Ameen Qudir
Published:2017-04-14 13:34:50 BdST
সবাইকে নববর্ষের শুভেচ্ছা
 
ডা. শিরীন সাবিহা তন্বী
___________________________
তখন আমি এই এতটুকুন।ফ্রক পরা,ঝুটি দোলানো খুকী।পহেলা বৈশাখে প্রথম বারের মত মেলায় যাওয়া - সেই দিনটি কি আসলেই আলাদা কোন বৈশিষ্ট্যমন্ডিত,নইলে আজ ও ভুলতে পারছি না কেন??
এই প্রশ্নে অনেক অনুভূতি,জাতীয়তা জড়িত।আমি জন্মসূত্রে বাঙ্গালী।বাঙ্গালী মা বাবার কোলে আমার জন্ম।
একটু পেছনে তাকালে আমার দাদার দাদা ছিলেন একজন সাধারন বাঙ্গালী মুসলমান।কথিত আছে এক পহেলা বৈশাখে গ্রাম্য মেলা দেখতে যাবার দিন তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন।ঐ রাতে তিনি গ্রামের এক বটবৃক্ষের নীচে একটি স্বর্নমুদ্রা ভর্তি পিতলের কলস পান।এই কলসীর স্বর্নমুদ্রা বিক্রি করে তিনি প্রচুর ধন সম্পদ ও জমিজমার মালিক হন।এরপর তিনি ঐ গ্রামের পঞ্চায়েত হন।
পরবর্তীতে তার একমাত্র পুত্র,মানে আমার বাবার দাদা ইচ্ছেমত ভোগ বিলাসী জীবন যাপন করে ঐ সম্পদের যথেষ্ট অপচয় করেন।ঐ সময়ে ঘোড়ার দৌড়,নৌকা বাইচ,মেলা সহ নানা অনুষ্ঠান আয়োজন তার শখ ছিল।কিন্তু শখ পূরনে আর্থিক অবস্থায় ভাটা পড়ে পঞ্চায়েতদের।
আমার দাদা এবং তার ভাইয়েরা তাই বাধ্য হয়ে খানিকটা নিয়ন্ত্রিত জীবন এবং কৃষিকাজে মনোনিবেশ করেন এবং আর্থিক অবস্থার উন্নতি করেন।
আজ আমি এবং আমার বোনেরা প্রিয় গ্রাম থেকে অনেক দূরে জীবন জীবিকার জন্য।কিন্তু ঐ গ্রামের মাটির রস শোষিত করেই তো বেড়েছে আমার পূর্বপুরুষ।
চোখ বন্ধ করলে আমরা যে যেখানে যেভাবেই থাকি না কেন,আমার ই মত মাটির খুব কাছাকাছি থেকেই আমাদের বা আমাদের আপনজনদের জন্ম এবং বেড়ে ওঠা।
তাই বৈশাখের আগমন আমাদের জীবনে এক অনন্য অসাধারন ঘটনা।
আমার গ্রামের বৈশাখী মেলা,আমার বাড়ী,উঠোন,পঞ্চায়েতদের মাঠের পর মাঠ জুড়ে সবুজ ধানের ক্ষেত,ক্ষেতের মাঝে পুকুর ঐ সব কিছুর মধ্যেই বড্ড বেশী করে আমি আছি।আমরা সকলে আছি।।
সকলকে পহেলা বৈশাখে বাংলা নববর্ষের অনেক অনেক শুভেচ্ছা। 
__________________________
ডা. শিরীন সাবিহা তন্বী
#বরিশাল
আপনার মতামত দিন:

 
                 
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                       