Ameen Qudir

Published:
2018-10-12 21:12:47 BdST

অভিনন্দন নাদিয়া ! বীরাঙ্গনা সাহসিনী


 

আজিজুল শাহজী
______________________________

অভিনন্দন নাদিয়া !
ইয়েজেদী বীরাঙ্গনা সাহসিনী নাদিয়া মুরাদ এই বছর শান্তিতে নোবেল পেয়েছেন কঙ্গোর ডেনিস মুকাবের সাথে যৌথ ভাবে। যুগে যুগে নানান নির্যাতনে প্রায় অবলুপ্ত ইয়াজেদি সম্প্রদায়ের এই ক্ষয়িষ্ণু কয়েকটি মানুষ একদম অবলুপ্ত হয়ে যাচ্ছিল শেষ ধাক্কা আইসিস এর কারণে। এদের উপর যৌন নির্যাতন বা গন হত্যা আগেও ছিল তবে এইবারে একদম সাফ করে দেওয়ার কাজ করা শুরু করেছিল এই অপজাতকগুলো। নাদিয়া নিজে নির্যাতিত হয়েও এই অত্যাচারিত মেয়েদের জন্য রুখে দাঁড়িয়েছেন।তাদের জন্য কাজ করেছেন তাদের একজন হয়ে।

 

নাদিয়া ! বীরাঙ্গনা সাহসিনী

আগে এই জনজাতির উপরে লিখেছিলাম।আবার তার নোবেল পুরস্কার প্রাপ্তির কারণে তার এবং এই সংগ্রামী জাতির সম্মানে আবার ওই লেখা তুলে ধরলাম।

 

ইয়েজেদি - এক প্রায় বিলুপ্ত ধর্মগোষ্ঠীর আখ্যান

মানব ইতিহাসের হাজার হাজার বছরের ইতিহাসে এক গোষ্ঠী অন্য গোষ্ঠীকে ধ্বংস করতে চেয়েছে ,অবলুপ্ত করতে চেয়েছে ,মুছে দিতে চেয়েছে পৃথিবী থেকে। মূলত সংখ্যাগুরুর ভাবধারার সাথে সংখ্যালঘুর অমিল একজন কে বৈরী করেছে অন্যজনের। আজ তুলে ধরবো এমন এক প্রায় অবলুপ্ত এক ধর্মীয় গোষ্ঠীর কথা যারা স্রেফ তাদের ধর্মীয় চিন্তার কারণে যুগে যুগে নিন্দিত হয়েছে এবং অধুনা আইসিস (দায়েশ ) এর নারকীয় কাজকর্মের কারণে প্রায় লুপ্ত। একই সাথে পূর্বতন ইরাকের সাদ্দাম প্রশাসন এবং ইরানের খোমেইনী আর সর্বপরি সৌদি ওয়াহাবি তন্ত্রের সার্বিক চেষ্টায় আগের থেকেই যারা কোনঠাসা ছিল সেই ইয়াজিদি গোষ্ঠীর কথা বলছি।

আগেও যেমন বলেছি আবার একই কথা বলছি,আমার লেখার মালমশলা সব ইন্টারনেটের বিবিধ সূত্র আর দু একটা বই যা সংগ্রহ করেছি সেই ইন্টারনেট থেকেই। এই কারণে কেউ যদি মৌলিক কোনো কিছু আশা করেন তা হলে হয়তো হতাশ হবেন তবে যে তথ্য দেবো তা পারস্পরিক সূত্র থেকে দেখেই করেছি। এরপরেও যদি কোথাও ভুল থাকে ধরিয়ে দেবেন,মাথা পেতে সংশোধন করবো। অকারণে যদি কোনো 'বিশেষ 'অনুভূতির আঘাত ইত্যাদির কারণে আলাদা করে গালিগালাজ করেন তবে একই পদ্ধতিতে ফেরত দেবো। যাই হোক বিষয়ে আসি, আজকে এদের উপর যে গণহত্যা ,যৌন ক্রীতদাস করা বা সমূলে উচ্ছেদের কাজ কর্ম হয়েছে ঐগুলো ইচ্ছা করেই বিস্তৃত বর্ননা দেবো না। আজ বলবো এই গোষ্ঠীর ধর্ম এবং বিশ্বাসের উপর। কেন তারা অন্য ধর্মের কাছে ঘৃণিত হয়েছে বা ব্রাত্য হয়েছে তার উপর কিছু আলোকপাত করবো। পাঠক বুঝতে পারবেন ধর্ম বা আমাদের ধর্মবিশ্বাস কি ভাবে নিজেদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করেছে।

 

এই গোষ্ঠী মূলত কুর্দ জাতির একটি অংশ। এরা রাশিয়া বা ভেঙে যাওয়া আর্মেনিয়া থেকে ইরান ,প্রধানত ইরাকের মসুল এর আশেপাশে এবং সিরিয়া বা তুর্কি ইত্যাদি দেশে ছড়িয়ে আছে। মসুল এর পাশেই এদের প্রধান মন্দির বা উপাসনা স্থল। হালের আইসিস ইত্যাদি এবং তার আগে সাদ্দাম হোসেনের অত্যাচারে ওদের অনেকেই জার্মানি বা আমেরিকা এবং ইউরোপের বিভিন্ন অংশে প্রবাসী হয়ে আছে। এদের মোট সংখ্যা কেউ জানে না তবে আন্দাজ করা হয় সব মিলিয়ে প্রায় লক্ষ পাঁচেক এই ধর্মমতের লোক এখনো পৃথিবীতে অবশিষ্ট আছে।

ইয়াজেদি ধর্মের ইতিবৃত্ত :

অদ্ভুত একটি ধর্ম যার মধ্যে মানুষের চরৈবতি মানে চিরবহমান স্বভাব এর একটি প্রকাশ দেখতে পাবেন। ওরা একাধারে পারসিক মানে জরাথ্রুষ্টর মত কে মানে আবার একই সাথে ক্রিশ্চান ধর্মমত বিশেষত ওল্ড টেস্টামেন্ট এবং কোরান কে ও শ্রদ্ধা করে। একদিকে আগুনের ব্যবহার করে নিজেদের উপাসনায় আবার বিবাহ ইত্যাদির জন্য চার্চ কে ব্যবহার করে। নিজেদের সন্তানাদির ধর্মীয় অভিষেকের জন্য পবিত্র জলের সিঞ্চন করে আবার ইহুদি এবং মুসলিমদের মতো পুরুষ শিশুর খৎনা ও করে।

ইয়াজেদী মানুষদের এক পূর্বপুরুষ হলো নবী মোহাম্মদের পরবর্তী পর্যায়ের খলিফা মুয়াবিয়ার সন্তান এজিদ যে একাধারে নবীর পৌত্র হাসান এবং হোসেন এর হত্যাকারী যার জন্য ইরানি শিয়ারা ওদের ঘৃণার চোখে দেখে আবার এদের ধর্ম মতের একটি বিশেষ দিকের জন্য ক্রিশ্চান এবং সুন্নি মুসলিম অথবা গোড়া ইহুদিরা ও এদের উপর খড়গহস্ত। কেন ? কারন ওরা অনেকের মতে শয়তানের উপাসক।

 

কেন এই অপবাদ ? মূল কারন কি ?

