Dr. Aminul Islam

Published:
2020-10-17 16:12:56 BdST

" নোবেল পুরষ্কারের তাজা খবর "




ডাঃ সুকুমার সুর রায়

___________________________________


হঠাৎ টেলিভিশনের পর্দায় চোখ আটকে গেল।!
টিভি'র পর্দার নিচ দিয়ে ব্রেকিং নিউজের স্ক্রল হচ্ছে!!
ব্রেকিং নিউজ,!ব্রেকিং নিউজ!!
"'বাংলাদেশের তরুন বিজ্ঞানী ডাঃ বিভাস মানী এবছর রসায়ন বিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন!!"
এই যুগান্তকারী অর্জনের মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশকে বিশ্ব সভায় তুলে ধরার জন্য
মহামান্য প্রেসিডেন্ট, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, জাতীয় সংসদের মাননীয় স্পিকার ও বিরোধী দলীয় নেতা ডাঃ বিভাস মানীকে প্রানঢালা অভিনন্দন জানিয়েছেন।
ডাঃ বিভাস মানীই প্রথম বাংলাদেশি- বাংগালি যিনি এই বিরল সন্মানের অধিকারী হলেন।
এর আগে যদিও একাধিক বাংগালি নোবেল পুরস্কার অর্জন করেছেন, তাঁরা তা অর্জন করেছেন ; সাহিত্য,
অর্থনীতি ও শান্তির মত বিষয়ে।
বিজ্ঞান, বিশেষ করে রসায়ন বিজ্ঞানের মত জটিল বিষয়ে এবারই প্রথম বারের মত একজন বাংলাদেশি এই বিরল সন্মান অর্জন করলেন!। তিনি এই পুরস্কার অর্জন করেছেন একক ভাবে।
সুইডেনের স্টকহোমে 'নোবেল কমিটির ' এক সংক্ষিপ্ত দাপ্তরিক ঘোষনায় বলা হয় ; " রসায়নে মৌলিক গবেষণা, বিশেষ করে পরীক্ষাগারে ' কৃত্তিম প্রান সত্বা ' তৈরীর যুগান্তকারী আবিষ্কার, যা মানব জাতির এযাবতকালের বিজ্ঞান গবেষণায় এক
মাইল ফলক হিসাবে স্বীকৃত হওয়ায় বাংলাদেশী বিজ্ঞানী, ডাঃ বিভাস মানীকে এ বছর রসায়ন বিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কারের জন্য মনোনীত করা হয়েছে। তাঁর আবিষ্কার মৌলিক জীব বিজ্ঞান গবেষনার ক্ষেত্রে মানব জাতির এক বিরাট উল্লম্ফন ঘটাবে বলে নোবেল কমিটি মনে করে। "
ইতিমধ্যে ডাঃ বিভাস মানীর এই আবিষ্কার সারা বিশ্বের বিজ্ঞানী মহলে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।
তার এই গবেষনা ও আবিষ্কারের বিষয়বস্তু নিয়ে ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক চ্যানেল বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
বিবিসি বাংলা বিভাগের সাথে এক একান্ত সাক্ষ্যাৎকারে ডাঃ বিভাস মানী তার গবেষনার বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন।
তিনি বলেন ; " আমি মুলত একজন চিকিৎসা বিজ্ঞানের ছাত্র,।
গ্রীক দার্শনিক এনাক্সিমান্ডার ( Anaximander)
খ্রিস্টপুর্ব ৬১০য়ে স্বতঃ প্রজনন তত্বের ধারনা দিয়েছিলেন। বহু বছর এটা বিজ্ঞানীমহলে আলোচনা / সমালোচনার কেন্দ্র বিন্দু ছিল।
