পানুর জীবন দর্শন

অধ্যাপক ডা. অনির্বাণ বিশ্বাস

_______________________________

পানু মস্তকে হতাশার চুম্বন আর ব্যার্থতার তীব্র আলিঙ্গনে জীবনের প্রতি বিকর্ষন জনিত আকর্ষনে সিদ্ধান্ত নিল আত্মহুতি দিবে।

ভেবে ভেবে রাত ভোর করে, গৌরাঙ্গ সেতুর উপরে দাঁড়িয়ে, চোখ বন্ধ করে সিদ্ধান্ত নিল পৃথিবীকে গুড বাই জানাবে। শেষ বারের মতো নোংরা পৃথিবীর অপার সৌন্দর্য দর্শনের জন্যে আঁখি নেত্র বৃত্তাকারে ঘুরালো। আটকে গেল এক অপার সৌন্দর্যে - দূরে বালুভূমিতে একটি ছেলে উচ্ছসিত ভাবে সূর্যোদয় দেখে লাফাচ্ছে।
পানুর দর্শন হঠাৎ ভিন্ন রুপে ফ্লাশ করে বাক খেল - সাড়ে তিন হাতের একটি ছেলে, পরনে একটা হাফ প্যান্ট পরে সূর্য্যের উদয়ে যদি উচ্ছাসিত হতে পারে তাহলে আমি কেন জীবনে নতুন সূর্য উদয় করাতে পারবো না? আত্মহুতি কোন সমাধান হতে পারে না, এ যে বিরাট একটা ভুল !

নব বোধদয়ের সূর্য উদয় করার জন্য পানু ছেলেটির কাছে ছুটে গেল, বুকের মাঝে জাপটে ধরে উষ্ণ কৃতজ্ঞতা জানালো – তুমি না থাকলে হয়তো আর কোন সকাল হতো না, তুমি না থাকলে সূর্যোদয় এতো মধুর লাগতো না, তুমি না থাকলে জীবনের মর্ম এতো কাছ থেকে দেখতাম না।

ধুর কাকু, কি বলছেন, সূর্য দেখে লাফানোর কি আছে ? হাগ ছিলাম,শালা পিঁপড়ায় পাছায় কামড়িয়েছে, পারলে একটু চুলকে দিন। পিপঁড়ার কামড়ে বেদম বিষ, পারলে একটু চুলকান পিলিজ !! ...ছেলেটি কাব্য করে।

এ যাত্রায় পানুর জীবন অবসান হল না... আবার পাছা চুলকানোর মাধ্যমে জীবন দর্শন বদলানো গেলো না। কারন জীবনের মূল্য কি তা সে জানে না।

আমরা অনেকেই জানি না, খালি চুলকে যাই-একবার পাছায় আর একবার মাথায়, কোন কূল কিনারা নেই, ভাবতে ভালোবাসি তাই ভেবে যাই -

_________________________

অধ্যাপক ডা. অনির্বাণ বিশ্বাস । কবি, চিন্তক । কলকাতার প্রখ্যাত লোকসেবী চিকিৎসক।