Ameen Qudir
Published:2019-10-25 01:09:36 BdST
মাত্র ৩০ সেকেন্ডে রক্তক্ষরণ বন্ধ করবে ‘স্টপ ব্লিড’, চমকপ্রদ আবিষ্কার যুবকের
ডেস্ক
___________________
যুদ্ধক্ষেত্র জখম সেনা হোক কিংবা কোনও দুর্ঘটনা, মিনিট দুয়েকের বেশি রক্তক্ষরণ হলে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। এক্ষেত্রে রক্ত বন্ধ করতে যেসব পদ্ধতি বা পথ্য রয়েছে তাতে কমপক্ষে ২ মিনিট সময় লেগে যায় রক্তক্ষরণ বন্ধ করতে। তবে বাংলার এক ছেলের আবিষ্কার বদলে দিল সেই চিরাচরিত ধারণা। এবার রক্ত বন্ধ হবে মাত্র ৩০ সেকেন্ডে।
সাবির হোসেন, বর্ধমান জেলার প্রত্যন্ত গ্রামের বাসিন্দা সাবির। তাঁর আবিষ্কৃত অভিনব এক পাউডার মাত্র ৩০ সেকেন্ডে বন্ধ করে দিতে পারে রক্তক্ষরণ। যে পাউডারের নাম রাখা হয়েছে ‘স্টপ ব্লিড’। বাজারে যেসব সলিউশন বা অন্যান্য পাউডার মেলে তার তুলনায় আশি শতাংশ কম খরচে তৈরি করা যায় ‘স্টপ ব্লিড’ নামক এই পাউডার। হাসপাতাল কিংবা যুদ্ধক্ষেত্রে যা ব্যবহার করে অনেকের মৃত্যু পর্যন্ত আটকানো সম্ভব। পূর্ব বর্ধমানের খণ্ডঘোষের বাদুলিয়া গ্রামের সাবির হোসেনের এই উদ্ভাবনীকে স্বীকৃতি দিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (ডিআরডিও)। সম্প্রতি এই কেন্দ্রীয় সংস্থার তরফে দিল্লিতে ডিআরডিও ভবনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং সাবির হোসেনের হাতে তা তুলে দেন এই মানপত্র। সেখানে দেশের মুখ্য নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল, ডিআরডিও চেয়ারম্যান সতীশ রেড্ডি, তিন সেনবাহিনীর প্রধানরাও ছিলেন।
বাদুলিয়া গ্রামে আদি বাড়ি হলেও তাঁর বাবা উদ্যোগপতি মোবারক হোসেন, মা ইসমাতারা-সহ পরিবারের সকলে বর্তমানে বর্ধমানের রসিকপুরে বসবাস করেন। সাবির হোসেন প্রথমে খণ্ডঘোষের প্রাথমিক স্কুলে পরে বর্ধমানের একটি স্কুল থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করেন। তারপর কলকাতার একটি কলেজ থেকে বি. টেক করে এনআইটি রাউরকেল্লা থেকে বায়োমিডক্যালে এম. টেক করেন। এরপর নিজেই একটি সংস্থা খোলেন। আর সাবিরের সেই সংস্থা থেকেই তৈরি হয় এই ‘স্টপ ব্লিড’। সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় এক ভিডিও বার্তায় সাবির হোসেন জানান, মানবদেহে ২ মিনিট রক্তপাতে অনেকটাই রক্ত বেরিয়ে গিয়ে প্রাণহানি ঘটাতে পারে। তাঁদের এই স্টপ ব্লিড পাউডার মাত্র ৩০ সেকেন্ডে রক্তক্ষরণ পুরোপুরি বন্ধ করতে পারে। হাসপাতাল তথা যুদ্ধক্ষেত্রে এই পাউডার যে কেউ সহজে ব্যবহার করে রক্তক্ষরণ বন্ধ করতে পারেন। আর এই উদ্ভাবনীর জন্যই সংস্থার সিইও তথা প্রতিষ্ঠাতা সাবির হোসেনকে সম্মানিত করেছে ডিআরডিও।
বুধবার রাতে মোবারক হোসেন বলেন, “স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী পুরস্কৃত করেছেন। খুবই আনন্দের খবর আমাদের কাছে। খুবই গর্বের। ছেলের এই উদ্ভাবনী মানবকল্যাণে লাগলেই খুশি আমরা।” তিনি জানান, ডিআরডিওর পুরস্কার পাওয়ার পর কয়েকদিন আগেই বর্ধমানের এসেছিলেন সাবির। গত সোমবারই ফের কর্মস্থল ভূবনেশ্বরে ফিরে গিয়েছেন তিনি। বছর পঁচিশের সাবির জানান, তাঁর বাবা একবার দুর্ঘটনায় জখম হয়েছিলেন। রক্ত বন্ধ হচ্ছিল না। তখনই তিনি উপলব্ধী করেন দ্রুত রক্তপাত বন্ধ করতে না পারলে কীভাবে মানুষের জীবন বিপন্ন হয়ে ওঠে। তাই নিজের সংস্থা খুলে সেদিকেই গুরুত্ব দেন বেশি। সাফল্যও পেয়েছেন। বর্তমানে তিনি আগুনে পুড়ে গেলে কীভাবে দ্রুত ক্ষতস্থান সাড়ানো যায় তা নিয়ে গবেষণা করছেন। বিশেষ ধরনের একটি স্প্রে তৈরির প্রচেষ্টায় রয়েছে তাঁর সংস্থা।
সৌরভ মাজি, বর্ধমান: এর লেখা।
সংবাদ প্রতিদিন ও ডাক্তার প্রতিদিন যৌথ দু বাংলা প্রকাশ।
আপনার মতামত দিন: