Ameen Qudir

Published:
2019-10-12 20:50:12 BdST

২০১৯ সালে দেহতত্ত্ব এবং চিকিৎসা বিজ্ঞানে নোবেল: অম্লজান কীভাবে বাঁচায় আমাদের ‘জান’



ডা. সেজান মাহমুদ
অধ্যাপক, আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন
প্রখ্যাত চিকিৎসক ,লেখক


ভূমিকা:

বিগত দশক ধরে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করা যাচ্ছে বিজ্ঞানের বিষয়ে নোবেল পুরস্কারের ক্ষেত্রে, তা হলো একক কোনো বিজ্ঞানী এই পুরস্কার আর পাচ্ছেন না। তার কারণ বিজ্ঞানের যেভাবে অগ্রগতি হচ্ছে গভীর থেকে গভীরতর বিষয়ে, সেই সঙ্গে বিজ্ঞানের বিষয়গুলো এমনভাবে নানান বিষয়ের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত হচ্ছে যে কারো একার পক্ষে যেমন সবকিছু নিয়ে গবেষণা করা সম্ভব না, তেমনি একটি বিষয়ের সঙ্গে আরেকটি বিষয়ের যোগসূত্রটাকে কোনোভাবেই আলাদা করা যাচ্ছে না। তাই দেখা যাচ্ছে কেউ হয়তো জাপানে বসে, কেউ হয়তো আমেরিকায় বসে, কেউ হয়তো ইউরোপে বসে একই বিষয়ের নোবেল পুরস্কার পাচ্ছেন।

২০১৯ সালের দেহতত্ত্ব এবং চিকিৎসা বিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কারকে বলা যায় ‘টেক্সট বইয়ের নোবেল”। কারণ, দেহতত্ত্ব বা ফিজিওলজি এবং চিকিৎসা বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে অক্সিজেন বা অম্লজান কীভাবে খাদ্যকে পুড়িয়ে শক্তি তৈরি করতে কাজে লাগে বা অন্যভাবে বললে প্রাণীর শরীরের মেটাবোলিজম বা বিপাক হতে অক্সিজেনের ভূমিকা কী তা শত বছর ধরে টেক্সট বইতে লিখে রাখা হয়েছে। কিন্তু এই অম্লজান বা অক্সিজেনের পরিমাণ কমে গেলে শরীরের কোষ কীভাবে তা বুঝতে পারে এবং তার সঙ্গে অভিযোজন করে তা কিন্তু একেবারেই জানা ছিল না। কবি যখন লেখেন,

“ভালবাসা ছাড়া আর আছে কী

ভালবাসা হলো নিঃশ্বাস এ দেহের…”

তখন আমরা ঠিকই বুঝতে পারি নিঃশ্বাস কতোটা অনিবার্য আমাদের বেঁচে থাকার জন্যে। জীবনে যেমন ভালবাসা কমে বা বাড়ে শরীরেও তেমনি এই ভালবাসাতূল্য অক্সিজেন কমে বা বাড়ে। এই যে কমে যাওয়ার সঙ্গে খাপ খাইয়ে কীভাবে প্রাণী অভিযোজন বা অ্যাডাপটেশন করতে পারে সেই বিষয়ের জন্যেই এ বছরের নোবেল পুরস্কার। এই বেঁচে থাকা কিন্তু শুধু মানুষের বেঁচে থাকা নয়। কোটি কোটি বছরের ইতিহাসে নানান প্রাণী এই পৃথিবীতে জন্ম নিয়েছে আবার বিলুপ্ত হয়েছে। এই বিবর্তনের প্রক্রিয়ায় প্রাণীর এই অভিযোজন ক্ষমতা শুধু মানুষের নয়, সমস্ত প্রাণীকুলের অস্তিত্বের জন্যে জড়িত। তাই কাব্য করেই বলা যায়, ‘অম্লজান কীভাবে বাঁচায় আমাদের ‘জান’– এটাই হলো এ বছরের নোবেল পুরস্কারের মূলতত্ব।

কোন কোন বিজ্ঞানী পেলেন এ বছরের দেহতত্ত্ব এবং চিকিৎসা বিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার?

