Ameen Qudir

Published:
2019-08-22 18:39:35 BdST

স্মৃতিতে কতো কথাই না মনে পড়ে:অধ্যাপক ডা. হেদায়েতুল ইসলামের অমর স্মৃতিলেখা



ডেস্ক
_________________________

বাংলাদেশের মনোরোগ চিকিৎসার জীবন্ত কিংবদন্তি মনোরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. হেদায়েতুল ইসলাম । তিনি এক অনন্য স্মৃতিকথা লিখেছেন। তিনি লিখেছেন,

"১৯৫৩ সালে আমরা যখন ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি হই তখন ১২০ জন ছেলে-মেয়ের মাঝে ৮০ জন মেধা ভিত্তিতে নির্বাচিত হই। ১০ জন বেলুচিস্তান থেকে ভর্তি হয় (ওখানে মেডিকেল কলেজ না থাকার কারণে ) ও ২০ জন নমিনেশনে ভর্তি হয়। আমরা ঢাকা কলেজ থেকেই ৩৪ জন ভর্তি হই। এর বাইরে মেধার কারনে তখনকার দিনে নামি-দামি সরকারি কলেজগুলো থেকে মেধাবী ছেলে-মেয়েরা ভর্তি হয়।

আমার নিজের বেলায় ভর্তি পরীক্ষার সময় সাত দিন জ্বরে ভুগছিলাম। তবুও ১৮ সদস্যের নির্বাচনী বোর্ডের সমীক্ষায় খুবই ভালো করেছিলাম। একজন সদস্য বলে ফেললেন তোমাকে এতো দুর্বল দেখাচ্ছে কেন? জবাবে আমি জানালাম গত সাত দিন আমি দুধ, বার্লি ইত্যাদি তরল খাবারের উপরে নির্ভরশীল ছিলাম। ওই সদস্য বললেন স্বাভাবিক খাবার না খেয়েই তুমি যখন এতো ভালো করছ স্বাভাবিক খাবার খেলে না জানি কতো ভালো করতে। ওই নির্বাচনী পরিক্ষায় আমি ১৬তম স্থান অধিকার করি। যদিও আমাদের ব্যাচে সমস্ত দেশের বোর্ডস্টান্ড করা বেশ কয়েকজন ছিল। পরবর্তী সময়ে একটি পর্যালোচনা করে দেখেছিলাম আমাদের ব্যাচের ৫৬জন ছেলে-মেয়েই পোস্ট-গ্রাজুয়েশন করতে সক্ষম হয়েছিল। আমি অবশ্য খুবই ভাগ্যবান ছিলাম ১৯৬২ সালে সরকারী বৃত্তি পেয়ে মানসিক রোগ বিভাগে উচ্চতর শিক্ষার সুযোগ পেয়েছিলাম ও কৃতিত্বের সাথে বিশেষজ্ঞ হিসেবে পরিক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিলাম।

১৯৬৪ সালে সরকারী এক সিদ্ধান্ত অনুসারে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও মেডিকেল কলেজের টিচারের স্বল্পতা থাকার কারনে এক ব্যাচেই ৬৪ জনকেই সরকারী বৃত্তি দিয়ে ইংল্যান্ডে পাঠানো হয়েছিলো। এর মাঝে আমাদের ব্যাচের ছেলে-মেয়েদের সংখ্যা বেশি ছিল এবং বেশ কয়েকজন সিনিয়র টিচারও ছিলেন।

এক সময় আমরা পর্যালোচনা করে দেখেছিলাম আমাদের ব্যাচের ছয়জনই দেশের বিভিন্ন মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ও দুই জন স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এর মহা-ব্যবস্থাপক হয়েছিলেন।

এই ছবির মাঝে ৫ জনই আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন। এদের মাঝে আমরা দুজন আল্লাহ্‌র অনুগ্রহে বেচে আছি। একজন কানাডা ও আমি নিজ দেশে। যারা আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন তাঁদের জন্য আল্লাহ্‌র দরবারে দোয়া করছি। দেশে-বিদেশে যারা বেচে আছেন তাঁরা যেন আগামীদিনগুলো সুস্থ, সুন্দর জীবন কাটাতে পারে এই দোয়া করছি।"

আপনার মতামত দিন:


প্রিয় মুখ এর জনপ্রিয়