দেবার জন্য ।

প্রকৃতি কখনোই হিসেবে ভুল করে না.....কখনোই না !
______________________________


কপি রাইট : ডা. নাসিমুন নাহার মিম্ মি । সুলেখক।

আপনার মতামত দিন:


কলাম এর জনপ্রিয়