Ameen Qudir

Published:
2018-11-24 22:22:19 BdST

স্বপ্নের হিরোশিমা দেখে এলাম


 

 

ডা. মোহাম্মদ জোবায়ের মিয়া
________________________

হোটেল রেডিসন থেকে রাত ৮ টায় পৌছালাম সেন্ট্রাল নারিতা টাউনে। ছোট ভাই রাব্বির পছন্দের জাপানিজ রেস্টুরেন্ট এ। জাপানিজ ভাষায় ওডা'র দিলো আঠালো স্টিম রাইস, চিকেন ফ্রাই, সি ফুড কারি,নুডুলস, মিক্সড ফ্রুট ড্রিংকস। ৪ জনের প্রায় ৮০০০ ইয়েন লাগলো। বিল কিন্ত বাংলাদেশের মতো পরেই নিলো ওঁরা।
পেট ভরে খেলাম। বিল টা কোনমতেই আমাদের দিতে দিলোনা ছোট ভাই। এর পর প্লান করলাম পরেরদিন হিরোসিমায় কিভাবে যাওয়া যায়। নারিতা স্টেশনে JR pass ( Japan railway pass) কিনার সিদ্ধান্ত হলো। JR pass শুধু মাত্র বিদেশী টোরিস্টদের জন্য ৭, ১৪,৩০ দিনের আনলিমিটেড JR company এর পরিচালিত ট্রেনে সমগ্র জাপান ভ্রমণ করা যায়। এটা ভ্রমনের আগেও নিজ দেশ থেকে অন লাইনেও কেনা যায় তবে ঠিকানা অনুযায়ী ডেলিভারী দিতে ৭ দিনের বেশী সময় লাগে। FEDEX Company সাপ্লাই দেয়। ঢাকায় তাড়াহুড়া করে আর কেনা হয়নি। জাপান থেকে ৭ দিনের জন্য JR Pass কিনতে লাগলো ৩৩০০০ ইয়েন। এটা ভ্রমনের ১০ দিন আগে ঢাকায় অন লাইনে কিনলে ২৯০০০ ইয়েন এ পাওয়া যেতো। সাঈদ ইনাম ভাই চড়া দামে এটি কিনতে প্রথমে ইতস্তত করছিলো। কিন্ত হিরোশিমায় যাওয়ার আমার আগ্রহ দেখে এবং যখন শুনলো, টোকিও থেকে হিরোসিমা যেতে ওয়ান ওয়ে বুলেট ট্রেনে ১৮০০০ ইয়েনে সিংগেল টিকিট কাটতে হয় তখন সেও রাজী হয়ে গেলো। সেই রাতে আমরা হোটেলে ফিরে আসলাম। রাব্বী তাদের বাসায় টোকিও চলে গেলো। পরের দিন ১৭/১০/১৮ সকালে রেডিসন নারিতায় একটা জম্পেস নাস্তা করলাম। জাপানের বিখ্যাত শুশি (মেরিনেটেড কাঁচা সামুদ্রিক মাছ) খেলাম। খাওয়ার আগে মনে হলো কেমন জানি লাগে! কিন্ত সস মাখিয়ে আল্লাহর নামে চোখ বন্ধ করে মুখে দিয়ে চাবাতে লাগলাম। বাহ! কি নরম যেন মুখে দিতেই গলে গেল! সাইদ ঈনাম ভাইকে জিজ্ঞেস করলাম, কেমন লাগলো। সে হেঁসে বললো মজাইতো। হোটেলে একটা বিষয় খেয়াল করলাম, ওয়েটার নাস্তার শুরুতেই চা না কফি খাবো? এই কথা জিজ্ঞেস করে। আমরা ভাবলাম নাস্তা শেষে দিবে। বললাম চা। ওমা, দেখি সংগে সংগে গরম এক কেতলি চা নিয়ে হাজির। আমি ঈনাম ভাইয়ের দিকে তাঁকিয়ে মিটি মিটি হাসলাম। সে ইশারায় কেটলি রাখতে বললো। আমরা তারপর বুফে থেকে নাম দেখে দেখে পছন্দের খাবার