ইয়াজিদি সম্প্রদায় এর এই অপবাদের মূল খুঁজলে আমাদের যেতে হবে সেই জেন্দা-আভেস্তায় এবং পারসিক জরাথ্রুস্টের ধর্মের মুলে। পাঠক মনে রাখবেন ইহুদি সম্প্রদায়ের ঐতিহাসিক কালে সংকটের সময় এই পারসিক ধর্মের মানুষরা তাদের আশ্রয় দিয়েছিল এবং তাদের মুক্ত করেছিল তৎকালীন অত্যাচার থেকে। এই বিষয়ে আপাতত যাচ্ছি না তবে একটা জিনিস প্রমান হয় যে পারসিক ধর্মের প্রচুর প্রভাব পড়েছিল ওই মধ্যপ্রাচ্যে। সে অর্থে ইয়াজিদি সম্প্রদায় তাদের একটি শাখা ভাবা যেতেই পারে। এখন সমস্যা হয়েছিল একটি মূল ধারণার উপর যার কারন পারসিক ধর্মের একটি দর্শন। ওই ধর্ম বলে ভালো এবং মন্দ অর্থাৎ আলো আর অন্ধকার পাশাপাশি চলে যার দুটোর সৃষ্টি এবং মানব জীবনে চলে আসা এর প্রভাব অর্থাৎ সু এবং কু এর জন্য সর্বময় কর্তৃত্বের ঈশ্বর (আহুর মাজদা দায়ী ) ,ওই ধারণার একটি রূপ কে পরিবর্তিত করে নিয়ে এই ইয়াজেদী গোষ্ঠীর সমস্যা হয়েছে বাকিদের কাছে। তারা উপাসনা করে মালিক তাউস বলে একটি রূপ কে যে অন্য অর্থে বাইবেলের লুসিফার বা ইসলামের বর্ণিত শয়তান। ইয়াজিদি মতে এই মালিক তাউস প্রথমে সাত ঈশ্বরের প্রতিনিধি বা দেবদূত (ফেরেস্তা) ছিল , এক পর্যায়ে ঈশ্বর আদম কে সৃষ্টি করে এই দেবদূতদের তাকে সম্মান প্রদর্শন করতে বলে। মালিক তাউস আদম কে সম্মান করতে অস্বীকার করে অর্থাৎ ঈশ্বরের এদেশের অমান্য করে। অতঃপর ঈশ্বর তাকে নরকে পাঠায়, এই নরকের আগুনের মধ্যে চল্লিশ হাজার বছর অনুতাপে দগ্ধ তাউস চোখের জল ফেলতে থাকে এবং এক পর্যায়ে তার চোখের জলে নরকের আগুন নিভে যায়। অতঃপর ঈশ্বর তাকে এই বিশ্বসংসারের দেখভাল করার দায়িত্ব দিয়ে তার এই অবস্থার পরিবর্তন করে। সে হয় ঈশ্বর এবং মানবের মধ্যে প্রতিনিধি। ইয়াজিদি মতে এই সর্বক্ষমতাসম্পন্ন ঈশ্বরের নাম যাজদান (পার্সি যাজনা এবং বৈদিক যজ্ঞ বা পূজা ) অর্থাৎ উপাস্য। এই ঈশ্বর এই বিশ্বসংসার দেখার দায়িত্ব দিয়েছে ওই মালিক তাউস এর উপর যে ময়ূরের প্রতিরূপ।যাবতীয় আরাধনা ঈশ্বরের প্রতি করতে ওই মালিক তাউসের কাছেই করতে হয় কারন ওই ঈশ্বর কোনো আরাধনা ইত্যাদির উর্দ্ধে।
সমস্যা এই ময়ূররূপের উপাস্যকে নিয়ে যাকে শয়তান বলে ধরে নিলে এই গোষ্ঠীকে শয়তানের উপাসক বলতে হয়। এরপর যা হয় তাই হয়েছে,হাজার হাজার বছর ধরে এদের উপর অটোমান তুর্কি থেকে আরব মুসলিম বা ক্রিশ্চান অথবা অন্য গোষ্ঠী ধ্বংস করার জন্য স্বচেষ্ট হয়েছে।

 

