ডেস্ক
Published:2021-07-04 17:48:04 BdST
জীবনের মুল্যবান সময় অযথা নষ্ট করার ১৪টি লক্ষণ, মিলিয়ে দেখুন নিজের সঙ্গেও
অধ্যাপক ডা শুভাগত চৌধুরী 
_________________________
আপনি জীবনে আপনার মুল্যবান সময় অযথা নষ্ট করছেন । ১৪ টি লক্ষণ আর ভাবনা ।
ক্ষণস্থায়ী এই জীবন , কিন্তু এর শেষ সীমায় না আসা পর্যন্ত আমরা ভাবিনা কত সময় হেলায় হারিয়েছি আর অপচয় করেছি অযথা অকারনে বা অনর্থক । 
এমন কিছু লক্ষন ।
১। দরকার নাই এমন কিছু কাজে অযথা সময় নষ্ট করেছেন
প্রতি রাত টিভি র সামনে বসে , কম্পিউটারে সামাজিক মাধ্যমে আছেন ঘণ্টার পর ঘণ্টা এমন বয়সে যখন আপনি তরুন আপনার জীবনে অনেক কিছু করার আছে। তাই নতুন করে সাজান জীবনের সময়।
২। খুব বেশি অভিযোগ করেন ।
এমন অনেকে আছেন জীবনকে, নিজে জীবনকে খুব ঘৃণা করেন কেন অমুকের মত না , তার এত টাকা , বাড়ি গাড়ি ঃ, অন্যের সাথেও তা শেয়ার করেন। নিজের জীবনের প্রতি অভিযোগ । আপনার বস, সহকর্মী , বেতন , প্রতিবেশী সবার প্রতি অভিযোগ । এতে সব হবে নেতিবাচক , পরিবেশ করে তুলবেন নেতি বাচক । এই দৃষ্টি ভঙ্গি বদলাতে হবে।
৩। মগজকে খেলান না, জ্ঞান আহরনে উৎসাহী না।
বয়ঃসন্ধির পর নিজের বাড়ন বিকাশ হয়না যদি প্রতিদিন নতুন জিনিষ না শিখি , বয়স কালে বুড়ো হলে যদি হাল নাগাদ তথ্য নিয়ে সমৃদ্ধ না হই ,তাহলে অধোগতি হবে রয়ে যাব স্থির , বদ্ধ । নিশ্চল হ্রদে পানা পড়েছে যেন । তাই শিখতে হবে। চ্যালেঞ্জ এর মুখামুখি হতে হবে , তাহলেই জীবন হবে বিকশিত ।
৪।যদি প্রেরনা না থাকে
অন্যদের মত গতানুগতিক, অনেকে সকালে অফিস যায় , কাজ করেন, বাড়ি আসেন , খান, টিভি দেখেন ঘুমান। নাই বৈ চিত্র/। কোন প্যাশন নাই ।কেন তা হবে ? 
প্রত্যেকের জীবনে থাকবে পছন্দের বিষয় এর উপভোগে আনন্দ , কি আপনাকে অনুপ্রানিত করে এর আবিষ্কার দরকার আর চর্চা দরকার । জীবন পাত্র হবে পূর্ণ
৫। নিজের সাথে খুব বেশি নেতিবাচক আলাপন
কখন ও কখন ও আমাদের ভাবনা আমাদের জীবনে আনে নিরানন্দ ।
নিজের সম্বন্ধে নেতিবাচক ভাবনা নিজের উদ্যম নষ্ট করে।
৬। ভবিষ্যতের জন্য পরিকল্পনা করেন না।
বর্তমান নিয়ে বাচতে হবে এই শিক্ষা আমরা পেলেও আগামী দিনের কথাও ভাবতে হবে , ঠিক পথে আছি কিনা। জীবনে লক্ষ্য না থাকলে , প্ল্যান না থাকলে এমন হবে নৌকার মাঝির মত যার কোন ও হাল পাল নাই , মনে করছে যেখানে ইচ্ছা নৌকা ভিড়ুক । 
কাজের পরিকল্পনা থাকলে , লক্ষ্য থাকলে জীবনে নিরাপদ স্থানে পৌঁছানো হয় সুগম।
৭। আপনার জীবনে আপনার কুশলের জন্য অবদান নাই এমন লোকের সাথে বেশি সময় ব্যায় করেন।
নিগে টি ভ মানুষ যারা ধারনা দেবে আমি খুব ভাল করছিনা , এত ভাল হতে পারিনিঃ এমন ভাবনা মনে ঢুকিয়ে দেয়ার মত লোকের সাথে যুক্ত হওয়া সহজ। আমরা এদেরকে অনেক সময় বন্ধু বলি কিন্তু বোঝা উচিত এরা আমাকে নামিয়ে দিতে সদা সচেষ্ট । 
এদেরকে বলে Energy vampire's": এরা অন্যের এনার্জি শুষে নেয় কিন্তু কোন পজিটিভ কিছু দেয়না ।এদের সংসারে বাদ দিয়ে খুজে নিন সত্যিকার বন্ধু যারা আপনাকে গর্বিত করে , আপনার আত্মাকে উত্তোলিত করে , অনুপ্রানিত করে।
৮। স্মার্ট ফোনে আসক্ত।
