Ameen Qudir

Published:
2018-06-28 17:20:18 BdST

এবার ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হলেন চিকিৎসক


 


নওগাঁ জেলা থেকে সংবাদদাতা
নওগাঁ জেলা ট্রাফিক পুলিশের এক সদস্যের লাঠির আঘাতে রাস্তায় ছিটকে পড়ে ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হলেন একজন চিকিৎসক। নাম ডা. আসাদুল ইসলাম । মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে শহরের বাইপাস ইকড়তাড়া গ্রামের নওগাঁ-বগুড়া সড়কে এই দুর্ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর ট্রাফিক পুলিশের শাস্তির দাবিতে স্থানীয়রা এক ঘণ্টা রাস্তা অবরোধ করে রাখে।
মর্মান্তিক ঘটনার পর পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয় ‘ভুল হয়ে গেছে’ । স্থানীয়রা তা মানতে নারাজ। তারা ট্রাফিক পুলিশের শাস্তির দাবি জানিয়ে শ্লোগান দেন। সে সাথে তারা বলেন, ট্রাফিক পুলিশ এমন ভুল করবে কেন; যে ভুলে একজন চিকিৎসককে লাশ হতে হলো।

পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছে ওই ট্রাফিক পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করার কথা বলার পরই পরিস্থিতি শান্ত হয়। নিহত ডা. আসাদুল ইসলামের বাড়ি বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার ছাতিয়ান গ্রাম ইউনিয়নের বলিরঘাট গ্রামে। তিনি নওগাঁ প্রত্যাশা ক্লিনিকের মালিক।

সকালে নওগাঁ শহরের বাইপাস সড়ক দিয়ে হেলমেট মাথায় পরিহিত আসাদুল মোটরসাইকেল চালিয়ে ইসলাম সান্তাহারের দিকে যাচ্ছিলেন। ইকড়তাড়া গ্রামের নওগাঁ-বগুড়া সড়কে পৌঁছালে ট্রাফিক পুলিশের এক সদস্য আসাদুল ইসলামকে থামার জন্য সংকেত দেন। দুই চাকার মোটরসাইকেল থামানোর জন্য ব্রেক করতেই ওই পুলিশ লাঠি দিয়ে আসাদুলের বাম হাতে আঘাত করেন। সাথে সাথে আসাদুল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মোটরসাইকেল নিয়ে রাস্তার ডান পাশে চলে যান।

যখন এ ঘটনা ঘটে ঠিক সে সময় প্রবল গতিতে ছুটে আসা একটি ট্রাক (ঢাকা মেট্টো-ট-১৪-৪০২৪) আসাদুলকে চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। আশেপাশের লোকজন ছুটে আসতে শুরু করলে আসাদুলকে আঘাতকারী ট্রাফিক পুলিশের ওই সদস্য সটকে পড়েন। ঘটনার পর বিক্ষুদ্ধ এলাকাবাসী রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। তারা আসাদুলের মৃত্যুর জন্য ট্রাফিক পুলিশের সাজার দাবিতে শ্লোগান দেয়।


প্রায় ১ ঘণ্টা অবরোধের পর নওগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হাই উপস্থিত হয়ে ট্রাফিক পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন। এরপরই নওগাঁ ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট এসে মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য নওগাঁ সদর হাসপাতাল মর্গে নিয়ে যায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন নওগাঁ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাশিদুল হক, সদর সার্কেলের এএসপি লিমন রায়, সদর উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা মুশতানজিদা পারভীন।
বিক্ষুদ্ধ এলাকাবাসী জানান, শহরের বাইপাস ব্রিজ মোড় থেকে নওগাঁ-বগুড়া সড়কের বিজিবির মোড় পর্যন্ত প্রায় ১ কিলোমিটার সড়ক পার হতে পুলিশ ও দালালদের হাতে নগদ টাকা দিতে হয়। ভোর থেকে থানা ও ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা রাস্তায় বসে থাকেন। আর পুলিশের নিয়োজিত কিছু দালাল টাকা আদায় করে। এলাকাবাসীর দাবি এই ১ কিলোমিটারের মধ্যে কোনো ট্রাফিক পুলিশ থাকবে না এবং কোনো চাঁদা ওঠানো যাবে না।
ঘটনার ব্যাপারে নওগাঁ ট্রাফিক পুলিশ ইন্সপেক্টর গোলাম সারোয়ার বলেন, তার জানামতে ওই স্থানে কোনো পুলিশ ডিউটিতে ছিল না। রাস্তায় কোনো যানবাহন থামিয়ে চাঁদা আদায় করা হয় না। নওগাঁ সদর থানার ওসি আব্দুল হাই বলেন, এই ঘটনার জন্য যেই দায়ি হোক না কেন তার বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আপনার মতামত দিন:


কলাম এর জনপ্রিয়