এদের ধর্মচারন এর বিবরণ :
এদের ধর্মচারন এর বিবরণ :
ইয়াজেদি গোষ্ঠী তাদের ধর্মের এবং নিয়মনীতি যা পালন করে ঐগুলো ও ভীষণ কৌতূহলদ্বীপক। এর বেশ কিছু জিনিস নিচে একটু পরপর সাজিয়ে দিলাম। পাঠক এতো বড় লেখা পড়তে উৎসাহ পাবে না এই ভয়ে :
১. ওরা এই উপমহাদেশের হিন্দুদের মতো পুনর্জন্মতে এবং ক্রমাগত উন্নত হতে থাকে
২. সপ্ত ঈশ্বরের দূত এই বিশ্বসংসারের রক্ষনাবেক্ষন করে তবে মূলত মালিক তাউস এর রক্ষক
৩. ভালো আর মন্দ আলো এবং অন্ধকারের মতোই পাশাপাশি চলে এবং মানুষের মধ্যে বর্তমান
৪. এই ধর্মের কোনো ধর্মান্তর হয় না। জন্মসূত্রে এই ধর্মের উত্তরাধিকারী হওয়া যায়,আগের মতানুসারে অন্য কোনো ধর্মের কাউকে বিবাহ করলে ও ধর্মত্যাগ হয়। অবশ্য আজকাল এই বস্তুটি কিঞ্চিৎ সংস্কার করা হয়েছে নিজেদের মধ্যে।
৫. এই ধর্ম এক ঈশ্বরের বিশ্বাসী অর্থাৎ অদ্বৈতবাদ এর মতে চলে এবং পারসিকদের মতো আগুনকে পবিত্র মনে করে। আরো মজার হলো ওরা দিকের হিন্দু বা শিখ ইত্যাদির মতো হাতজোড় করে প্রার্থনা করে বা সোজা কথায় ইস্টদেব কে প্রণাম করে।
৬. দিনে পাঁচবার সূর্য কে প্রতীক করে তারদিকে ঘুরে অর্থাৎ পূর্ব দিকে মুখ করে প্রার্থনা করে
৭. এদের ওই উপরে উল্লিখিত সাত দেবদূত ক্ষেত্রবিশেষে মানব রূপে জন্ম গ্রহণ করে ওটা ও এদের বিশ্বাস
৮. এই ধর্ম নরক ইত্যাদির কথা বলে না বরং ক্রমাগত আত্বউন্নতি মানে এক দেহ থেকে আর এক দেহে জন্ম গ্রহণ এবং আত্বিক উন্নতির কথা বলে।
৯. বুধবার এদের পবিত্র দিন আর শনিবার হলো বিশ্রামের দিন
১০. নবজাতকের অভিষেক হয় এই ধর্মে গ্রহণ করে ,উপরে যেমন বলেছি , পবিত্র জল ছিটিয়ে আর খৎনার মাধ্যমে তাকে গ্রহণ করা হয় সমাজে।

 