আধুনিক জীবনে স্মার্ট ফোন হল জীবনে যোগ হয়া উপকারি গেজেট । কিন্তু কত সময় এতে ব্যয় করেন সে ব্যাপারে সতর্ক থাকা উচিত। এর ব্যবহার কি আশ পাশের পরিবেশ, পারিবারিক জীবন , বন্ধু এদের উপর কি প্রভাব ফেলে ? আপনি পরিবারে সবার সাথে রাতের খাবার খেতে বসার সময় কি এর স্ক্রিনে আবদ্ধ হয়ে আছেন? কোন সেমিনারে বক্তব্য হচ্ছে গুরুত্ব পূর্ণ আপনি এতে আসক্ত, বক্তা বলছেন আপনার চোখ স্ক্রিনের দিকে ফোনে , , আপনি বন্ধুদের সাথে রেস্তরায় কফি খেতে বসে ফোনে অবিরাম কথা বলছেন পরিচিতদের সঙ্গে? এটি বদভ্যাস।; আপনি হারাচ্ছেন অর্থপূর্ণ বিনোদন আর বন্ধু বা পরিবারের সাথে আপনার প্রিয়জনদের সাথে আনন্দময় সময়।
৯। অনর্থক কোন ও ব্যয় করেন।
জীবনে দুটো জিনিষ Want and Need ।Need ,হল এমন কিছু যা 
আমাদের বেচে থাকার জন্য প্রয়োজন । আর Want হল আপনার ইচ্ছা আপনি চান তবে না হলেও জীবন চলে । সংসারে মা বাবা সন্তানকে এ দুটোর তফাৎ নিশ্চয় বুঝিয়ে দেন , কিন্তু আধুনিক জীবনে আজকাল এ দুটো একীভূত হয়ে গেছে। হয়ত অনেক মর্টগেজ উদ্ধার করতে পারছেনা তবু অনাবশ্যক জিনিষ কেনাতে ব্যায় করেন। 
মুহূর্ত খানেক ভাবুন আমাদের জীবনে আছে কিছু অত্যাবশ্যক চাহিদা পানি,খাদ্য, আশ্রয় , আর ভালবাসা। আরও আছে । বাকি অনেক কিছু অতিরিক্ত , না হলেও চলে। সেভাবে নিজের ব্যয় প্লান করা উচিত।
১০। পর্যাপ্ত ঘুম হয়না।
ঘুম যে কত স্বাস্থ্যহিত করে তা সবাই জানেন। অনেকে অনেক রাত পর্যন্ত সিনেমা দেখেন, ফেবু করেন , গেম খেলেন , বন্ধুর সাথে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কথা বলেন , উঠেন দিনে অনেক দেরিতে । এরা দিনের অনেক সময় নষ্ট করেন , এটি দারুন বদভ্যাস। এটি ছাড়া উচিত। এতে যে ক্লান্তি হয় এতে জীবনের অর্থপূর্ণ কাজ করার শক্তি নিঃশেষিত হয় ।
১১। নিজের শরীরের খেয়াল নেন না।
ঘুম স্বাস্থ্যের জন্য ভাল , সত্য এ ছাড়া আমাদের শরীরের খেয়াল নিতে হবে , চেক আপ করাতে হবে সুষম খাবার খেতে হবে সক্রিয় থাকতে হবে, ব্যায়াম করতে হবে। 
এতে জীবনের প্রতি দৃষ্টি ভঙ্গি বদলাবে মনে এনার্জি আসবে , পজিটিভ হবে চিন্তা , জীবনে অর্থপূর্ণ কিছু করা সম্ভব হবে , চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করার শক্তি আসবে মনে।
১২। আপনার সবস্তির , আরামের আবাস থেকে বেরিয়ে আসেন না।
আরামের আবাসে থাকা সহজ কিন্তু আমরা পরিকল্পিত ঝুকি জীবনে নিতে চাইনা, তাই নিজের আনন্দ আর সন্তুষ্টি পূর্ণতা পায়না। পরিকল্পিত ঝুকি নিলে জীবনে আসতে পারে ইতিবাচক পরিনতি তা না হলে জীবন হবে পানসে , গতানুগতিক ।
১৩। জীবনকে ভালবাসেন না।
সাফল্য আর সুখ আসে হাতে হাত ধরে, জীবনে কতটুকু সফল বিবেচনা করতে হলে সুখের পরিমাপ করতে হবে। আপনি সুখী কি ?> না হলে জীবনে আনতে হবে তাৎপর্য পূর্ণ পরিবর্তন । জীবনে সন্তুষ্টি আর তৃপ্তি অনেক সময় সুখ নির্দেশ করেনা জীবন আপনাকে উদ্দীপিত করা চাই । আপনি জীবনকে উপভোগ করা চাই তা হলে আনতে হবে কিছু পরিবর্তন ।
১৪। উপরের এই লক্ষণ গুলো হয়ত আপনার জানা তবে এতে নিরুৎসাহিত হয়া নয় । মাথার ভেতরে যে দুষ্ট পোকা বার বার বলছে হবেনা, পারবেনা , সেই পোকা বের করতে হবে। ইচ্ছে করলেই পরিবর্তন সম্ভব।
আপনার মতামত দিন:

 
                 
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                       