Saha Suravi

Published:
2025-01-15 10:44:39 BdST

বাংলা চিকিৎসা-সাহিত্যের জনক , স্বাস্থ্যাচার্য অধ্যাপক ডা. শুভাগত চৌধুরী আর নেই


 

ডেস্ক
___________________


বাংলাদেশের চিকিৎসা-সাহিত্যের জনক , সর্বজনবিদিত স্বাস্থ্যাচার্য অধ্যাপক ডা. শুভাগত চৌধুরী আর নেই। আজ ১৫ জানুয়ারি সকালে অনন্তলোকে মহাপ্রস্থান করেছেন।
তিনি উপমহাদেশের সর্বশ্রদ্ধেয় চিকিৎসাবিজ্ঞানী ছিলেন। কর্মজীবনে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে সাফল্যের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন।
বাংলাদেশের চিকিৎসা-সাহিত্যের জনক ও চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. শুভাগত চৌধুরীর মহাপ্রয়াণে গভীর শোক জানিয়েছেন বিএসএমএমইউর মনোরোগ বিদ্যার প্রফেসর (সিএমসি ২৮) ডা. সুলতানা আলগিন । শোকবার্তায় তিনি বলেন, অধ্যাপক
চৌধুরী ছিলেন উপমহাদেশের শ্রেষ্ঠ চিকিৎসা-শিক্ষকদের একজন।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে আমি তাঁর স্নেহধন্য শিক্ষার্থী ছিলাম। তিনি ছিলেন শিক্ষকদের শিক্ষক। এই মহান মানুষের কাছেই শিক্ষা ও শিক্ষানির্দেশনা পাওয়ার সৌভাগ্য ধন্য হয়েই আমরা অগ্রসর হয়েছি। তিনি ছিলেন আলোকবর্তিকা, আমাদের পরম পথের পাথেয়।
স্যারের পরিবার সদস্য , সহকর্মী এবং শুভানুধ্যায়ীসহ সকলের সঙ্গে সমব্যথী হয়ে তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোক ও সমবেদনা জানাই।তিনি ছিলেন একজন সৎ চিকিৎসক ও সবার উপরে ভালো মানুষ, সজ্জন গুরুদেব । তাঁর বুক জুড়ে ছিল সমগ্র বাংলাদেশ। সমগ্র বাংলাদেশের পতাকা । উপমহাদেশ সহ সারা বিশ্বে বাংলাদেশের অনন্য পরিচয় তুলে ধরার মহান কারিগর ছিলেন তিনি। 

ডা. শুভাগত চৌধুরীর জন্ম সিলেট ১৯৪৭ সালে। লেখাপড়া শুরু সিলেটে শিশুস্কুলে এরপর রবি ঠাকুরের শান্তিনিকেতন পাঠভবনে, আবার দেশে স্কুল-কলেজে ও মেডিকেল কলেজে এবং পরে দেশে ও বিদেশে নানা উচ্চশিক্ষার প্রতিষ্ঠানে। সরকারি চাকরি থেকে অবসর নিয়েছেন ২০০৪ সালে। দীর্ঘ ৩৫ বছর সরকারি চাকরি জীবনে তিনি স্নাতক ও স্নাতকোত্তর চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানে অধ্যাপনা করেছেন।  চিকিৎসা বিষয়ে গবেষণা করেছেন লন্ডনের সেন্ট থমাস হাসপাতালে চিকিৎসাবিজ্ঞান বিষয়ে গবেষণা, প্রশিক্ষণ গ্রহণ ও প্রবন্ধ উপস্থাপনের জন্য ভ্রমণ করেছেন ইংল্যান্ড, জার্মানী, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, ভারত, পাকিস্তান, মালয়েশিয়া ও পশ্চিম আফ্রিকা। তাঁর গবেষণার বিষয় প্রাণ রসায়ন, পুষ্টি ও চিকিৎসা শিক্ষা পদ্ধতি। তিনি নিউইয়র্ক সায়েন্স একাডেমীর নির্বাচিত সদস্য। দেশি-বিদেশি পত্র-পত্রিকা এবং চিকিৎসাবিজ্ঞান জার্নালে তিনি অনেক প্রবন্ধ লিখেছেন ও লিখছেন। জনপ্রিয় চিকিৎসাবিজ্ঞানের লেখক হিসেবে তিনি সুপরিচিত। চিকিৎসাবিজ্ঞানের কয়েকটি পাঠ্যপুস্তকও বাংলায় অনুবাদ করেছেন। প্রকাশিত গ্রন্থ সংখ্যা ৩৮টি। চিকিৎসা ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের জন্য শেরে বাংলা জাতীয় পুরস্কার-২০০৯ লাভ করেন।
 

 


বিএসএমইউর রক্তরোগ বিশেষজ্ঞ ও সহকারী অধ্যাপক , বিশিষ্ট সঙ্গীত শিল্পী ডা. গুলজার হোসেন উজ্জ্বল এক শোকলিপিতে বলেন,

এই জীবনে যাদেরকে আইডল মেনেছিলাম আপনি ছিলেন তাঁর একজন। আপনার ভদ্রতাজ্ঞান, রুচিবোধ ও সবাইকে মর্যাদা দেবার শিক্ষাটা মনে রাখার চেষ্টা করবো স্যার।
আপনার কাছে যেতে পারার যোগ্যতাটাকেই এককালে সাফল্যের বেঞ্চমার্ক ভাবতাম। এতটাই মূগ্ধ ছিলাম।
শেষবার যখন কথা হলো, আসতে চাইলেন বিএসএমএমইউ তে। আমাদের ডিপার্টমেন্টে আমার প্রযত্নে ভর্তি হবার ইচ্ছাও পোষণ করলেন।
গতকাল সবকিছু ঠিকঠাক করেও আসা হলোনা আপনার। আজ সকালে ভর্তি হবার কথা ছিল বিএসএমএমইউতে। কিন্তু অফিসে এসে শুনলাম এই খবর।
মাস খানেক আগে আপনার বাসায় যাবো বলেছিলাম। যাব যাব করে সেও যাওয়া হলোনা।
অতৃপ্তি রয়ে গেলো।
পরপারে ভাল থাকবেন স্যার।

 

 

 

 

আপনার মতামত দিন:


কলাম এর জনপ্রিয়