প্লেটে নিয়ে খাওয়া শুরু করলাম। সেখানে ডিম প্রসেসিং এর জন্য একজন মাঝ বয়সী পাচক সব সময় রেডি থাকেন। সবাই লাইন ধরে ডিম ভাজিতে কি কি দিতে হবে ডিসপ্লেতে ছবি দেখে বলে দেয় সেই অনুযায়ী সে ভাঁজে বা পোজ করে দেয়। ডিম প্রসেস করার সময় পাঁচক বিশেষ কায়দায় কড়াই ঝাঁকি দেয় এবং জিজ্ঞেস করে হাড' ওর সফট? ডিম পাওয়ার পর সবাই থ্যাংকু বলে। পাচকের তখন কি যে হাঁসি। আনন্দে আরিগাতু আরিগাতু বলে। বিনয় কাহাকে বলে জাপানে না এলে বুঝতাম না! খাওয়া দাওয়ার পর সাটল বাসে নারিতা রেল স্টেশনে আসলাম। সেখান থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে J R Pass দেখিয়ে টোকিওর টিকিট নিলাম। এক ঘন্টায় আসলাম টোকিও স্টেশনে। এবার প্রথম ভাষার সমস্যা টের পেলাম! তখন সকাল ১০ টা। আমাদের হিরোসিমায় যাওয়ার নেশা পেয়ে গেছে। ভাগ্যিস ৮৫০ ইয়েন দিয়ে ১ জিবি ৭ দিন মেয়াদের সিম কিনেছিলাম। জাপানের সবাই দেখি গুগুল ম্যাপ দেখে চলাচল করে। আমরাও চেস্টা করতে লাগলাম। কিন্ত রেইল স্টেশন এতো বিশাল এবং এঁদের রেইল কোম্পানি অনেকগুলি তাই কোন লাইনে কোন ট্রেন দাঁড়াবে এটার জন্য আমরা একবার রেইল ওয়ে পুলিশ কে জায়গার ম্যাপ দেখাই এবং ইংরেজিতে বলি প্লিজ শো আস দা ওয়ে? তাঁরা ইংরেজি কম চচা' করে কিন্ত আন্তরিকতার কোন অভাব নাই কিছু ইশারা, কিছু জাপানি এক্সেন্টে ইংরেজি বলে ওরা দেখিয়ে দেয় সঠিক রাস্তা। আমরা শিউর হওয়ার জন্য আবার আরেকজন জাপানিজ যাত্রীকে জিজ্ঞেস করি। দুইজন সব সময় এক সাথে থাকি যেন পথ হারিয়ে না যাই। সতর্কতা অবলম্বনের পরেও একবার ট্রেন বদলের সময় তাড়াহুড়ো করে আমি ভুল বগিতে উঠি। ডাঃ সাঈদ ইনাম লোকজন কে জিজ্ঞেস করে সঠিক কামড়ায় উঠে। আমি আধা ঘন্টা পর তার দেখা পাই। এই সময় দুইজন দুইজনকে আধা ঘন্টার জন্য হারিয়ে ফেলি।JR Pass এ সরাসরি টোকিও থেকে বুলেট ট্রেইন এ হিরোশিমা যাওয়া যায়না। বিমানের ট্রাঞ্জিট এর মতো ১০/১৫ মিনিটের বিরতিতে অন্য স্টেশনে নেমে ট্রেন বদল করতে হয়। প্রথম দিন বেশ বেগ পেতে হয়েছে। একটা ট্রেন যার নাম হিকারিএক্সপ্রেস ( সিনকাসেন) এটা দিয়ে সিন ওসাকায় স্টেশনে নামতে হবে। তারপর আর এক টা বুলেট ট্রেনে সিন ওসাকা থেকে হিরোশিমায় যেতে হবে। মজার ব্যাপার হলো টিকিটে ট্রেনের নাম, সিট নাম্বার তো আছেই, সেই সাথে প্লাটফর্ম এর কোন অংশে দাড়াবেন সেই লেটার যেমন বগি নাম্বার (A,B,C) ইংরেজি এবং জাপানিস লেটার প্লাটফর্ম এর ফ্লোরে এবং ডিসপ্লেতে লেখা থাকে। ট্রেনের সেই A,B,C বগি ঠিক প্লাটফর্ম এর সেই যায়গাতেই দাঁড়াবে। জাপানের সব ট্রেনেই এসি আছে। তিন ধরনের ট্রেনেই উঠেছি। লোকাল হলো বেশী স্টেশন ধরে।