ডাক্তার প্রতিদিন
Published:2022-09-13 18:25:38 BdST
আত্মহত্যা প্রতিরোধে যেসব গুরুত্বপূর্ণ ও কার্যকর পরামর্শ দিলেন বিএসএমএমইউ উপাচার্য
উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ
সংবাদদাতা 
_________________
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ 
আত্মহত্যা প্রতিরোধে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ও কার্যকর পরামর্শ দিয়েছেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে আত্মহত্যা প্রতিরোধ সেমিনারে তিনি এসব পরামর্শ দেন।
উপাচার্য বলেন, আত্মহত্যা শব্দটি হলো ইনটেনশনালী নিজেকে মেরে ফেলা। আত্মহত্যার অন্যতম কারণ হলো ইগো। ইগো হলো নিজের মতামতের বাইরে অন্য মতামত অগ্রহণযোগ্য। তিনি বলেন, আত্মহত্যার অন্যতম আরেক কারণ হলো ডিপ্রেশন। ইদানিং ডিপ্রেসন বেড়ে গেছে। করোনায় অনেকের ডিপ্রেসনের কারণে ব্লাড প্রেসারও বেড়ে গেছে, ডায়াবেটিস যাদের ছিল না তাদেরও ডায়াবেটিস হয়েছে, চোখের পাওয়া বেড়ে গেছে। অনেকে চশমা পরত না তাদেরও চশমার প্রয়োজন হয়েছে।
তিনি বলেন, একাকিত্ব থাকার সময়ে সোস্যাল মিডিয়ায় ব্যবহারের বৃদ্ধির কারণে অনেকে আত্মহত্যার দিকেও ধাবিত হচ্ছে। ১৫ থেকে ৩০ বছর বয়সের মধ্যে মানুষের ইগো বেশী থাকে। এ সময়ে আত্মহত্যার প্রবণতা বেশী থাকে। বাবা মা অথবা অভিভাবকদের এ বয়সের ছেলে মেয়েদেরকে সময় দিতে হবে। এ বয়সের ছেলে মেয়েরা কোথায় যাচ্ছে কী করছে এসব বিষয়ে অভিভাবকদের খোঁজ খবর রাখতে হবে। এ বয়সী ছেলেমেয়েদের আবেগ বেশী থাকে। এ আবেগের কারণে ছেলে মেয়েরা প্রেম ভালবাসার দিকে ঝুঁকে পড়ে। প্রেম ভালবাসা জনিত বিচ্ছেদের কারণে আত্মহত্যার প্রবণতাও লক্ষ করা যায়।
উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, জেনেটিক কারণেও অনেকে আত্মহত্যা করে থাকে। পরিবারের মধ্যে কারো যদি এ ধরণের টেন্ডেসি থাকে তাদের এ সব বিষয়ে সচেতন হবে। তিনি মনোরোগ বিদ্যা বিভাগের শিক্ষক ও রেসিডেন্ট আত্মহত্যার কারণ, সম্প্রতি আত্মহত্যা বেড়ে যাবার কারণ ও প্রতিকার বের করার জন্য গবেষণায় মনোযোগ দেবার নির্দেশনাও প্রদান করেন।

‘কর্মের মাধ্যমে আশা তৈরি করো’ স্লোগানকে সামনে রেখে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) বিশ্ব আত্মহত্যা প্রতিরোধ দিবস-২০২২ উপলক্ষে আয়োজিত সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে 
তিনি এসব পরামর্শ তুলে ধরেন। 
সোমবার দুপুর ১ টায় ( ১২ সেপ্টেম্বর ২০২২ খ্রিঃ ) বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ ডা. মিলন হলে দিবসটি উপলক্ষে মনোরোগ বিদ্যা বিভাগের সুইসাইড ক্লিনিকের উদ্যোগে একটি বৈজ্ঞানিক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
গুরুত্বপূর্ণ ওই সেমিনারে বিশেষ অতিথি ছিলেন জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার, এনডিডি ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারপার্সন অধ্যাপক ডা. গোলাম রাব্বানী, বাংলাদেশ এ্যাসোসিয়েশন অফ সাইকিয়াট্রিস্ট এর সভাপতি অধ্যাপক ডা. মোঃ ওয়াজিউল আলম চৌধুরী, এটিসিবি’র সভাপতি অধ্যাপক ডা. ঝুনু শামসুন নাহার।

ছবি :ডা. ফাতিমা জোহরা
এ সেমিনারে ‘ ‘ম্যানেজমেন্ট অব সুইসাইড সারভাইভারস’ সুইসাইড রিস্ক , হাউ উই ক্যান সেভ লাইভ "এর উপর প্যানেলিস্ট হিসেবে বিশিষ্ট মনোশিক্ষাবিদ ও কথাশিল্পী অধ্যাপক ডা. মোহিত কামাল, বিএসএমএমইউর মনোরোগ বিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ও ডাক্তার প্রতিদিন সম্পাদক ডা. সুলতানা আলগিন, অধ্যাপক সুরাইয়া বেগম, মনের খবর সম্পাদক অধ্যাপক ডা. এমএমএ সালাউদ্দিন কাওসার বিপ্লব , ডা. বিগ্রেডিয়ার কামরুল হাসান , ডা. হেলাল উদ্দিন আহমেদ আলোচনা করেন। বিষয় উপস্থাপন করেন , ডা. ফাতেমা তুজ জোহরা জ্যোতি ও ডা. নুর ই আলম|

ছবি :ডা. ফাতিমা জোহরা
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মনোরোগ বিদ্যা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. নাহিদ মাহজাবিন মোরশেদ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোরোগ বিদ্যা বিভাগের সুইসাইড ক্লিনিকের প্রধান সমন্বয়ক অধ্যাপক ডা. মহসীন আলী শাহ। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সহকারী অধ্যাপক ডা. সিফাত-ই-সাইদ। 
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন মনোরোগ বিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. ফাতিমা জোহরা ও অনুষ্ঠানটির সমন্বয় করেন সহকারী অধ্যাপক ডা. এসএম আতিকুর রহমান।

ছবি : মাহজাবিন শাউলি
আপনার মতামত দিন:

 
                 
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                       