উইলিয়াম জি কেইলিন, জুনিয়র যিনি নিউ ইয়র্ক শহরে ১৯৫৭ সালে জন্মগ্রহণ করেন। ডিউক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টর অব মেডিসিন ডিগ্রি নিয়ে ইন্টারনাল মেডিসিন এবং অঙ্কোলজিতে স্পেশালাইজেশন করেন জোন্স হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ে। তারপর হার্ভার্ডের ড্যানা ফারবার ক্যান্সার সেন্টারে নিজস্ব গবেষণাগার তৈরি করে কাজ করতে থাকেন। হার্ভার্ডের ফুল-প্রফেসর হন ২০০২ সালে। তিনি ১৯৯৮ সাল থেকে হাওয়ার্ড হিউজেজ মেডিক্যাল ইন্সটিটিউটের গবেষক হিসাবেও কর্মরত।

স্যার পিটার জে র‍্যাটক্লিফ যুক্তরাজ্যের ল্যাঙ্কাশায়ারে ১৯৫৪ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর স্পেশালাইজেশন নেফ্রোলজিতে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং ১৯৯৬ সালে ফুল প্রফেসর হন। তিনি লন্ডনের ফ্রান্সিস ক্রিক ইন্সটিটিউটের ক্লিনিক্যাল রিসার্চ ডিরেক্টর, অক্সফোর্ডের টার্গেট ডিসকভারি ইন্সটিটিউটের ডিরেক্টর এবং লাডউইগ ইন্সটিটিউটের ক্যান্সার গবেষক হিসাবে কর্মরত।

গ্রেগ এল সেমেঞ্জা নিউ ইয়র্ক শহরে ১৯৫৬ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বায়োলজিতে বি, এ ডিগ্রি এবং পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমডি/পিএইচডি যৌথ ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৮৪ সালে শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ হিসাবে শিক্ষা নেন ডিউক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে, তারপর জনস হপকিন্স বিশ্বাবিদ্যালয়ে গবেষণাগার তৈরি করে সেখানেই ফুল প্রফেসর হন ১৯৯৯ সালে। তিনি ২০০৩ সাল থেকে জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্সটিটিউট ফর সেল ইঞ্জিনিয়ারিং-এর ভাস্কুলার রিসার্চ প্রোগ্রামের ডিরেক্টর হিসেবে কর্মরত।

কিসের জন্যে পেলেন এই নোবেল পুরস্কার?

অক্সিজেন বা অম্লজান এই গবেষণা এবং আবিষ্কারের মধ্যমণি; আমাদের এই পৃথিবীর আবহাওয়া পরিমণ্ডলের মোটামুটি পাঁচ ভাগের একভাগ অক্সিজেন বা অম্লজান। শরীরের মাইটোকন্ডিয়ার মাধ্যমে অক্সিজেন ব্যবহার করে খাদ্য থেকে শক্তি উৎপাদন করে সকল প্রাণী। ১৯৩১ সালে অটো ওয়ারবার্গ এই যে শক্তি উৎপাদক প্রক্রিয়া তা যে এনজাইম বা জারক রসের মাধ্যমে হয়, তা অবিস্কার করে নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন এই একই বিভাগে। বিবর্তন প্রক্রিয়ায় এই অক্সিজেন যাতে পরিমিত পরিমাণে থাকে তা নিশ্চিত করার প্রক্রিয়াটি তৈরি হয়। মানুষের ঘাড়ের দুই দিকে বড় রক্তনালীর পাশে দুটো ক্যারোটিড বডি থাকে। এই ক্যারোটিড বডির অভ্যন্তরে থাকে বিশেষ ধরেনের কোষ। কোষগুলো সেন্সরের মতো কাজ করে এবং মস্তিষ্ককে জানিয়ে দেয় রক্তে অক্সিজেনের পরিমাণ কতো। এই অক্সিজেনের পরিমাণ দেখেই মস্তিষ্ক শ্বাসপ্রশ্বাসের গতি বাড়িয়ে বা কমিয়ে দেয় যাতে পরিমাণ মতো অক্সিজেন শরীরে প্রবহমান থাকে। ১৯৩৮ সালে এই বিষয়টি আবিষ্কারের জন্যে নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন বেলজিয়ামের বিজ্ঞানী কর্নেইলি হেম্যান্স যিনি দুটো কুকুরের ওপরে গবেষণা করে অক্সিজেন এবং মস্তিষ্কের স্নায়ুকোষের মধ্যকার সম্পর্ক দেখান। তার আগে মানুষের ধারণা ছিল এটি রক্তনালী দিয়ে নিয়ন্ত্রিত হয়।

মঞ্চে এলো হাইপোক্সিয়া-ইন্ডিউসড- ফ্যাক্টর (এইচ আই এফ)

শরীরের রঙ্গমঞ্চে যতোই অক্সিজেন বা অম্লজান মধ্যমণি বা কেন্দ্রীয় চরিত্র হোক না কেন, সেই কেন্দ্রীয় চরিত্র ফুটিয়ে তুলতে অন্য আরও চরিত্রের প্রয়োজন পড়ে। শরীরে যখন অক্সিজেন কমে যায় যাকে বলা হয় হাইপক্সিয়া, যার জন্যে মস্তিষ্ক শ্বাসপ্রশ্বাস বাড়িয়ে দিয়ে অক্সিজেন সরবরাহ ঠিক রাখে, সেখানে কিন্তু আরেকটি চরিত্র মঞ্চে আসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়ে– তাহলো ইরাইথ্রোপয়েটিন (ইপিও) নামের একটি হরমোন বা জারক রস। এই ইরাইথ্রোপয়েটিনের কাজ হলো রক্তের লোহিত কণিকা বা রেড ব্লাডসেল উৎপাদন বাড়িয়ে দেয়া। ব্যাপারখানা এরকম যে, যেহেতু অক্সিজেন পরিমাণ কমে যাচ্ছে তাহলে লোহিত কণিকার সংখ্যা বাড়িয়ে দিলে প্রত্যক কণিকা অল্প অল্প অক্সিজেন নিলে সংখ্যাবৃদ্ধির কারণে মোট অক্সিজেনের পরিমাণে ঠিক থাকবে। এই বিষয় যদিও বিংশ শতাব্দীর শুরু থেকেই জানা ছিল, কিন্তু রহস্যটি জানা ছিল না কীভাবে এই প্রক্রিয়াটি নিয়ন্ত্রিত হয়।

গ্রেগ সেমেঞ্জা শরীরের ইরাইথ্রোপয়েটিন জিন নিয়ে কাজ করেন ইঁদুরের শরীরে এটা দেখতে যে কীভাবে অক্সিজেনের নানান পরিমাণের সঙ্গে এই ইরাইথ্রোপয়েটিনের পাশেই অবস্থানরত ডিএনএ সেগমেন্ট বা অংশটি কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করছে শারীরিক প্রক্রিয়াকে। স্যার পিটার জে র‍্যাটক্লিফও এই ইরাইথ্রোপয়েটিন (ইপিও) জিনের অক্সিজেন-নির্ভর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে কাজ করেন একই সময়ে।

গ্রেগ সেমেঞ্জারের উদ্দেশ্য ছিল জীবকোষের যে উপাদানটি এই প্রক্রিয়ায় মধ্যস্থতা করে তা আবিষ্কার করা। তিনি তা করতে গিয়ে লিভার বা যকৃত কোষের এক ধরনের প্রোটিন কমপ্লেক্স আবিষ্কার করেন যার নাম দেন হাইপোক্সিয়া-ইন্ডিউসড-ফ্যাক্টর (এইচআইএফ)। শুধু তা-ই নয়, তিনি দু’রকমের ডিএনএ-সংযুক্ত প্রোটিন পেলেন যাদের এখন বলা হয় এইচআইএফ-১-আলফা এবং এআরএনটি। এই দুই আবিষ্কারের ওপরে ভিত্তি করেই গবেষকেরা কোষের অন্যান্য উপাদানের ভূমিকা আবিষ্কার করতে সক্ষম হবেন।

