ডেস্ক

Published:
2022-01-16 01:36:06 BdST

ক্রাইম পেট্রল বাংলাদেশ৪০ টাকার তামার কয়েন কিনতে ৪০ লাখ টাকা অগ্রিম দিয়েছিলেন বাংলাদেশী এক ব্যাক্তি: অত:পর.....


কথিত গুলিস্তানী কয়েন

 

 

সংবাদ দাতা
_______________

প্রতারক চক্রের কাছে থেকে ৪০ টাকার তামার কয়েন প্রত্নতাত্ত্বিক মুদ্রা হিসেবে ৪০ লাখ টাকা অগ্রিম দিয়েছিলেন বাংলাদেশী এক ব্যাক্তি। পরে জানলেন, প্রতারণার শিকার হয়েছেন তিনি।
অবিশ্বাস্য এ ঘটনা ঢাকাতেই।

ডিবি পুলিশ জানায়, কথিত মহামূল্যবান কয়েকটি কয়েন প্রতারকরা ক্রেতার সামনে স্কচটেপে মোড়ানো প্যাকেট থেকে খুলে দেখায়। কার্বন কাগজের আরেকটি প্রলেপ ছিড়ে কয়েন বের করে ম্যাগনিফায়িং গ্লাস দিয়ে পরীক্ষা করেন চক্রের কথিত রসায়নবিদ। সাজানো পরীক্ষায় রসায়নবিদ ৪ ধরনের কেমিক্যাল ব্যবহার করেন।


পরীক্ষার পর রসায়নবিদ জানান এরমধ্যে দুটি কয়েন আসল। ক্রেতা, বিক্রেতা ও দালালেরর উপস্থিতিতে দুটি কয়েনের দাম নির্ধারণ হয় ৫ কোটি টাকা। কথিত ৪০০ বছরের পুরানো দুটি কয়েনের দামে ক্রেতা সন্তুষ্ট হয়ে ৪০ লাখ টাকা অগ্রিম দেওয়ার পর বাকি টাকা পরিশোধের তারিখ ঠিক করে বিদায় নিলেন।
নির্দিষ্ট তারিখে বাকি টাকা দিয়ে কয়েন নিতে গিয়েই ঘটে বিপত্তি।

খোঁজ নেই দালাল বা বিক্রেতার। এরপর বাধ্য হয়ে ক্রেতা পুলিশকে জানান।
প্রতারিত হওয়া ক্রেতা বলেন, কয়েন বিক্রির কথা বলে আমাকে নিয়ে গেছে। তখন আমার কাছে বিক্রির কথা বলে স্ট্যাম্প করে ৪০ লাখ টাকা নিয়েছে। এই ভণ্ড-প্রতারকরা এমন পরিবেশ তৈরি করে যে মানুষের তখন আর বিবেক বুদ্ধি কাজ করে না।

পুলিশ জানায়, শত বছরের পুরানো কয়েন দরকার, এমন লোকদের টার্গেট করে চক্রটি। পরে নিজেরাই দালাল ও বিদেশি ক্রেতা সেজে কোনো তারকা হোটেলে বসে দরদাম ঠিক করে। আসলে কয়েনগুলো পুরনো না। এগুলো গুলিস্তান থেকে কিনে আনা হয়, যা শুধু তামা দিয়ে বানানো।

রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে একটি জালিয়াত চক্রের তিন দালাল ও এক রসায়নবিদকে গ্রেফতার করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। যারা তামার তৈরি ৪০ টাকার কয়েন প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন হিসেবে বিক্রি করে আসছিল কোটি টাকায়। এ সময় তাদের কাছ ৪২টি ধাতব মুদ্রা উদ্ধার করা হয়েছে। পরে তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সাভারে অভিযান চালিয়ে চক্রের আরেক সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়।


তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মানিকগঞ্জের একটি বাঁশ ঝাড় থেকে উদ্ধার করা হয় ১১ লাখ টাকা।


এ বিষয়ে গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেন, সাধারণ তামা দিয়ে এসব কয়েন তৈরি হয় যাতে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির নাম লিখে দেওয়া হয়। এই কয়েনগুলোকে একদল প্রতারকরা গুলিস্তান থেকে কিনে নেয়। তারপর চক্রটি বাংলাদেশি সরলমনা কিন্তু লোভী টাইপের লোকদের বিভিন্ন হোটেলে নিয়ে প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন হিসেবে দেখায় এবং একেকটির দাম চান ৪-৫ কোটি টাকা।
আসলে এই কয়েনটার মূল্য ৪০ থেকে ৫০ টাকা। কিন্তু সেটার জন্য প্রতারকরা কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।

ডিবির যুগ্ম কমিশনার (উত্তর) মো. হারুন অর রশীদ বলেন, এ রকম প্রতারক চক্র বিভিন্ন জায়গায় রয়েছে। দ্রুত বড়লোক হওয়ার চেষ্টা, অস্বাভাবিক কোনো প্রলোভন থেকে সবার সাবধান হওয়া জরুরি।

আপনার মতামত দিন:


কলাম এর জনপ্রিয়