এই ধর্মের অনেকগুলো ঘাতপ্রতিঘাত আসার পরে অবশেষে শেষ প্রবক্তা শেখ আদি ইবনে মুসাফির (নামটি খেয়াল করে ! ) এই ধর্মের একটি নির্দিস্ট রূপরেখা দান করে।যা জানা যায়,মূলত লেবাননের আদি বাসিন্দা এই মানুষটি ১২শতকের সময়ের মানুষ এবং এদের কাছে শেষ ধর্মীয় এক ভক্তির পুরুষ।তার সমাধি মুসল শহরে অবস্থিত যা তাদের কাছে একটি তীর্থস্থান।ইয়েজিদিরা বিশ্বাস করে তাদের আদি পুরুষ আদম তবে সঙ্গে ইভ মানে হাওয়া নামের আদি মাতার কোনো সম্পর্ক নেই।মূলত আদমের বীর্য থেকে এদের একক অভ্যুদ্দয়।যাই হোক,এরা এক ইশ্বরের বিশ্বাসী এবং তা কোনো মূর্তির না যদিও তার কাছে পৌছানোর জন্য ময়ুররূপের ওই মালিক তাউস এর প্রয়োজন।দাড়ান আরো মজা আছে, এদের ও কিন্তু বর্ণ বিভাজন আছে যেমন ছিল আদি পারসিক সমাজে এবং আমাদের এই উপমহাদেশের হিন্দু ধর্মে।তাদের মূলত তিনটি ভাগ আছে এক হলো শেখ বা অনেকটা ওই পুরোহিত এর মত এ ছাড়া আছে পির যারা সমাজে ধর্মীয় গাথা ইত্যাদি প্রচার করে এবং মুরিদ মানে সাধারন মানুষ।আরো মজার হলো এই বৈবাহিক সম্পর্ক ইত্যাদি নিজেদের বিভাজনের মধ্যেই করতে হয়।ইয়েজিদিরা কোনো ধর্মগ্রন্থ নিয়ে চলে না মানে তাদের কোনো ঐশ্বরিক গ্রন্থ নেই তবে আছে আমাদের এই উপমহাদেশের বেদের মতো বংশপরম্পরায় চলে আসা শ্রুতির মাধ্যমে ধর্মীয় তত্ব আর ভাবধারা।এই কারণ ও তাদের সর্বনাশের অন্যতম বিষয় হয়েছে কারন তারা তো কিতাবধারী কোনো ধর্মের না সুতরাং বাকিদের কাছে যথেষ্ঠ পরিত্যাজ্য।
সব জায়গায় আক্রমন এর মধ্যে থেকে ওরা পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়েছে তবে মূল আশ্রয় মানে ভিটে এখনো মধ্য মেসোপটমিয়ার সিন্জর পাহাড়ের বিভিন্ন ভাগে রয়ে গিয়েছে।আইসিস এদের ওই জায়গায় একই ভাবে সবরকম অত্যাচার করেছে।এমন কোনো কুকীর্তি বাকি রাখেনি যাতে ওরা একেবারে বিলুপ্ত হয়ে যায়।যাইহোক,সে প্রসঙ্গ নিয়ে আলোচনা করছি না,হয়ত পরবর্তী পর্যায়ে এদের এই আইসিস কে প্রতিরোধের অসামান্য লড়াই এর কিছু অংশ নিয়ে বলবো।আপাতত আবার ফিরে যাই এদের ধর্ম এবং বাকি বিষয়গুলোতে।এদের সম্পর্কে পুরনো বইগুলো থেকে যা জানতে পারছি তাতে ওরা মূলত আসিরীয় সভ্যতার একটি গোষ্ঠী যারা ইসলাম পূরবর্তী পৌত্তলিক ধর্মের সাথে আব্রাহামিক ধর্ম এবং ইসলামের বিবিধ সূত্র ধরে এক অন্য পথে চলেছে।এই চলা অন্যের কাছে বিশেষত ইসলামের প্রচারকদের কাছে অসহনীয় হয়েছিল।যুগে যুগে এদের নির্যাতন করেছে,এদের পুরুষ এবং মেয়েদের পণ্য বানিয়েছে ,গণহত্যা করেছে কিন্তু সার্বিক মুছে দিতে পারে নি।শেষ লড়াই আইসিস এর সময়ে হলেও এর ঠিক আগে মানে অটোমান তুর্ক ইত্যাদির সাথে ও এদের সংঘর্ষ হয়েছে।যাইহোক,আগেই বলেছিলাম এই লড়াই ইত্যাদি অন্য কোনো পর্বে বলবো,অভ্যেস খারাপ তাই বেলাইনে চলে যাই।আবার আসি এদের প্রথা বা সৌধ ইত্যাদি নিয়ে।
ইয়েজেদিরা মৃত মানুষের সমাধি দেয় এবং তার জন্য স্মারক হিসেবে স্থাপত্য করে অনেকটা আমাদের এই দিকের মন্দির বা পিরামিডের মত কৌনিক আকৃতির।ছবি যদি দেখেন তা হলে পরিস্কার বুঝতে পারবেন ওরা এক ভিন্ন সংস্কৃতির বাহক হিসেবে অনেকটাই ওই অঞ্চলে বেমানান।আরো দিয়েছি ওদের উপাসনার ছবি,মিল পাবেন পারসিক ধর্মের সাথে।প্রসঙ্গত বলে রাখা ভালো এদের মেয়েরা পর্দানশিন না যদিও কিছু সংস্কৃতি আরবের মত হলেও মেয়েরা যথেষ্ট স্বাধীন এবং বাইরের মানুষের সাথে এদের মেলামেশায় কোনো সামাজিক বাধা নেই।সেপ্টেম্বর মাসে একটি বাত্সরিক তীর্থভ্রমনের মত শেখ আদির সমাধিতে ওরা জড়ো হয় আর এছাড়া ডিসেম্বর মাসে তিনদিনের উপবাস এবং তারপর সুরা (মদ না, অনেকটা ওই ক্রিশ্চান ধর্মের ওয়াইন সেবন এর মতো ) পান করে ধর্মীয় পুরোহিত বা পির এর সাথে।
একবারে এই ধর্ম বা এই মানুষদের উপর কি পরিমানে ধর্মীয় পার্থক্যের কারণে অত্যাচার হয়েছে ওটা লিখে শেষ করা সম্ভব হলো না।ইচ্ছা আছে পরবর্তী পর্যায়ে আরো একটি লেখার চেষ্টা করা যাতে এদের ঐতিহাসিক সময় থেকে বর্তমানের দাযেস মানে আইসিস এর অত্যাচারের কিছু বিবরন তুলে ধরার।চেষ্টা করবো এই লোকগুলোর এই অত্যাচারের বিরুদ্ধে টিকে থাকার সংগ্রামের উপর কিছু বলতে।এই লেখার সাথে সম্পৃক্ত না তবু কিছু লড়াকু বীরাঙ্গনার ছবি দিলাম পরের ভাগের সূত্র হিসেবে।