‘ভন হিপেল লিন্ডাউ (ভিএইচএল) : অপ্রত্যাশিত আগুন্তুক

শরীরে অক্সিজেনের পরিমাণ যখন বেশি থাকে তখন কোষের মধ্যে এইচআইএফ-১-আলফা খুব কম পরিমাণে থাকে। আবার অক্সিজেনের পরিমাণ কমে গেলে এইচআইএফ-১-আলফা পরিমাণে বেড়ে যায় যাতে করে ডিএনএ-এর সেই গাঁটছাড়া বেঁধে ইরাইথ্রোপয়েটিন (ইপিও) কে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। এই যে এইচআইএফ-১-আলফা নামের বস্তুটি তা কিন্তু খুব সহজেই শরীরে ভেঙে যায়। যে কোষীয় যন্ত্রটি দিয়ে এই ভাঙার কাজটি হয় তাকে বলে “প্রোটিয়াসম”। প্রোটিয়াসম প্রক্রিয়ায় আরেকটি ছোট্ট পেপটাইড ‘ইউবিকুইটিন’ যুক্ত হয় যা এইচআইএফ-১-আলফাকে ভাঙতে সাহায্য করে। কিন্তু কীভাবে এই সংযোগটি ঘটে তা বিজ্ঞানীদের কাছে অজানা ছিল। এখানে একটা কথা না বলেই নয়; এই যে কোষীয় যন্ত্রটি দিয়ে এই ভাঙার কাজটি হয় তাকে বলে “প্রোটিয়াসম” তা আবিষ্কারের জন্যে ২০০৪ সালে রসায়নে নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন অ্যারোন চিচানোভার, আব্রাম হারশকো এবং আরউইন রোজ নামের তিন বিজ্ঞানী।

তাহলে এইচআইএফ-১-আলফা আর ‘ইউবিকুইটিন’ এই দু’জনার সংযোগ কীভাবে ঘটে তা কিন্তু রহস্যই রয়ে গিয়েছিল। এর উত্তর পাওয়া গেল অপ্রত্যাশিতভাবে একেবারে অন্য একটি গবেষণা থেকে। যে সময়ে সেমেঞ্জা এবং র‍্যাটক্লিফ এই উত্তর খুঁজছিলেন, ঠিক তখনই ক্যান্সার গবেষক উইলিয়াম কেইলিন, জুনিয়র একটি বিরল জিনেটিক রোগ ‘ভন হিপেল লিন্ডাউ’ নিয়ে গবেষণা করছিলেন। এই রোগটি বংশগতভাবে হয় যেখানে শরীরের নানান অঙ্গে টিউমার তৈরি হয়। ধীরে ধীরে সেই টিউমার ক্যান্সারে পরিণত হয়। গবেষকেরা জানতে পারলেন যে এই ‘ভন হিপেল লিন্ডাউ’ বা ভিএইচএল জিন আসলে ইউবিকুইটিন প্রোটিনকে একটা ছাপ্পর মেড়ে চিহ্নিত করে দেয় যার কারণে এইচআইএফ-১-আলফা ভাঙতে থাকে। এভাবেই স্বাভাবিক অক্সিজেন থাকা অবস্থায় এইচআইএফ-১-আলফা ভাঙার জন্যে ভিএইচএল অপ্রত্যাশিত আগুন্তুকের মতো কাজ করে জানতে পারেন এই তিন বিজ্ঞানী।