কিন্ত কোন স্টেশনেই এক মিনিট ও লেট করবেনা। গতি প্রায় ঘন্টায় ১০০ কিলো। এক্সপ্রেস ট্রেন কম স্টেশনে ধরে গতি প্রায় ঘন্টায় ২০০ কিলো। বুলেট ট্রেনের গতি ঘন্টায় প্রায় ৩০০ কিলো। ক্রসিং বলে কোন শব্দ নেই। শহরে ট্রেন লাইন সারকোলার আকারে আছে। কোন ট্রেনের সাথে আরেকটির সংঘষে'র সুযোগ নাই। দূর পাল্লায় ডাবল লাইন সব যায়গায়। ওঁদের কাছে শুনলাম জাপানিজ টেকনোলজি সেই ১০০ বছর আগেই ট্রেনের এই পদ্ধতি অবলম্বন করে। চুরি/ ফাঁকি এই জিনিসগুলি ওরা শিখেনি। মানুষের উপকার করতে পারলেই যেন ওঁরা শান্তি পায়। তবে কাজের সময় ওরা যন্ত্রের মতো হয়ে যায়। সারাজীবন হয়তো বিয়ে করার ও সময় পায়না কেউ কেউ। এবার আসি ট্রেনের ভিতরের পরিবেশ সম্পর্কে, লোকাল ট্রেনে অফিস সময়ে খুব ভীড় হয় তবে উঠা নামায় সমস্যা হয়না। সবাই দুই দিকে লাইন ধরে দাঁড়িয়ে থাকে। মাঝখান দিয়ে যাত্রী নামারপর উঠে। প্লাটফর্ম এবং ট্রেনের কামড়া প্রায় সমান্তরাল ভাবে তৈরী তাই উঠতে নামতে শিশু, বৃদ্ধ কারো সমস্যা নাই। কেউ আগে উঠার জন্য হুড়োহুড়ি করেনা। আমরা দুই একবার ভুল করে বাংগালী স্বভাব বশে লাইন না দেখেই উঠেছিলাম। তাঁরা বিদেশী ভেবে যায়গা ফাঁকা করে দিয়েছে। পরে লজ্জায় আমরা দুইজন আর লাইন ছাড়া উঠিনি। ট্রেনের মধ্যে একটি এটিকেট হলো মোবাইলে কেউ কথা বলবেনা। ডিসপ্লেতেও সেটা লেখা থাকে। তবে অনেক যুবক/ যুবতী কানে হেড ফোন লাগিয়ে গান শুনে। জরুরি প্রয়োজনে ম্যাসেজ আদান প্রদান করে। আর একটি এটিকেট হলো নারী, শিশু, বৃদ্ধদের সিট ছেড়ে দেয়। বাকীরা ঝোলানো হ্যান্ডেল ধরে দাঁড়িয়ে থাকে। বুলেট ট্রেনে অবশ্য দাঁড়ানোর প্রয়োজন তেমন হয়না। সিট দুই ধরনের রিজাভেশন এবং নন রিজার্ভ। রিজার্ভ থাকলে কারো বসার প্রশ্নই নাই। মজার ব্যাপার হলো নন রিজার্ভ এ যে আগে আসবে সে বসবে। ভিতরে টয়লেট ফাইভ স্টার হোটেলের মতো। ট্রেনের পরিচারিকা দের বলে ক্রু, যা খেতে চান ওরডার দিলেই সিটের কাছে নিয়ে আসবে। দাম গুনবেন শুধু তিনগুন বাংলাদেশী টাকার হিসাবে। যেমন এক কাপ কফি ৩০০ টাকা। বিমানের মতই লাগবে ভিতরের পরিবেশ। সিটের সামনে খাবার রাখার হাতল আছে।

 

টোকিও থেকে বুলেট ট্রেনে


৪ ঘন্টায় ট্রেনে ১২০০ কিলোমিটার পাড়ি
স্বপ্নের জাপান ভ্রমণ
___________

টোকিও থেকে বুলেট ট্রেনে হিকারী এক্সপ্রেসে সিন ওসাকা এবং সাকুরা এক্সপ্রেসে হিরোসিমা পৌছাতে লাগলো ৪ ঘন্টা, দূরত্ব প্রায় ১২০০ কিলো। ১৭/১০/১৮ তারিখ সন্ধ্যা ৭ টা বেঁজে গেছে। হিরোসিমা স্টেশনে নেমে দেখলাম আন্ডার গ্রাউন্ড ট্রেন লাইন। উপরে শপিং মল। রেস্তোরাঁ, ফাস্টফুড শপ ইত্যাদি। খাবারের গন্ধে খুধা বেড়ে গেল। ডাঃ সাঈদ ইনাম ভাইকে বললাম চলুন আগে কিছু খেয়ে নিই। দুইজনে দুইটা ফিস স্যান্ডউইচ এবং দুই গ্লাস ফ্রেস ম্যাংগো জুস নিলাম। সেখানেও লাইন। টাকা তাঁরা হাতে নেয়না। একটা ট্রে বাড়িয়ে দেয় সেখানে ইয়েন দিতে হয়। চেঞ্জও ট্রেতে দেয়। যে জিনিসটা নিবেন সেটি দেখিয়ে দিলে দোকানিরা কম্পিউটার স্ক্রিনে ওর দাম আপনাকে দেখাবে, তারপর পেমেন্ট নিবে। তারপর রসিদ দিবে। যেকোন খাবার কিনলেই সাথে একটা গারবেজ থলে দিবে। খাওয়ার পর নিজেই উচ্ছিষ্ট উপাদান নিদি'স্ট গারবেজ বিনে ছবি দেখে ফেলবেন। যেমন প্লাস্টিক বোতন একটাতে, কাঁচের জিনিস অন্য আরেকটায়, অন্যান্য বস্তু ভিন্ন বিনে ফেলতে হবে। পরিবেশ সংরক্ষণের জন্য ওরা এটি করে এবং রিসাইকেল করা সুবিধা হয়। খেয়ে দেয়ে স্বপ্নের হিরোসিমা সিটিতে পা রাখলাম। স্টেশন এলাকাটা মোটামুটি ব্যস্ত ছিল। লোকজন এবং গাড়িঘোড়াতেও পরিপূর্ণ।সেখান থেকে আমাদের হোটেলে যেতে হবে স্ট্রিট কারে। জায়গাটার নাম টোকাইচিমাচি। ভাড়া ট্যাক্সির থেকে অনেক কম ( প্রতিজনে ৩০০ ইয়েন) গুগুলে সময় দেখে নিলাম আধাঁ ঘন্টার মতো লাগবে। স্ট্রিট কার হলো বাসের মতো কিন্ত ট্রেন লাইনে সমান্তরালে অন্য গাড়ির পাশাপাশি চলে। স্ট্রিট কারে ওঠে হিরোশিমা নগরী দেখতে লাগলাম। কেমন বিষন্নতায় ছায়া! দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের সময় যেখানে এটম বোমা ফেলা হয়েছিল। সন্ধ্যার পরই এখানে লোকজনের আনাগোনা কমে যায়। শুধু কিছু খাবারের দোকান এবং পানশালা খোলা দেখলাম। শীতের তীব্রতা টের পেলাম। দুই জনেই ব্লেজার গায়ে দিলাম। তারপর বুকিং দেওয়া হোটেল Kasuga Roykan ( জাপানিজ টাইপের বাড়ি) খুজতে থাকলাম। শিউর হওয়ার জন্য মোবাইলে হোটেলের এড্রেস এবং ম্যাপ একজন লোককে দেখালাম। সে অত্যন্ত আন্তরিকতার সাথে আমাদের সাথে চলতে লাগলো। তাঁকে চিন্তিত দেখে আরেকজন তরুনী ঠিকানা টা দেখে ইশারায় তাঁর সাথে যেতে বললো। আমরা তার পোশাক পরিচ্ছদে এবং চালচলনে ভদ্রতার ছাঁপ দেখতে পেলাম। প্রথমে ইতস্তত করছিলাম তার সাথে যাবো কিনা? রাব্বির কথা মনে পড়লো। সে বলেছিল ওঁরা অত্যন্ত ভদ্র এবং সৎ। রাত দিন ২৪ ঘন্টা নিরাপদ। সেই তরুনী প্রায় ৭ মিনিট আমাদের সাথে হেটে এসে হোটেলের গেইটে এসে থামলো। আরো অবাক হলাম, সে যাচ্ছিল উল্টো দিকে। আমাদের মাঁথা ঝাঁকিয়ে বিদায় চাইলো। আমাদের শেখা একটি মাত্র জাপানিজ ভাষা সেই আরিগাতো বলাতে তার কি যে খুশী। লজ্জায় মুখ লাল করা সেই তরুনীর কথা এখনো স্পস্ট মনে আছে, সোনালী চুলের হালকা পাতলা গড়নের দুধে আলতা গায়ের রঙের সুন্দরী জাপানি মেয়ে। বয়স বোঝা দায়! ৩০-৪০ বছর হবে। পরনে ছিল জিন্স প্যান্ট, লম্বা হাতা ওয়ালা মখমলের কারডিগান, পায়ে ফিতা ওয়ালা কেডস। দুই একটা কথা হয়েছে। আমরা মাথা দেখিয়ে আমাদের পরিচয় বলেছি বাংলাদেশী সাইকিয়াট্রিস্ট, উনি বলেছেন চাকুরী জীবি রাত ৮ টা বাজে তখন, বাসায় ফিরছেন। হিরোশিমা এর প্রথম রাত যে হোটেলে ছিলাম। ওটাকে হোটেল না বলে একটি ডুপ্লেক্স বাড়ি বলা যায়। ঢুকেই ছোট রিসেপশন। আমরা হোটেল গেইট ভেজানো দেখলাম। নক করে ভিতরে উকি দিয়েই দেখি একজন ভদ্রলোক টেবিলের ওইপাশ থেকে মাথা নিচু করে বের হয়ে আসলেন। আমাদের জিজ্ঞেস করলেন রিজাভে'শন আছে কিনা?আমরা কাগজ দেখালাম। কম্পিউটারে চেক করে বললো ৮৫০০ ইয়েন ফর টু পারসন ইন ওয়ান রুম। আমরা রাজী হয়ে ইয়েন দিয়ে দিলাম। সেখানেই জুতা রেখে উপরে উঠতে হলো। প্রায় সব জাপানিজ স্টাইল হোটেলেই দেখলাম জুতা খুলে ওদের স্পেশাল চপ্পল পায়ে দিয়ে ভিতরে ঢুকতে হয়। ওরা অত্যন্ত পরিপাটি এবং পরিস্কারভাবে থাকতে পছন্দ করে। রেডিসন হোটেল ব্যতিক্রম ( অন্যান্য দেশের ফোর/ ফাইভ স্টারের মতো)। হোটেলের নীচের তলায় গোসলের ব্যবস্থা। কেউ একা একা গোসল করতে চাইলেও গরম, ঠান্ডা পানির ব্যবস্থা আছে আবার একসাথেও গোসলের ব্যবস্থা আছে( পুরুষ এবং মহিলা আলাদা)। দোতলায় শোবার ঘর এবং রুমের পাশে টয়লেট। সিড়িটা চমতকার। সম্পূর্ণ কাঠের তৈরী। দুই পাশে স্টিলের রেলিং দেওয়া। বেশ বড় একটি রুম। এসি আছে।রুমে ঢুকে দেখি মেঝেতে শীতল পাটি বিছানো।তার উপর নরম গদির বিছানা। উপরে শ্বেত শুভ্র চাদর। পরিস্কার কম্বল, বালিশ পরিপাটি করে সাজানো। দুই বিছানা লম্বা লম্বি বিছানো। মাঝে একটা কাঠের নীচু কিন্ত বড় টেবিল। বুঝলাম এখানে বসেই চা পান করতে হবে। টেবিলে সাজানো চায়ের কেতলি, কাপ, টি ব্যাগ, চিনির ছোট ছোট প্যাকেট, টিস্যু বক্স, পানির বোতল। রুমের মাঝের ওয়ালে ফ্লোর বরাবর এল ই ডি টি ভি, সেল্ফ, একটি হ্যাংগারও আছে। এবার লাগেজ রেখে গেলাম খাবার হোটেল খুজতে। মেইন রোড হোটেল থেকে ১০ মিনিটের পথ। সেখানের একটা আলো ঝলমলে দোকানে ঢুকলাম। মেন্যু ট্যাবে দেখিয়ে দিতে হয়। রাইস, চিকেন, কোকাকোলা ওরডার দিলাম। প্রথমে দিলো মিয়নিস মেশানো লেটুস পাতা ফ্রি।কাঠি দিয়ে কস্ট করে খেলাম। পরে আসলো মেইন ম্যানু। চামুচ চেয়ে নিয়ে খেতে লাগলাম।
....চলবে

___________________________

ডা. মোহাম্মদ জোবায়ের মিয়া
সহকারী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান
মনোরোগ বিভাগ
শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ, গাজীপুর।

আপনার মতামত দিন:


ভ্রমণ এর জনপ্রিয়