ডেস্ক
Published:2021-04-20 05:00:29 BdST
মুক্তিযোদ্ধা সন্তান ডা. জেনির ঘটনায় জোর প্রতিবাদ জানিয়েছে বিএসএমএমইউ
ডেস্ক 
-------------------------
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রতিবাদ জানিয়ে একটি বিবৃতি দেয়া হয়েছে । নিচে তা হুবহু তুলে ধরা হলো।
‘গত ১৮/০৪/২০২১ তারিখ আনুমানিক ১২:৩০ ঘটিকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ব বিদ্যালয়ের রেডিওলজি এন্ড ইমেজিং বিভাগে কর্মরত সহযোগী অধ্যাপক ডা. মোছা: সাঈদা শওকত কর্তব্যস্থল হতে দায়িত্বপালন শেষে নিজ আবাসস্থলে ফেরত যাওয়ার পথে লকডাউনে পুলিশের টহলদলের সদস্যগণের সাথে কথোপকথনের সচিত্র প্রতিবেদন সামাজিক মিডিয়ার মাধ্যমে অত্র প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষের গোচরীভূত হয়েছে।
ডা. মোছা: সাঈদা শওকত দায়িত্ব পালন শেষে অত্র প্রতিষ্ঠানের লোগো সম্বলিত গাড়িতে আরোহিত অবস্থায় এলিফ্যান্ট রোডে পৌঁছার পর কর্তব্যরত পুলিশের টহলদল কর্তৃক তাকে থামানো হয়। পরিচয় চাওয়া হলে তিনি তার চিকিৎসক ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত পরিচয় জানান।
পক্ষান্তরে, উক্ত টহলদল কর্তৃক তাঁর চিকিৎসক পরিচিতিকে ‘ভুয়া’ বলা হয় এবং অসৌজন্যমূলকভাবে তাকে গাড়ি হতে নামতে বলা হয়। উক্ত সময় তিনি তার নাম ও বিশ্ববিদ্যালয়ের লোগো সম্বলিত এ্যাপ্রোন পরিহিত অবস্থায় ছিলেন। উল্লেখ্য, এ্যাপ্রোন বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসকগণের পরিধেয় পেশাগত পোষাক হিসেবে বিবেচিত হয়। পরবর্তীতে, দায়িত্ব পালনকারী পুলিশের আচরণে এবং তার পরিচিতি ভুয়া হিসাবে অভিহিত করার প্রেক্ষিতে ডা. মোছা: সাঈদা শওকত বিক্ষুব্ধ হন এবং পুলিশের সাথে বাক-বিতন্ডায় লিপ্ত হন, যার খন্ডকালীন সচিত্র প্রতিবেদন সামাজিক মিডিয়ায় প্রচার হয়েছে।
উল্লেখ্য, এ ব্যাপারে ইতোমধ্যে অত্র বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সাথে ডেপুটি পুলিশ কমিশনার, রমনা ডিভিশন এবং ওসি, নিউমার্কেট থানার সাথে মৌখিক আলোচনা হয়েছে।
দেশের এই করোনা প্রাদুর্ভাবের ক্রান্তিলগ্নে বিএসএমএমইউ-সহ দেশের সকল হাসপাতালের স্বাস্থ্যকর্মীগণ জীবনবাজি রেখে রোগীর জীবন রক্ষার কাজে নিবেদিত রয়েছেন। ইতিমধ্যে বেশ কিছু চিকিৎসক চিকিৎসাসেবা প্রদান করতে গিয়ে করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন এবং অসংখ্য স্বাস্থ্যকর্মী প্রতিনিয়ত করোনা আক্রান্ত হচ্ছেন।
দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে দেশ সেবায় নিবেদিত চিকিৎসককে অপমান ও অপদস্থ করার কারণে চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত স্বাস্থ্যকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার করেছে, যা দেশব্যাপী চিকিৎসাসেবা ব্যাহত করার শঙ্কা সৃষ্টি করেছে। এমতাবস্থায়, অত্র প্রতিষ্ঠান উক্ত ঘটনার মাধ্যমে একজন মহিলা চিকিৎসককে হয়রানি করার ঘটনার প্রতিবাদ জানাচ্ছে এবং ভবিষ্যতে চলমান করোনা চিকিৎসার স্বার্থে স্বাস্থ্যকর্মীগণের নির্বিঘ্নে চলাচল নিশ্চিত করার বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানাচ্ছে।’
রোডের বাটা সিগন্যাল এলাকায় ডা জেনির গাড়ি আটকে তার পরিচয়পত্র চান নিউমার্কেট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এস এ কাইয়ুম।
ওই গাড়িতে জেনির কর্মস্থল বঙ্গবন্ধু মেডিক্যালের স্টিকার সাঁটানো ছিল, তার গায়েও চিকিৎসকের অ্যাপ্রোন ছিল। তারপরেও কেন পরিচয়পত্র দেখাতে হবে-এ নিয়ে তর্কাতর্কির এক পর্যায়ে জেনি তার বাবা বীর বিক্রম বীর মুক্তিযোদ্ধার পরিচয়ও বলেন। ওসি কাইয়ুমও জানান, তিনিও মুক্তিযোদ্ধার ছেলে।
ডা. জেনির অভিযোগ, তাকে ভুয়া ডাক্তার বলেছেন ওসি কাইয়ুম, এক পর্যায়ে যৌন ব্যবসার অভিযোগে গ্রেপ্তার শামীমা নূর পাপিয়ার সঙ্গে তাকে তুলনা করেছেন।
ডা. জেনি একজন রেডিওলজিস্ট এবং বাংলাদেশে রেডিওলজিস্টদের সংগঠন ফাউন্ডেশন ফর ডক্টরস সেফটি, রাইটস অ্যান্ড রেসপন্সিবিলিজ-এফডিএসআর এক বিবৃতিতে ওসি কাইয়ুমের শাস্তি দাবি করেছে।
তারা বলেছে, ‘পতিতাবৃত্তির পৃষ্ঠপোষকতার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা পাপিয়ার সঙ্গে পুলিশ ডা. জেনির তুলনা করেছে, যা একজন নারী চিকিৎসকের জন্য চরম অবমাননাকর।’
আপনার মতামত দিন:

 
                 
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                       