কিন্তু এখানেই নাটকের শেষ নয়; এই অক্সিজেন কমে যাওয়া বা বেড়ে যাওয়ার জন্যে কীভাবে ভিএইচএল এবং এইচআইএফ-১-আলফার মধ্যেকার সম্পর্ক নিয়ন্ত্রিত হয় তা কিন্তু পুরোপুরি খোলাসা হলো না বিজ্ঞানীদের কাছে। ২০০১ সালে ডক্টর কায়েলিন এবং র‍্যাটক্লিফ প্রায় একসঙ্গে অক্সিজেনের স্বাভাবিক মাত্রায় একধরনের হাইড্রক্সিল যুক্ত হয় এইচআইএফ-১-আলফার দুটি নির্দ্দিষ্ট অবস্থানে। একে বলা হয় প্রোলাইল-হাইড্রক্সিলেশন যা ভিএইচএল কে এইচআইএফ-১-আলফার বিশেষ জায়গা চিনতে সাহায্য করে, যুক্ত হতে সাহায্য করে এবং অক্সিজেনের স্বাভাবিক মাত্রায় থাকার সময় ভাঙতে সাহায্য করে। যে-এনজাইম বা জারক রস দিয়ে এই ভাঙনের কাজ হয় তাও এই দুইজন পরবর্তীতে আবিষ্কার করেছেন। ব্যস, এভাবেই তিন বিজ্ঞানী পৃথিবীর নানান প্রান্তে থেকে একই রহস্যের উন্মোচন করেছেন যা শরীরতত্ত্ব এবং চিকিৎসা বিজ্ঞানে যুগান্তকারী ভূমিকা রাখবে।

কী এই আবিষ্কারের প্রভাব ভবিষ্যতের জন্যে?

বিজ্ঞানীরা এখন পর্যন্ত জানেন যে এই অক্সিজেন শরীরের স্বাভাবিক কার্যক্রমের জন্য যেমন জরুরি, তেমনি শরীরের প্যাথলজি বা রোগ জন্মানোর জন্যও নানাভাবে জরুরি। তাহলে একদিকে স্বাভাবিক কার্যক্রম যেমন, মেটাবোলিজম বা বিপাক, ব্যায়াম, ভ্রণাবস্থায় গ্রোথ বা বড় হবার জন্যে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার জন্যে, শ্বাসপ্রশ্বাস তো আছেই, সেই সঙ্গে পর্বত বা উচুস্থানে বসবাসের জন্যে এই অক্সিজেনের ভূমিকার অনেক অজানা বিষয় যেমন জানা যাবে, তেমনি উন্নতিসাধন সম্ভব হবে। অন্যদিকে, শরীরে রক্তশূন্যতা, ক্যান্সার, কিম্বা স্নায়ুজনিত রোগ যেমন স্ট্রোক, ইনফেকশন, ক্ষত সারানো, হার্টের ক্ষেত্রে অ্যাটাকের সময় অক্সিজেনের ভূমিকা, ইত্যাদি নানান বিষয়ে এই আবিস্কার সুদূরপ্রসারী ভূমিকা রাখবে। শুরুতেই বলেছিলাম এই বছরের নোবেল পুরস্কার একেবারে পাঠ্যবইয়ের পুরস্কারের মতো। আসলেও তাই। মেডিক্যাল বা বায়োমেডিক্যাল বা বায়োলজির বর্তমানের ছাত্রছাত্রীরা শুরুতেই এইসব বিষয় জেনে সামনে আগাতে থাকে। কিন্তু এই সহজ জ্ঞানের এগিয়ে যাওয়ার পেছনে রয়েছে এই তিন বিজ্ঞানী আর আরও অজস্র নাম না জানা বিজ্ঞানীর অক্লান্ত পরিশ্রম এবং নিদ্রাহীন রাত। আমরা বিজ্ঞানের সুফল পেয়ে যেন ভুলে না যাই এদের অবদানের কথা। সেই সঙ্গে নতুন প্রজন্মকে স্বপ্ন দেখাতে শিখি– একদিন তারাও পারবে হয়তো লিখে দিতে বাংলাদেশের নাম এই তালিকার মধ্যে। স্বপই তো আমাদের বাঁচিয়ে রাখে, জাগিয়ে রাখে।
লেখা ও ছবি : বিডিনিউজ এর সৌজন্যে প্রকাশিত।


লেখক সেজান মাহমুদ

আপনার মতামত দিন:


মানুষের জন্য এর জনপ্রিয়