Ameen Qudir
Published:2016-12-29 20:02:56 BdST
ম্যানহোলের ঢাকনা চোর যেভাবে হয়ে গেল আস্ত মন্ত্রী
খলিল রহমান
_____________________________
একবার এক চোরকে সামান্য ম্যানহোলের ঢাকনা
চুরির অপরাধে মৃত্যুদন্ড দেয়া হল।
তখন সে
তার শেষ ইচ্ছা হিসেবে দেশের প্রধানমন্ত্রীর সাথে
দেখা করার সুযোগ চাইল।
তাকে প্রধানমন্ত্রীর কাছে নিয়ে আসা হলো ।
সে প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে বলল, 'স্যার,
আপনার সাথে দেখা করতে চাওয়ার একটাই কারণ তা
হলো, আমার কাছে এমন একটা গাছের বীজ আছে যে
গাছটা মনের সব ইচ্ছা পূরন করতে পারে। আমি
আপনার জন্য এই গাছটা রোপণ করে দিয়ে যেতে
চাই।
প্রধানমন্ত্রী তাকে জিজ্ঞেস করল, 'তোমার চারা
লাগাতে কত দিন লাগবে?'
চোর উত্তর দিল, 'এইতো স্যার, সাত দিন।'
সাতদিন পর তাকে আবার মন্ত্রিসভায় হাজির করা
হল।
একজন জিজ্ঞেস করল, 'তোমার চারার কী খবর?'
চোর বলল, 'আসলে জমি তো রেডি কিন্তু বীজটা
পরিপক্ক হতে আরও তিনদিন লাগবে।'
তিনদিন পর তাকে আবার হাজির করা হল।
প্রধানমন্ত্রী জিজ্ঞেস করলেন, 'বীজ রেডি তো
এবার?'
চোর বলল, 'স্যার জমি বীজ সবই রেডি কিন্তু
আমিতো তা রোপণ করতে পারব না।'
প্রধানমন্ত্রী জিজ্ঞেস করলেন, 'কেন?'
চোর বলল, 'এটা এমন একজনের হাতে রোপণ করতে
হবে যে কোনদিন চুরি করেনি। না হলে এটা
কার্যকারিতা হারাবে।'
সাথে সাথে প্রধানমন্ত্রী অর্থমন্ত্রীকে নির্দেশ
দিলেন বীজ রোপন করতে।
অর্থমন্ত্রী কাচুমাচু হয়ে বললেন, 'স্যার, সারা
দেশের অর্থ নিয়ে আমার কাজ। এত কাজের মধ্যে দু
একটা তো এদিক সেদিক হতেই পারে।'
এরপর প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিলেন
পরিবহনমন্ত্রীকে।
পরিবহনমন্ত্রী কাচুমাচু হয়ে বললেন, 'স্যার, কত কত
গাড়ি ঘোড়া আমার প্রতিনিয়ত অনুমোদন দিতে হয়,
এর মাঝে তো দু একটা এদিক সেদিক হতেই পারে।'
এরপর প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে
।
পররাষ্ট্রমন্ত্রীও কাচুমাচু হয়ে বললেন, 'স্যার,
এতো দেশের সাথে যোগাযোগ, এতো দেশে যাওয়া
আসা, বাণিজ্য লেনদেন এর মধ্যে তো আমারও দু
একটা এদিক সেদিক হতেই পারে।'
প্রধানমন্ত্রী এরপর যাকেই বলেন সেই এদিক
সেদিকের দোহাই দিয়ে এড়িয়ে যায়।
হঠাৎ সবাই প্রধানমন্ত্রীকে ধরলেন, 'স্যার, আপনিই
রোপণ করুন না।'
তখন প্রধানমন্ত্রী বললেন, 'তোমাদের তো
দায়িত্ব ছোট ছোট, আমি পুরো দেশ চালাই। আমার
কি একটু আধটু এদিক সেদিক হতে পারে না!'
তখন সবাই চুপ হয়ে গেল। হঠাৎ একজন বলে উঠলেন,
'তাহলে স্যার, এই লোক তো সামান্য একটা
ম্যানহোলের ঢাকনা চোর। একে মৃত্যুদন্ড দেয়া কি
ঠিক? একে ছেড়ে দেয়া হোক।'
আরেকজন বললেন, 'না একে ছেড়ে দেয়া যাবে না।
তাহলে সে বাইরে গিয়ে সব ফাঁস করে দেবে।'
সবাই চিন্তায় পড়ে গেল একে নিয়ে কী করা যায়?
তখন একজন বলল, 'স্যার এক কাজ করুন। একে
আমাদের মতোই একটা পদ দিয়ে আমাদের সাথে
সামিল করে নেন।'
যেই ভাবা সেই কাজ, সেই চোর হয়ে গেল
মন্ত্রীসভার সদস্য।
________________________________
খলিল রহমান
Sub Asstt. Community Medical Officer at ministry of health & family welfare
__________________________
এটা নিতান্তই গল্প। কোন দেশে কোন মন্ত্রীর জীবনীর সঙ্গে মিলে গেলে কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়।
আপনার মতামত দিন: