Ameen Qudir
Published:2017-04-06 14:26:01 BdST
অদম্য সংগ্রাম: ডাক্তারি পাশ করলেন কমল
নিজস্ব সংবাদদাতা
টিনের বেড়ার বাড়িতে বিদ্যুৎ ছিল না। ভরসা শুধু কুপির আলো। তবে হার মানেননি। সেই আলোতেই পড়াশোনা চালিয়ে মাধ্যমিক পাশ করেছিলেন কমল।
প্রশ্ন ছিল, এরপরের পড়া তিনি চালাতে পারবেন তো? হাল ছাড়েননি কমল। হস্টেলে থেকে জেদকে সঙ্গী করে দাঁতে দাঁত চেপে পড়াশোনা চালিয়েছেন তিনি। সেই একাগ্রতারই ফল পেলেন কোচবিহারের জামালদহের কমল বর্মন। সপ্তাহ দুয়েক আগে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাশ করে সাড়া ফেলে দিয়েছেন তিনি।
তিন ভাইবোনের মধ্যে বড় কমল। ছোট থেকেই পড়াশোনার প্রতি মনোযোগী কমল। বাবা যতীন্দ্রনাথ বর্মনের সম্বল ছিল তিন বিঘে জমি। সেই জমিতে চাষ হওয়া ফসল দিয়েই চলত সংসার। দিনভর কাজের পরে চাল, আনাজ জুটলে হাঁড়ি চড়ত উনুনে। তবুও কখনও হতাশ হননি কমল। সংসারের হাল পাল্টে দেওয়ার স্বপ্নই রসদ জুগিয়েছে তাঁকে। মাধ্যমিক পাশ করে মাথাভাঙার একটি স্কুলে উচ্চ মাধ্যমিকে ভর্তি হন কমল। সেখান থেকে মেডিক্যাল কলেজ। তারপর আর ফিরে তাকাতে হয়নি তাঁকে।
মালদহ মেডিক্যাল কলেজেই এখন ইন্টার্নশিপে রয়েছেন কমল। তিনি বলেন, “পড়াশোনার জন্য অনেকেই পাশে দাঁড়িয়েছে। সরকারও ঋণ দিয়েছে। আর বাবা-মায়ের কষ্টের কথা তো বলে শেষ করা যাবে না।’’ কমলের পাশে সবসময় থেকেছে জামালদহের পঞ্চপাণ্ডব বলে একটি সংস্থা। ওই সংস্থার সম্পাদক মৃন্ময় ঘোষ বলেন, “কমল এখন চিকিৎসক, এটা ভাবতেই ভাল লাগছে। ইন্টার্নশিপ হলেই সে সমস্ত কাগজপত্র হাতে পাবে।”
কমলের সাফল্যে খুশি তাঁর বাবা যতীন্দ্রনাথবাবুও। তাঁর একমাত্র ইচ্ছে, কমল বড় চিকিৎসক হয়ে মানুষের সেবা করুক। কমলেরও ইচ্ছে সরকারি চিকিৎসা ব্যবস্থার সঙ্গেই যুক্ত থাকা। তিনি বলেন, ‘‘নিজের জীবন দিয়ে বুঝেছি, দারিদ্র্যতার সঙ্গে লড়াই কতটা কঠিন। সরকারি হাসপাতালে থেকে সেবা করার যে সুযোগ পাব তা অন্য কোথাও পাব না।’’
________________________
আনন্দবাজার পত্রিকার সৌজন্যে।
আপনার মতামত দিন: