খবর ডেইলি স্টার
Published:2021-10-21 04:02:04 BdST
বাংলাদেশ মোস্ট ওয়ান্টেড কুমিল্লায় পূজামণ্ডপের প্রতিমায় কোরআন শরিফ রেখেছিল মুহম্মদ ইকবাল হোসেন
কুমিল্লায় পূজামণ্ডপের প্রতিমার হাটুর কাছে কোরআন শরিফ রেখে গদা কাঁধে নিয়ে হেঁটে যাওয়া যুবকের নাম মুহম্মদ ইকবাল হোসেন। সূত্র সিসিটিভি ফুটেজ
সংবাদদাতা, কুমিল্লা
কুমিল্লায় পূজামণ্ডপের হনুমানের প্রতিমার হাটুর কাছে কোরআন শরিফ রেখে গদা কাঁধে নিয়ে হেঁটে যাওয়া যুবকের নাম মুহম্মদ ইকবাল হোসেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
কুমিল্লার পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ আজ বুধবার দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, ৩০ বছর বয়সী মুহম্মদ ইকবাল কুমিল্লা নগরীর মুরাদপুর-লস্করপুকুর এলাকার নূর আহম্মদ আলমের ছেলে। তাকে খুঁজছে পুলিশ।
এর আগে দ্য ডেইলি স্টারকে মণ্ডপে কোরআন শরীফ রাখার সিসিটিভি ফুটেজ পাওয়ার কথা নিশ্চিত করেন কুমিল্লার পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ।
পুলিশ সুপার বলেন, 'আমরা অকল্পনীয়ভাবে ভিডিওটি পেয়েছি। ভিডিও দেখে যে কোরআন শরীফ রেখেছেন তাকে শনাক্ত করা গেছে। শনাক্তকারীকে ধরার জন্য পুলিশ চেষ্টা করছে।
তিনি জানান, গত ১৩ অক্টোবর দুর্গাপূজার অষ্টমীর দিনে কুমিল্লার নানুয়ার দিঘির পাড়ে পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন রাখার কথা জানিয়ে ৯৯৯ কল করেন স্থানীয় ইকরাম হোসেন। ফোন প্রাপ্তির কয়েক মিনিটের মধ্যে সিভিল পোশাকে সিএনজি অটোরিকশায় করে উপস্থিত হন কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ারুল আজীম। ওই ঘটনায় সরাসরি লাইভ করেন স্থানীয় ফয়েজ আহমেদ। তিনি প্রবাসে ছিলেন এখন মোবাইল ফোন ব্যবসায়ী। লাইভ প্রচার হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তা বিভিন্ন মাধ্যমে ভাইরাল হয়।
তিনি বলেন, ওই সময় ওসি ফোনে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে ঘটনা সম্পর্কে জানাতে থাকলে ফয়েজ ওসির পরিচয় লাইভে দেন এবং কোরআন শরীফ অবমাননার কথা বলে প্রতিবাদ জানানোর কথা বলেন। এই ভিডিও বিভিন্ন গ্রুপে শেয়ার হয়।
পুলিশ সুপার বলেন, '৯৯৯ এ ফোন করা ইকরাম সারারাত পূজামণ্ডপের আশেপাশে অবস্থান করেছে এবং ইকবালকে পূর্ব নানুয়ার পাড়ে গদা নিয়ে ঘোরাঘুরি করতে দেখা গেছে।'
সৌজন্যে ডেইলি স্টার বাংলা/ প্রথম আলো

প্রথম আলো জানায়,
গভীর রাতে মসজিদ থেকে পবিত্র কোরআন নিয়ে যাচ্ছেন এই যুবক, তিনি ইকবাল হোসেন বলে নিশ্চিত হয়েছে পুলিশ
কুমিল্লায় পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন শরিফ রাখা ব্যক্তিকে শনাক্ত করা হয়েছে। তাঁর নাম ইকবাল হোসেন (৩৫)। বাবার নাম নূর আহমেদ আলম। বাড়ি কুমিল্লা নগরের সুজানগর এলাকায়।
সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে ইকবাল হোসেনকে চিহ্নিত করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্র জানিয়েছে। কুমিল্লার পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ প্রথম আলোকে এ ঘটনায় একজনকে চিহ্নিত করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আজ বুধবার সন্ধ্যায় পুলিশ সুপার প্রথম আলোকে বলেন, পুলিশের একাধিক সংস্থার তদন্তে এই নাটকীয় অগ্রগতি হয়েছে। ওই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
শারদীয় দুর্গাপূজার মহা অষ্টমীর দিন গত বুধবার ভোরে কুমিল্লা শহরের নানুয়া দীঘির উত্তর পাড়ে দর্পণ সংঘের উদ্যোগে আয়োজিত অস্থায়ী পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন দেখা যায়। এরপর কোরআন শরিফ অবমাননার অভিযোগ তুলে ওই মণ্ডপে হামলা চালায় একদল লোক। সেখানে ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়।

এ ঘটনার জের ধরে ওই দিন চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে হিন্দুদের ওপর হামলা করতে যাওয়া একদল ব্যক্তির সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। সেখানে নিহত হন চারজন। পরদিন নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে হিন্দুদের মন্দির, মণ্ডপ ও দোকানপাটে হামলা–ভাঙচুর চালানো হয়। সেখানে হামলায় নিহত হন দুজন। এরপর রংপুরের পীরগঞ্জে হিন্দু বসতিতে হামলা করে ভাঙচুর, লুটপাট ও ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। দেশের আরও অনেক এলাকায় হিন্দুদের মন্দির, মণ্ডপসহ বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা হয়েছে।
আপনার মতামত দিন:

 
                 
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                       