Ameen Qudir

Published:
2019-10-13 05:45:06 BdST

এক কৃতী বেসামাল ডাক্তারের বেপরোয়া বুনো প্রেম, যৌনতার উদ্‌যাপন




কবির সিং / অর্জুন রেড্ডি চরিত্রে বেসামাল শহীদ কপুর/ দেবাকোন্ডা

ডেস্ক
______________________

কবির সিং। এক কৃতী সার্জনের বেপরোয়া প্রেম, যৌনতার উদ্‌যাপন । মেডিকেল লাইফ, দুরন্ত সহিংসতা। সবই উঠে এসেছে জীবন কাহিনিতে। আর সব কিছুকে ছাপিয়ে গেছে দুই চিকিৎসকের একাট্টা প্রেমের তীব্রতা। সেলুলয়েডে এরকম ছবি এর আগে হয় নি। বিশেষ করে উপমহাদেশে। অতি আধুনিক নির্মাণ। তদুপরি সত্য সাহসী গল্প। এক কথায় ছবিটি দেখতে হচ্ছেই। ছবিটি পাওয়া যায় ইউটিউবে। উপমহাদেশের কোটি দর্শক এর মধ্যেই সিনেমা হল স্ক্রিনের বাইরেই অনলাইনে ছবিটি দেখেছেন। মেডিকেল লাইফ, তীক্ষ্ণ মেধাবী ডাক্তারের প্রেমজীবন নিয়ে এমন ছবি আর হয় নি। আরও লিখেছেন
অর্ঘ্য বন্দ্যোপাধ্যায়।

ডা. প্রীতির চরিত্রে অনন্য অভিনয় করেন কিয়ারা আডবাণী



অহোরাত্র মদ খাই, অহোরাত্র পদ্য লিখি।’ ‘কবীর সিং’ সিনেমায় এ পদ্য লেখার চেষ্টা প্রেম, যৌনতার উদ্‌যাপন আর এক ‘সমস্যা’কে কেন্দ্র করে। কেন্দ্রীয় চরিত্র কবীরকে (শাহিদ কপূর) সামনে রেখেই পরিচালক সন্দীপ রেড্ডি ভঙ্গা ছবির জাল বুনেছেন।

গল্পটি চেনা। কারণ সিনেমাটি একই পরিচালকের তেলুগু ছবি ‘অর্জুন রেড্ডি’র পুনর্নির্মাণ। কবীর ডাক্তারির অত্যন্ত কৃতী ছাত্র, কৃতী সার্জেন। কিন্তু অ্যাঙ্গার ম্যানেজমেন্টে সে শূন্য। প্রেমিকা তথা কলেজের জুনিয়র প্রীতির (কিয়ারা আডবাণী) আসা, যাওয়ার মাঝখানে কবীরের জীবনে নেশা, মারামারি, হিংস্র আচরণ আছে, আছে যৌনতা। এক ধরনের প্রভুত্বকামী ভালবাসায় কবীর বাঁধতে চায় প্রীতিকে। শেষমেশ প্রীতির অন্যত্র বিয়ে, মদ-ড্রাগে নিজেকে কবীরের ডুবিয়ে রাখা এবং শেষে অন্তঃসত্ত্বা প্রীতি-কবীরের বিয়ে— এ-ই সিনেমার গপ্পো।

চরিত্র বিশ্লেষণে টেস্টোস্টেরন-তাড়িত মানুষ কবীরের সমস্যা রয়েছে। সেই সমস্যায় তাই প্রেমও হয়তো কখনও কখনও ঢাকা পড়ে যায়। পাঁচ বছরের জন্য ডাক্তারি থেকে দূরে থাকার নির্দেশ, গ্লাস ভাঙার জন্য পরিচারিকার দিকে তেড়ে যাওয়া, ছুরি দেখিয়ে পোশাক খোলানোর চেষ্টা, যখন ইচ্ছে যৌন-তাড়নায় ‘ঝাঁপিয়ে পড়া’— এ সবই সেই সমস্যার কথা বলে অত্যন্ত সোজাসাপ্টা। প্রীতি চরিত্রটির বিশেষ কিছু করার নেই। প্রীতির সঙ্গে কবীরের সম্পর্কটিই যে একরৈখিক। প্রীতির উপস্থিতি কবীর-চরিত্রটিকে স্রেফ সাজানোর জন্য। কবীরের কথাতেই, ‘উও মেরি বান্দি হ্যায়’। বন্ধু শিভা (‌সোহম মজুমদার) কবীরকে ঠিক পথে আনার চেষ্টা করলেও ভক্তি-ভাবের কারণে বিশেষ কিছু সে করতে পারে না।

অভিনয়ে শাহিদ ও সোহম ছাড়া আর কাউকেই সে ভাবে সুযোগ দেননি পরিচালক। তাই কখনও কখনও তা বিরক্তিকর। পরিচালকও হয়তো এই বিরক্তিটাই চেয়েছিলেন। কিন্তু সেই বিরক্তির জন্য জরুরি ছিল আঁধার-মানুষ কবীরের গোটা ছবিটা। তা আঁকতে শুধু নেশা, যৌনতা, মানুষের জীবনে প্রেম আসে এক বার— এই আপ্ত বাক্যকে প্রমাণ করার তাগিদটিই যথেষ্ট নয়। আর তাই প্রীতির নিজস্ব কণ্ঠস্বর শুনিয়ে বা ‘জন্মের অভ্যর্থনা এখানে গম্ভীর’ দেখিয়ে সিনেমাটি যেখানে পরিণত হতে পারত, সেখানেই আটকে গিয়েছেন পরিচালক।

তবে শাহিদ অভিনয়ে, প্রতিক্রিয়ায়, ভঙ্গিমায় প্রত্যাশিত ভাবেই সাবলীল। কিন্তু ‘অর্জুন রেড্ডি’র বিজয় দেভরাকোন্ডার থেকে কিছুমাত্র তিনি আলাদা নন। আলাদা করে নজর কাড়েন সোহম। বাদবাকি পুরুষ বা নারী চরিত্রগুলি আদৌ উল্লেখ করার মতো নয়। কবীর চরিত্রে যেটুকু আঁধার, তা ফুটে উঠেছে হিন্দি-পঞ্জাবি মেশানো সিনেমার সংলাপে। দৃশ্য থেকে দৃশ্যান্তরে যেতে অভিজ্ঞ সিনেমাটোগ্রাফার সান্থানা কৃষ্ণণ রবিচন্দ্রন সাবলীল। কিন্তু আলো ও ক্যামেরার ব্যবহারে দৃশ্যগুলি নেওয়ার ক্ষেত্রে নতুন নির্মাণ নেই। অমিল চমক দেওয়ার চেষ্টাতেও। তবে গানগুলি সঙ্গতিপূর্ণ। সঙ্গতিপূর্ণ কিছু শায়েরির ব্যবহারও।

 

আপনার মতামত দিন:


বিনোদন এর জনপ্রিয়