যতটুকু জানতে পেরেছি ওদের সমন্ধে তাতে এই গোষ্ঠির উপর অনেক বেশি শ্রদ্ধা বেড়েছে।আরো পোক্ত হয়েছে ধর্মীয় বিচার আমাদের কত আলাদা করেছে তার উপর নিজের আগের ধারণা।অনুকম্পা বাড়ছে অর্বাচিনদের উপর ,ঘৃনা ও বাড়ছে,একবার চিন্তা করলো না যে শুভ আর অশুভর এক দ্বৈত উপস্থিতি নিয়ে যে চিন্তাভাবনা এই গোষ্ঠী করেছিল ওটা কোনো শয়তানের অর্চনার না ..হায় ধর্ম তুমি জানো খালি মানব বিভাজন !

লেখার তথ্যসূত্র নিচে ক্রমানুসারে দিলাম।সঙ্গে কিছু সম্পৃক্ত ছবি ও দিলাম।আপনাদের গুরুত্বপূর্ন মন্তব্য আর সংযোজন এর জন্য হাত পেতে আছি যাতে পরবর্তী পর্ব আরো একটু ভালো করতে পারি।

অনেক ধন্যবাদ !
সূত্র :
১. https://en.wikipedia.org/wiki/Yazidis
2. https://www.bbc.com/news/blogs-magazine-monitor-28686607
3. https://news.nationalgeographic.com/…/140809-iraq-yazidis-…/
4. https://www.nytimes.com/…/bashiqa-journal-a-sect-shuns-lettu…
5. https://ia801702.us.archive.org/…/items/jstor-3…/3014180.pdf
6. https://www.huffingtonpost.in/…/yazidi-religious-beliefs_n_5…
7. লেখা পড়তে বিরক্ত লাগলে এই ইউ টিউব প্রতিবেদন দেখে নিন অসাধারন একটি বিবরন https://www.youtube.com/watch?v=vfsP-t_LvwU


_______________________________________

আজিজুল শাহজী। বাংলাভাষার প্রথিতযশ লেখক।

আপনার মতামত দিন:


কলাম এর জনপ্রিয়