Saha Suravi

Published:
2024-10-02 13:18:41 BdST

যত বেশি পরিশ্রুত বা রিফাইন্ড কারবোহাইড্রেট আমরা খাবো, তত বেশি ইনসুলিন ক্ষরিত হবে


ডা. সিদ্ধার্থ মুখোপাধ্যায়

 

ডা. সিদ্ধার্থ মুখোপাধ্যায়
__________________________

আমাদের শরীরের যদি বিশ্লেষণ করা যেত তাহলে দেখা যেত, খুব স্থূলভাবে তা ফ্যাট বা চর্বি, প্রোটিন এবং কার্বোহাইড্রেট এ তৈরী। এবং কিছু ধাতু ও ভিটামিন এর সমাহার। আমাদের খাদ্য কেও ভাগ করা যায় একই ভাগে।
ভুললে চলবে না, মানব সভ্যতার ইতিহাসে কৃষিকার্য শুরু হয়েছে যতবছর। তার আগে আমরাও আরো স্তন্যপায়ী প্রাণী দের মতো ই হান্টার গ্যাদারার বা শিকারী ছিলাম।
মানুষ বা কোন প্রাণীই কিন্তু দু তিন দিনের অনাহারে মারা যেত না, এখনো যায় না। আমাদের জীনে সেই প্রতিরোধ ক্ষমতা আজো বাহিত হচ্ছে। আগে মানুষ শিকার করে তখন কার মতো বেশি খেত, কিন্তু তারপরের খাদ্য সম্পর্কে নিশ্চয়তা ছিলো না। এমন ও হতো যে হয়তো বা দু বা তিন দিন কোন খাদ্য ই পাওয়া গেল না। তখন মানুষ বেঁচে থাকত শরীরের সঞ্চিত শক্তি ব্যবহার করে। শিকারের মাংসে শর্করা খুব কম, ফ্যাট বা চর্বি ও প্রোটিন ই বেশি।
শরীরের কতগুলি হরমোন এই শক্তিব্যয় অথবা শক্তিসঞ্চয় নিয়ন্ত্রণ করে। এদের মধ্যে বেশী উল্লেখযোগ্য হলো ইনসুলিন, লেপ্টিন, ওয়াই - ওয়াই পেপ্টাইড, গ্রোথ হরমোন, ইনক্রিটিন, গ্লুকাগন, এবং ঘ্রেলিন। এরা প্রয়োজন মত ক্ষরিত হয়ে আমাদের শরীর কে শক্তির যোগানের চাবিকাঠি টি ঠিক করে দিতো।
কারণ প্রোটিন এবং কার্বোহাইড্রেট বা শর্করা এবং ফ্যাট বা চর্বি থেকেও শক্তি পাওয়া যায়। বরং প্রতি ১ গ্রাম ফ্যাট থেকে পাওয়া যায় ৯ ক্যালরি শক্তি, কিন্তু প্রতিগ্রাম শর্করা বা প্রোটিন থেকে মেলে প্রায় তার অর্ধেক।
যত বেশি পরিশ্রুত বা রিফাইন্ড কারবোহাইড্রেট আমরা খাবো, তত বেশি ইনসুলিন ক্ষরিত হবে এবং শরীরের বিভিন্ন কোষে পৌঁছে দেওয়ার পরে সেই শক্তি লিভারে গ্লাইকোজেন হিসেবে এবং শরীরের অন্যত্র চর্বি হিসেবে জমা হবে, ভবিষ্যতের সঞ্চয় হিসেবে। আমাদের শরীরের কোষগুলোর অনেক আগে থেকেই ব্যাংকিং পদ্ধতির ধারণা ছিলো, স্রেফ বেঁচে থাকার তাগিদে।
বাজারে সহজলভ্য বিভিন্ন মূলতঃ শর্করা জাতীয় খাদ্যের উপস্থিতি এই আদ্যিকালের হিসেব টিকেই গোলমাল করে দিলো৷ তখন থেকেই শুরু হলো দি ওবেসিটি এপিডেমিক, যার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া, টাইপ টু ডায়বেটিস, হাইপারটেনশন এবং বিভিন্ন কার্ডিও ভাস্কুলার অসুখ। সহযোগিতা করল তামাকের নিকোটিন এবং তুলনামূলক অপরিশ্রমী জীবনযাত্রা। যার ফল স্থূলতা, যা নিজেই মৃত্যুর কারণ ও হতে পারে। উদাহরণ -- পাকিস্তানের নামী গজল গায়ক নুসরৎ ফতেহ আলি খাঁ।।

@

আপনার মতামত দিন:


কলাম এর জনপ্রিয়