Ameen Qudir

Published:
2018-07-21 17:22:58 BdST

দেশের সকল শিশুদের ডাক্তার রোগীর সঙ্গে সুন্দর মিষ্টি ব্যবহার করেন :চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলছি


ছবি কথা বলে।
এই ছবিটি শিশু ডাক্তার আবিদ হোসেন মোল্লার চেম্বারের। ছবিটি তুলেছেন তার চিকিৎসায় মুগ্ধ এক সন্তানের মা , নাম সামিয়া কালাম। সামিয়া কালাম নিজেও দেশের প্রথিতযশ বেতার সাংবাদিক। নাট্যকার। লেখক। তিনি জানিয়েছেন,
"মোল্লা স্যার আমার শিশুদের এবং অসংখ্য শিশুদের সু চিকিৎসা করেছেন।" সামিয়া কালাম নিজেই ডাক্তার প্রতিদিনকে কথা দিয়েছেন ,এ নিয়ে লিখবেন।



 

ডা. সুলতানা আলগিন
_________________________

চিকিৎসকরা কি সত্যিই রোগীর সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন। সত্যিই কি সময় দেন না ! এক সাধারণ জরিপে দেখা গেছে,বাংলাদেশে শিশু স্বাস্থ্য রোগের বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের মধ্যে সময় দেন না , এমন ডাক্তার বিরল । শিশুদের সঙ্গে সুন্দর মিষ্টি ভাষায় মজা করে কথা বলেন না, তেমন দৈত্য ডাক্তার খুঁজে পাওয়াই বরং কঠিন। শিশুদের ডাক্তার সবাই এঞ্জেল ডাক্তার। শিশুদের চিকিৎসকরা সবাই জনপ্রিয় শিশুদের মাঝে। অদ্ভুত এক যাদুতে তারা শিশুদের ডাক্তারি বা ওষুধ সংক্রান্ত ভয় কাটিয়ে দেন।
বিস্ময়ের ব্যাপার হল, এই বিষয় নিয়ে কখনওই কাউকে কৃতজ্ঞতাসূচক দুটি কথা লিখতে দেখা যায় না।
ডাক্তার বিরোধী নোংরা প্রোপাগান্ডায় যারা সবসময় ব্যস্ত,তাদের কথা আলাদা। তাদের হয়তো মিশন আছে। কিন্তু উপকারভোগীদের মাঝে লেখকরা কখনও কিছু লিখেছেন , দৃষ্টান্ত কম।

বাংলা সাহিত্যে সুনীল সমরেশ শীর্ষেন্দু সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় যেমন চিকিৎসকদের নিয়ে নানা রসরচনা লিখেছেন , তেমনি কৃতজ্ঞতায় নুয়ে পড়া লিখাও লিখেছেন।
এখন যারা লেখালেখি করেন, তাদের বেশীর ভাগই ডাক্তারদের বিরুদ্ধে নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির পরিচয় দেন। কৃতজ্ঞতা , ভালবাসার কলম এখন বিরল।
যার ফলে সমাজে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। সবাই সমগ্র ডাক্তার সমাজের বিরুদ্ধে অপপ্রচারে লিপ্ত। বিরল কিছু খারাপ ব্যবহারকে ফলাও করে বলা হচ্ছে। শিশুদের ডাক্তারদের ব্যাপারে যে কথাটি লিখলাম, পারলে কেউ তা মিথ্যা প্রমাণ করুক। চ্যালেঞ্জ দিলাম।
এর পর আমার নিজের সেক্টর মানসিক রোগ নিয়ে লিখব। সেখানেও সকল ডাক্তার রোগীকে অসম্ভব যত্ন নেন।

ডাক্তারদের মাঝে হাতে গোনা কয়েকজন লেখক ডায়েরী আকারে তাদের ডাক্তারি নিয়ে লিখে থাকেন। এই লেখা আরও বাড়ানো দরকার। কেননা, এই হিংসাকাতর, দূর্নীতি প্রবণ , প্রতিযোগিতাশীল সমাজে কেউ অন্যের ভাল বলতে কৃপণ। অন্যের দোষের মাঝে নিজের লাভ সন্ধানে ব্যস্ত। তাই চলমান অপপ্রচার মোকাবেলায় ডাক্তারদের বেশী বেশী নিজেদের কথা লিখতে হবে।

ডা. সুরেশ তুলসান, ডা. বেলায়েত হোসেন ঢালী কখনও কখনও তাদের চিকিৎসা অভিজ্ঞতা নিয়ে লেখেন। তাতে ফুটে ওঠে সত্যিকারের চিত্র। দেশের বেশির ভাগ শিশু ডাক্তার এভাবেই সেবা করে যাচ্ছেন । আসুন , এরকম একটি ডায়েরি মূলক লেখা পড়ি। ডা. সুরেশ তুলসান লিখেছেন
বুল্টির কাটিং শীর্ষক সরস লেখা। তাতে দেখুন, কিভাবে দেশের শিশু দের ডাক্তাররা অনবদ্য সেবা দিচ্ছেন।

বুল্টির কাটিং/ডা. সুরেশ তুলসান, কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ
---------------------------------
বাচ্চাদের আমি আগাগোড়াই বেশ পছন্দ করি। বাচ্চাদের সাথে খুনসুটি করা আমার চিরকালের অভ্যাস।

তা সে রোগীর সাথে আসা বাচ্চা এটেনিডেন্টই হোক বা বাচ্চা রোগীই হোক।

সাধারনত বাচ্চাদের আমি পোটলা বলে সম্বোধন করি। আর সুন্দর মেয়ে বাচ্চা হলে সুন্দরী পেত্নি। খুব কম বাচ্চাদেরই এতে রাগ করতে দেখেছি।

২.
ছেলে

বাচ্চাদের circumcision (মুসলমানি) দেওয়ার সময় প্রায়শই তাদের সাথে জোক করি।

বুল্টির কাটিং নেবে কার মত স্টাইলে ? শাহরুখ, সালমান, শাকিব বা অন্য কারও মত।

কেউ কেউ চয়েস দেয়। কেউ দেয়না।

কেউ বলে আমারটা আমার মত করেই কাটো।

একদিন এক বাচ্চা চয়েস দিল ঋত্তিকের মত কতে কাটো।

ওটিতে উপস্থিত বাচ্চাটার অভিভাবক আর আমার ওটি স্টাফরা তো হেঁসে কুটি-কুটি।

সব্বাই প্রায় একসাথেই বলে উঠলো তোমারটা তো ঋত্তিকের মত আছেই।

আরেক দিন এক বাচ্চা আমাদের সবাইকেই চমকে দিল।

" হুঁ আমার সাথে ফাজলামো করা হচ্ছে ? তাই না ?

শাহরুখ, সালমান, শাকিবদের কারটা কেমন তুমি দেখতে গেছো ? " আমকে পাগল পাইছো ?

আমারটা আমার মত করেই কাটবা আর ভালো করে কাটবা।

ব্যাথা দিলে চিল্লাবো কিন্তু।
_________________________


ডা. সুলতানা আলগিন। সহযোগী অধ্যাপক,মনোরোগ বিদ্যা বিভাগ, কনসালটেন্ট, ওসিডি ক্লিনিক,বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা।

আপনার মতামত দিন:


মানুষের জন্য এর জনপ্রিয়