পরবর্তিতে অষ্টাদশ শতাব্দীতে বিখ্যাত ফরাসি অনুজীব বিজ্ঞানী ও রসায়নবিদ লুই পাস্তুর তার জীবানু তত্বের মাধ্যমে স্বতঃ প্রজনন তত্বের কবর রচনা করেন, যদিও সমসাময়িক কালে ইংরেজ প্রকৃতি বিজ্ঞানী চার্লস ডারউইন তার বিখ্যাত বিবর্তনবাদ তত্বের মাধ্যমে স্বতঃ প্রজনন তত্বকে আংশিকভাবে সমর্থন করেছিলেন। কিন্তু তার জীবদ্দশায় তিনি তা প্রমান করে যেতে পারেননি।
এই সব জগদ্বিখ্যাত বিজ্ঞানীদের চিন্তা আমার গবেষণায় ব্যাপক প্রভাব ফেলে।
যদিও আমি চিকিৎসা বিজ্ঞানে স্নাতক, স্নাতকোত্তর পর্যায়ে প্রান রসায়ন ( Molecular biochemestry)
কে গবেষণার বিষয়বস্তু হিসাবে বেছে নেই।
পরীক্ষাগারে নির্দিষ্ট কিছু জৈব রাসায়নিক বস্তুকে নির্দিষ্ট চাপ ও তাপে বিশেষ ধরনের পাত্রে সংরক্ষণ করে তার মধ্যে দিয়ে নির্দিষ্ট মাত্রার বিদ্যুৎ প্রবাহ পরিচালিত করা হয়, তার পর পাত্রটিকে ৪৮ ঘন্টা বায়ু নিরোধক অবস্থায় রেখে দেওয়া হয়, তার পর পাত্রের রাসায়নিক বস্তুগুলোকে পুংখানুপুংখ পরীক্ষা করে দেখা হয়।
এই পরীক্ষাকালেই ইলেক্ট্রন মাইক্রোস্কোপের নীচে গভীর বিস্ময়ের সাথে লক্ষ্য করা যায় কিছু ভাইরাস সদৃশ জীবন্ত বস্তু কনা! ।
প্রথমে ধারনা করা হয়েছিল যে, হয়তোবা বাহ্যিক জীবানুর সংক্রমণ ঘটেছিল।
পরবর্তিতে পুনঃ পুনঃ পরীক্ষািটি সম্পন্ন করা হয় এবং অভিন্ন ফলাফল পাওয়া যায়।
এরপর ভাইরাস সদৃশ বস্তুগুলির রাসায়নিক গঠন বিশ্লেষণ করা হয় এবং আশ্চর্যজনক ভাবে সেগুলোতে জীবনের আদি বস্তুকনা আরএনএ'র( RNA) গঠন নিশ্চিত করা হয়!
এই জীবন্ত বস্তু কনা গুলো থেকে কোষ বিভাজন প্রক্রিয়ায় নতুন বস্তু কনার উদ্ভব হবে কিনা তা এখনো গবেষনার পর্যায়ে রয়েছে।
বিষয়টি এর আগেই বিখ্যাত বিজ্ঞান সাময়িকী ' নেচার পত্রিকায় ' প্রকাশিত হয়েছে এবং তখন থেকেই বিজ্ঞানী মহলে ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়েছে।
অবশেষে নোবেল কমিটির স্বীকৃতি মিললো।
এই আবিষ্কার এর মাধ্যমে গ্রীক পণ্ডিত এনাক্সিমান্দারের স্বতঃপ্রজনন তত্ব জীবন ফিরে পেল এবং মহান ডারউইনের বিবর্তবাদ তত্ব নতুন করে সামনে চলে এলো।
নিঃসন্দেহে মানবজাতির জন্য এটা এক বিরাট উল্লম্ফন। "
দেশের প্রায় সব কয়েকটি টেলিভিশন চ্যানেল রুটিন প্রোগ্রাম স্থগিত করে এই খবরটিকেই শিরোনাম করে বার বার প্রচার করে যাচ্ছে!
বিভিন্ন দেশীয় টিভি চ্যানেলে ' টকশো ' শুরু হয়ে গেছে। আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম বিবিসি, সিএনএন, আলজাজিরা, এনডিটিভি, খবরটি তাদের শিরোনামে রেখেছে।
( বিঃদ্রঃ - উপরের কাহিনীটি নির্ভেজাল কাল্পনিক হলেও একেবারে অসম্ভব নয়।)
ডাঃ সুকুমার সুর রায়।।

আপনার মতামত দিন:


কলাম এর জনপ্রিয়