Ameen Qudir

Published:
2020-01-12 20:35:59 BdST

ব্ল্যাকবক্স ওয়ার্নিং:এমন অনেক ড্রাগ আছে যা অনেকে ঝালমুড়ির মতো খাই


 

ডা. সাঈদ এনাম

______________________

প্রতিটি ঔষধের কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে এবং থাকবেই। কিন্তু তারপরও রোগমুক্তির জন্যে ঔষধ খেতে হবে। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে এ ভয়ে ঔষধ খাওয়া যাবেনা, রোগে ভুগতে ভুগতে ইহলোকের মায়া ত্যাগ করে পরলোকে পৌছে যাবেন এমন কথা চিকিৎসা বিদ্যায় বলা হয়নি।

কিছু কিছু ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার খুবই মারাত্মক আকারে দেখা দিতে পারে। এমন কি ঘটতে পারে জীবননাশ তারপরও সে ঔষধ সেবন করতে হয়। এসব মারাত্মক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া যুক্ত ঔষধ ইউএস ফুড এন্ড ড্রাগ এডমিনিস্ট্রেশন ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানিগুলো কে ঔষধের গায়ের লেভেলে কালো দাগ টেনে দিয়ে আলাদা বক্স করে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া গুলো লিখতে আদেশ দেয়। এই ভাবে আলাদা করে কালো দাগ দিয়ে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া গুলো লিখে দেওয়াকে বলে ব্ল্যাক বক্স ওয়ার্নিং বা বক্স ওয়ার্নিং।

ব্ল্যাক বক্স ওয়ার্নিং করে দেয়া মানে এই নয় যে চিকিৎসক এই ঔষধ তার রোগিকে লিখতে পারবেন না। ঔষধ লিখতে পারবেন না বা লিখা যাবেনা এমন ঔষধ কে বলে কন্ট্রা-ইন্ডিকেশন। কন্ট্রা-ইন্ডিকেটেড এক জিনিস আর ব্ল্যাকবক্স ওয়ার্নিং আরেক জিনিস।

ব্ল্যাকবক্স ওয়ার্নিং এমন অনেক ড্রাগ আছে যা আমরা অনেকে প্রতিদিন ঝালমুড়ির মতো খাই। এর মধ্যে একটি হলো সিপ্রোফ্লক্সাসিন। বাজারে ধুমসে বিক্রি হয় এটি। পল্লী চিকিৎসকরা ভাজা চীনা বাদামের মতো যেকোনো ইনফেকশনে মুঠি মুঠি সিপ্রোফ্লক্সাসিন বিক্রি করে।

আমরা আরো অনেক ড্রাগ খাই বা লিখি যা ব্ল্যাকবক্স ওয়ার্নিং যুক্ত। এমনকি ব্ল্যাকবক্স ওয়ার্নিং ড্রাগ ইউরোপ আমেরিকায়ও প্রেস্ক্রিপশন করা হয় রোগীর আশু রোগ মুক্তিতে। ব্ল্যাকবক্স ওয়ার্নিং করা মানে এই নয় যে ঔষধ টি কালো বাক্সের মধ্যে তালা দিয়ে গর্ত খুড়ে মাটির নীচে কালো সিন্দুকের ভিতর রেখে দিতে হবে।

প্রতিটি ঔষধের গায়েই লেখা থাকে ওয়ার্নি ও ব্ল্যাকবক্স ওয়ার্নিং। আপনার চিকিৎসক পেশেন্ট রিস্ক বেনিফিট রেসিও বুঝেশুনেই সেটা প্রেস্ক্রিপশন করে থাকেন, এবং সেটা অবশ্যই আপনার বা আপনার রোগীর কল্যাণে। এনিয়ে অযথা ভুল বুঝাবুঝির অবকাশ নেই।
____________

বোনাস লেখা :

একটি কাল্পনিক কথোপকথনঃ

মধ্যস্থতাকারীঃ আপনারা যে যুদ্ধ করবেন আপনাদের ২১ টি ঘাটি তো ওদের দূর পাল্লার ক্ষেপনাস্ত্রের মধ্যে, কেবল সুইচ টিপবে।

প্রথম পক্ষঃ অসুবিধা নাই। আমরা ওদের ৫২ টি স্থাপনা সহ পুরো দেশ জ্বালিয়ে দেবো।

মধ্যস্থতাকারীঃ এতে তেমন লাভ হবেনা। ইরাকের মতই হবে।

প্রথম পক্ষঃ হোক। ওরা আমাদের কয়েক দশক থেকে ডিস্টার্ব করছে। আমাদের সকল মিশন ব্যার্থ হচ্ছে।

মধ্যস্থতাকারীঃ এতেও যে মিশন সফল হবে তা নয়। কারন ওদের অনেক মিত্র আছে আশেপাশে যারাও চায়না আপনাদের আধিপত্য। এতে খুব লাভ হবেনা উভয়ের রক্তপাত ছাড়া।

প্রথম পক্ষঃ তাহলে কি করবো। ফেরার পথ নেই।

মধ্যস্থতাকারীঃ আছে। একটা পথ আছে।

প্রথম পক্ষঃ কি সেটা?

মধ্যস্থতাকারীঃ সমঝোতা।

প্রথম পক্ষঃ কিভাবে?

মধ্যস্থতাকারীঃ আমি করে দেবো, তবে উভয়কে ছাড় দিতে হবে। আপাতত একটা ছায়া যুদ্ধ করেন দুজনে। পরে আমরা প্রস্তাব নিয়ে আসবো। ওকে? প্রস্তাব কিন্তু দুজকেই মানতে হবে।।

ডা. সাঈদ এনাম
সহকারী অধ্যাপক (সাইকিয়াট্রি)
সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ

আপনার মতামত দিন:


মানুষের জন্য এর জনপ্রিয়