Ameen Qudir
Published:2018-03-30 20:36:44 BdST
চট্টগ্রামে বেসরকারি হাসপাতালে নারী চিকিৎসককে যৌন হয়রানির অভিযোগ
চট্টগ্রাম সংবাদদাতা
_________________________
চট্টগ্রামে একটি বেসরকারি হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের বিরুদ্ধে ওই হাসপাতালের এক নারী চিকিৎসককে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার বিকালের এ ঘটনা নিয়ে বন্দর নগরীতে ডাক্তারমহলে তোলপাড় চলছে।
যৌন নিপীড়নের বিষয়টি হাসপাতালের চেয়ারম্যান ও বিএমএ নেতাদের অবহিত করেন নিপীড়নের শিকার চিকিৎসক ও তার পরিবারের সদস্যরা। এ নিয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে হাসপাতালটির বোর্ড সভা হয়। সভায় নিপীড়নের শিকার চিকিৎসকের স্বামী ছাড়াও বিএমএম চট্টগ্রাম জেলা শাখার সভাপতি , সাধারণ সম্পাদকসহ অন্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন। সভায় ‘অভিযুক্ত’ কে অব্যাহতির সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ওই নারী চিকিৎসক ডিউটি রোস্টার নিয়ে কথা বলার জন্য মঙ্গলবার বিকালে হাসপাতালের এমডির কক্ষে যান। অভিযোগ, এ সময় সহানুভূতির ছলে ওই নারী চিকিৎসককে জড়িয়ে ধরেন তিনি। অসভ্যতা করার চেষ্টা করেন। এতে হতভম্ব হয়ে যান ওই নারী চিকিৎসক। রুম থেকে বের হয়েই তিনি বিষয়টি প্রথমে তার স্বামী পরে হাসপাতালের চেয়ারম্যান ও সহকর্মীদের জানান। এ ঘটনায় হাসপাতালের ক্ষুব্ধ সাধারণ চিকিৎসক ও স্বজনরা এমডিকে তার কক্ষে অবরুদ্ধ করে রাখেন। খবর পেয়ে পাঁচলাইশ থানা পুলিশ গিয়ে এমডিকে উদ্ধার করে।
পাঁচলাইশ থানার ওসি বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মিডিয়াকে বলেন, খবর পেয়ে তিনি মঙ্গলবার ফোর্স পাঠিয়েছিলেন। তবে এটি হাসপাতালের কোনো বিষয় ছিল না। অবরুদ্ধ করে রাখার বিষয়েও কিছু জানা যায়নি। এ বিষয়ে কেউ কোনো অভিযোগও দেয়নি থানায়।
এদিকে চিকিৎসকের স্বামী মিডিয়াকে বলেন, তার স্ত্রী ওই হাসপাতালে সাড়ে তিন বছর ধরে চাকরি করছেন। বর্তমানে তিনি তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা। তাই নাইট ডিউটিতে সমস্যা হচ্ছিল। ডিউটি রোস্টার নিয়ে কথা বলার জন্য এমডির কক্ষে যান তার স্ত্রী। এ সময় এমডি তার সঙ্গে অভব্য ও আপত্তিকর আচরণ করেন। এটি আরেকটি মেয়ে দেখে ফেলে। পরে তার স্ত্রী এমডিকে কে একটি এসএমএস দেন এই মর্মে যে, ‘আপনি আমার বাপের সমান। আপনি আমার সঙ্গে এ ধরনের করতে পারলেন? এটি আমি মেনে নিতে পারছি না।’
পরিবার সদস্য জানান, এ সময় এমডি ওই নারী চিকিৎসকের কাছে ক্ষমা চান। বলেন, ‘আমি তো মানুষ। মানুষের তো ভুল হতে পারে।’ এমডি আরও ভালো চাকরি দেয়ার অফার করেন এবং প্রয়োজনে ডাকলে তার কাছে যেতে বলেন। এসব কথার ‘ভয়েস রেকর্ড তাদের কাছে সংরক্ষিত আছে বলে জানান।
পরিবার সদস্য জানান, তিনি বিষয়টি বিএমএ নেতাদের জানান। বিএমএ নেতারা ওই এমডির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেয়ায় তারা আর থানা-পুলিশ বা অন্য কিছু করেননি। বৃহস্পতিবার হাসপাতাল কার্যালয়ে বোর্ড মিটিংয়ে পরিবার সদস্য ও উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে অভিযুক্ত এমডিকে সরিয়ে দেয়া ও তার কাছ থেকে ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ সংক্রান্ত মুচলেকা নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
এ প্রসঙ্গে অভিযুক্ত হাসপাতালের চেয়ারম্যান বৃহস্পতিবার বলেন, ‘নারী চিকিৎসককে যৌন নিপীড়নের অভিযোগের বিষয়ে হাসপাতালের বোর্ড মিটিং হয়েছে। এটা নিয়ে আমরাও খুব প্রেসারে ছিলাম। অভিযুক্ত এমডিকে পদ থেকে অব্যাহতি দেয়া হবে। এ মর্মে একটি মিউচ্যুয়াল আন্ডারস্ট্যান্ডিং হয়েছে।’
আপনার মতামত দিন: