ডেস্ক

Published:
2021-05-12 18:43:20 BdST

মিতু হত্যা: যে কারণে নতুন মামলায় এক নম্বর আসামি স্বামী এসপি বাবুল আক্তার



ডেস্ক
__________________

চট্টগ্রামে মাহমুদা আক্তার মিতু হত্যার রহস্য নতুন মোড় নিয়েছে। নতুন মামলা হয়েছে। পুলিশের এলিট রহস্য ভেদী সংস্থা পিবিআই মামলাটি হাতে নিলে রহস্য ভেদী বনজ কুমারের তদন্তে বেরিয়ে নিত্যনতুন তথ্য। বনজ কুমার টিম সতর্কতা র সঙ্গে এগোচ্ছে। পাচ্ছে চাঞ্চল্যকর তথ্য।
নতুন মামলায় এক নম্বর আসামি হবেন মিতুর স্বামী ও পুলিশের সাবেক এসপি বাবুল আক্তার। নতুন মামলার বাদী হতে পারেন মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন।

আজ বুধবার সকালের ঢাকায় পিবিআইয়ের প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে সংস্থার প্রধান ও পুলিশের উপমহাপরিদর্শক বনজ কুমার মজুমদার বলেন, পুরোনা মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন আজই আদালতে দেওয়া হবে। নতুন মামলার বাদী হতে পারেন মিতুর বাবা।

সদা সতর্ক চক্ষু রহস্যভেদী বনজ কুমার বলেন, খ্যাতিমান পুলিশ অফিসার ছিলেন বাবুল আক্তার। অনেক কাজ করেছেন। তাঁর স্ত্রীকে গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। চাঞ্চল্যকর মামলা হিসেবে এটি পরিগণিত। বাবুল আক্তার বাদী হয়েছিলেন। পুরোনো মামলায় ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন দুজন।

বনজ কুমার বলেন, প্রথমে বাবুল আক্তারের সম্পৃক্ততা আসেনি। মহামান্য হাইকোর্ট জানতে চেয়েছেন, কত দিন ঝুলে থাকবে। সে উত্তর খুঁজতে গিয়ে মামলা অন্যদিকে মোড় নেয়।

বনজ কুমার বলেন, মামলার বাদীকে ইচ্ছা করলেই গ্রেপ্তার করা যায় না। বাদীকে গ্রেপ্তার করতে হলে চূড়ান্ত রিপোর্ট দিতে হবে। খুলশী থেকে ফাইনাল রিপোর্ট জমা দিতে আজই কোর্টে যাচ্ছে পুলিশ। এটি দাখিলের পর নতুন মামলা হবে। মোশাররফ হোসেন বাদী হতে পারেন। কথা বলা হয়েছে তাঁর সঙ্গে। তাঁকে পিবিআই চট্টগ্রাম নিয়ে গেছে। নতুন মামলায় এক নম্বর আসামি হবেন বাবুল আক্তার।

পিবিআইয়ের প্রধান বলেন, ঘটনাস্থলে মুসাকে দেখা যায়। মুসা নিয়মিত বাবুল আক্তারের বাসায় যেতেন। তাঁর অনুপস্থিতিতে মুসা বাজারও করে দিতেন। পিবিআই জানার চেষ্টা করেছে, মুসা সোর্স ছিলেন কি না। এটাই পিবিআই প্রমাণের চেষ্টা করেছে। মিতু হত্যাকাণ্ডের কিছুদিন আগে জঙ্গি কার্যক্রমে আহত হন বলে দাবি করেন বাবুল। মৃত্যুর পর যে আচরণ, তা ছিল আপনজন হারানোর মতো। তাই তাঁর কথা সবাই বিশ্বাস করেছিলেন।

বনজ কুমার বলেন, ‘পিবিআই বাবুলকে ঢাকায় ডেকেছিল। গত বৃহস্পতিবার বাবুল বলেন, উনি সোমবার নয়টায় আসবেন। বাবুল পিবিআইকে কিছু প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিতে পারেননি। বিষয়গুলো আইজিপিকে জানানো হয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকেও জানানো হয়।’ এ অবস্থায় ব্যাক করার সুযোগ নেই বলে জানায় পিবিআই।

বনজ কুমার আরও বলেন, ‘নড়াইলে একটা লোককে আমরা পর্যবেক্ষণে নিই। তাঁর নাম গাজী আল মামুন। অপর বন্ধু সাইফুল হককেও পিবিআই ডাকে। দুজনই বাবুলের বন্ধু। তাঁরা সাক্ষী হিসেবে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। এর ভিত্তিতে পুরোনো মামলাটির চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হবে।

 

বাবুল আক্তার তিন লাখ টাকা দিয়েছিলেন আসামিদের

সংবাদ দাতা জানান,
মাহমুদা খানম (মিতু) হত্যায় বাবুল আক্তার তিন লাখ টাকা দিয়েছিলেন আসামিদের। আদালতে দেওয়া দুই সাক্ষীর জবানবন্দি ও পিবিআই এর তদন্তে এই তথ্য উঠে আসে। এ ছাড়া পিবিআই এর দেওয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদন ও নতুন করা মামলায় লেনদেনের উল্লেখ আছে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সন্তোষ কুমার চাকমা মিডিয়াকে বলেন, স্ত্রী হত্যার তিন দিন পর বাবুল আক্তার তাঁর ব্যবসায়িক অংশীদার সাইফুল হককে বলেন তাঁর লাভের অংশ থেকে তাঁকে তিন লাখ টাকা দেওয়া হয়। সাইফুল বিকাশের মাধ্যমে ওই টাকা গাজী আল মামুনকে পাঠান। গাজী আল মামুন ওই টাকা মুসা, ওয়াসিমসহ আসামিদের ভাগ করে দেন। তবে কাকে কত টাকা দেওয়া হয়েছে সে সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।


পিবিআই এর তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, মিতু হত্যার মামলার ভিডিও ফুটেজে বাবুল আক্তারের সোর্স এহতেশামুল হক ভোলা, কামরুল শিকদার ওরফে মূছা ছিলেন। কিন্তু ঘটনার পরপর তিনি দাবি করেছিলেন, জঙ্গিরা জড়িত। তাঁর সোর্সকে তিনি চিনলেও বিষয়টি চেপে যান। ভুলেও তিনি সাইফুল হকের মাধ্যমে হত্যাকাণ্ডে অংশ নেওয়া মুসা ও ওয়াসিমসহ আসামিদের তিন লাখ টাকা দেওয়ার কথা বলেননি।

মঙ্গলবার বাবুলের ব্যবসায়িক অংশীদার সাইফুল ও মামুন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শফিউদ্দীনের আদালতে সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দেন। সেখানে দুজনই বাবুলের নির্দেশে স্ত্রী হত্যায় জড়িতদের টাকা দেওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করেন।

আপনার মতামত দিন:


কলাম এর জনপ্রিয়