ডেস্ক

Published:
2021-09-02 14:20:16 BdST

পরীমনি আসলে নায়িকা নয়, নায়কও নয়, রীতিমত মহানায়ক:জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকের বিশ্লেষণ


 

 

ডেস্ক 

_________

পরি মনি কে নিয়ে চলছে নানা আলোচনা।  


সাইফুদ্দিন আহমেদ নান্নু
জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক লিখেছেন, 

পরীমনি আসলে নায়িকা নয়, নায়কও নয়, রীতিমত মহানায়ক !

বলবেন, কেন?
বলছি...

০১। র‍্যাব,পুলিশসহ আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার শত শত সদস্য যখন তার বাড়ি ঘেরাও করেছে গ্রেফতারের জন্য তখন 'হায় কি হল'বলে ঘরের মেঝেতে বসে সে বিলাপ করেনি। উল্টো ফেসবুক লাইভে এসে এক ঝটকায় পুরো দেশের নজর তাঁর দিকে টেনে এনেছে।

০২। প্রায় ঘন্টাব্যাপি তার এই গ্রেফতারপূর্ব লাইভ এবং গ্রেফতারের মহাযজ্ঞ প্রায় প্রতিটি টেলিভিশন দু আড়াই ঘন্টা ধরে সরাসরি সম্প্রচার করেছে।

০৩। তাকে যখন গ্রেফতার করে বাড়ির বাইরে নিয়ে যাওয়া হয় তখন সে সালোয়ার কামিজ বা শাড়ি নয়, রীতিমত প্যাণ্ট-শার্ট পরে পুলিশের গাড়িতে উঠেছে। এসময় অন্যদের মত সে মুখ ঢেকে, মাথা নীচু করে রাখেনি। মাথা সোজা রেখে স্মার্টলি হেঁটেই গাড়িতে উঠেছে। এমন পরিস্থিতিতে খুব কম মানুষই এমনটা পারে।
এরপর থানা হাজত, আদালত, রিমাণ্ডে আদালত থেকে থানায় যাওয়া আসার পথে পরীমনি অসম্ভব দৃঢ়চেতা,সাহসী মানুষের অভিব্যক্তি দেখিয়েছে।

০৪। শ শ পুলিশের সাথে সামনে থেকে সে যখন হেঁটে গেছে তখন তার ড্রেস, হাঁটার ভঙ্গি দেখে তাকে আসামী বলে মনেতো হয়ইনি বরং ছবির দিকে তাকালে মনে হয়েছে বিশাল মাপের কোন রাজনৈতিক নেতা রাজসিক নিরাপত্তার ছায়ায় জনসভায় ভাষণ দিতে যাচ্ছেন।

০৫। আদালতে,আদালত প্রাঙ্গনে তাকে সাধারণ মানুষের মত কারও করুণা প্রার্থনা করতে বা অসহায়ের মত কাঁদতে দেখা যায়নি। বরং মিডিয়াকে লক্ষ্য করে চিৎকার করে নিজেকে নির্দোষ দাবি করতে দেখা গেছে,যেমনটা দেখা যায় পোড়খাওয়া রাজনৈতিক নেতাদের ক্ষেত্রে।

০৬। সবশেষ চমকটা ছিল আজ সকালের। সে কাশিমপুর কারাগার থেকে জামিনে মুক্ত হয়ে, মলিন পোষাকে, মিডিয়ার ক্যামেরা এড়িয়ে কালো কাঁচে ঘেরা কোন গাড়িতে উঠে কারাগার প্রাঙ্গন থেকে টুপ করে বাড়ি ফিরে যায় নি। বরং অত্যন্ত ঠাণ্ডামাথায় সে তার পরিকল্পনা সাজিয়েছে।
ধবধবে শুভ্র সাদা ড্রেস পরে, সাদা রঙের ওড়নাকে পাগড়ির মত করে মাথায় বেঁধে চারপাশ হাসিতে আলোকিত করেই সে বাড়ি ফিরেছে।

০৭। এই ফিরে যাবার সময়ও সে হাতের তালুতে মেহেদীর রঙে কিসব লিখে-এঁকে সবাইকে ধাঁধাঁয় ফেলে দিয়ে গেছে। এখন চলছে ঐ সাদা হাতের নকশা,লেখাটি কাকে উদ্দেশ্য করে লেখা তার রহস্যভেদের ইঁদুর দৌড়।

এবার বলুন পরীমনি,অবলা নারী,অতি সাধারণ মানের নায়িকা,নাকি একটি ঘটনার মহানায়ক।

ডা.গুলজার হোসেন উজ্জ্বল লিখেছেন, জেলখেটে বেরিয়ে আসার পর মান ইজ্জত বৃদ্ধি পাওয়ার রেওয়াজটা আবহমান বাংলার হাজার বছরের পুরনো সংষ্কৃতি৷

আখাউড়া হেলথ কমপ্লেক্সে আমার গায়ে হাত তুলে জেল খেটেছিলো যে ছেলেটি, শুনেছি সে এখন ইউনিয়ন যুবলীগের সিনিয়র সহসভাপতি। তাকে কারো চিনতে অসুবিধা হলে লোকে চিনিয়ে দেয় -"ঐ যে সরকারি হাসপাতালের উজ্জ্বল ডাক্তাররে ফিডাইছলো যে, হেই মানিইক্যা"।

পত্তন, চানপুর ও আশেপাশের গ্রামের লোকেদের অধিকাংশই, সরকারি ডাক্তারকে পেটানো এলাকার নায়ককে 'শ্রেনী শত্রু' আঘাতকারী বিপ্লবী হিসেবে গণ্য করে৷

আপনার মতামত দিন:


কলাম এর জনপ্রিয়