Ameen Qudir
Published:2020-03-30 01:51:48 BdST
এসি ল্যান্ড সায়েমাকে ধর্ষণের হুমকি দেওয়া ব্যাংক কর্মকর্তা গ্রেপ্তার : ধন্যবাদ পুলিশ
ডা. রাজিয়া সুলতানা
______________
ধর্ষকামী জাফর আহমেদকে গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশকে অজস্র ধন্যবাদ। সে একজন নারীকে প্রকাশ্যে ধর্ষণের হুমকি দিয়েছিল।
এসি ল্যান্ড সায়েমা হাসান বৃদ্ধ মজুরদের অন্যায় শাস্তি দিয়ে , সে ছবি ফেসবুকে ও সরকারি অনলাইনে দিয়ে অবশ্যই অপরাধ করেছেন। তার জন্য তার সচিব পিতা মাহবুব মিলন জাতির কাছে ক্ষমাও চেয়েছেন। জানিয়েছেন তিনি লজ্জিত , দু:খিত। তিনি কন্যাকে সঠিক শিক্ষা দিতে পারেন নি বলেও দু:খ প্রকাশ করেন। কিন্তু এই নরপাষন্ড ব্যাংক কর্মকর্তা জাফর আহমেদ কি করল। সবরকম ভব্যতার মাথা খেয়ে সে ধর্ষণের হুমকি দিল সায়েমাকে। এই লোকের অপরাধ সায়েমার কৃতকর্মের চেয়ে হাজারগুন ভয়াবহ। সায়েমার যেমন বিভাগীয় শাস্তি নিশ্চিত করবে সরকার। তেমনি এই ব্যাংক কর্মকর্তা ধর্ষকামীর কঠিন শাস্তি চাই।
কওমী মাদরাসাগুলোয় উপূর্যপরি ধর্ষণ বলাৎকারের খবর পড়ি। তাই জাতির এই পাষন্ডগুলো কোথা থেকে এই ধর্ষণ বলাৎকারের শিক্ষা পেল। পুলিশকে অবশ্যই সাধুবাদ জানাই এই নরপাষন্ডকে গেপ্তারের জন্য।
যশোরের মনিরামপুরের সাবেক সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাইয়েমা হাসানকে ধর্ষণের হুমকি দিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দেওয়া ব্যাংক কর্মকর্তা জাফর আহমেদকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি) এ খবর জানিয়েছে।
ডিবি উত্তরের অতিরিক্ত উপকমিশনার মো. শাহজাহান মিডিয়াকে জানান, অভিযুক্ত জাফর আহমেদকে যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে রোববার দুপুরের দিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এরপরই তাঁকে যশোরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেখানকার আদালতে তাঁকে উপস্থাপন করা হবে।
সায়েমার পিতার ক্ষমাপ্রার্থনা পত্র
_______________________
আমি অনুতপ্ত, লজ্জিত এবং ক্ষমাপ্রার্থী। আমাদের মেয়েটির ভুলের দায় আমার, আমাদের। আমরা হয়ত পারিনি, আমাদের সন্তানদের অন্তরের গভীরে ঢুকে মানবিক মূল্যবোধ জাগাতে। আমরা পারিনি যথাযথ আদব কায়দা শেখাতে। আমরা পারিনি বঙ্গবন্ধুর সেই স্বপ্নের সেবক হতে।
আমরা পারিনি আমাদের সন্তানদের নৈতিক অবক্ষয় আর মূল্যবধের পতন ঠেকাতে। আমরা পারিনি তাঁদেরে সত্যবাদী হয়ে গড়ে তুলতে।
এ দায় একান্ত আমার।
অনেকদিন আগের কথা। আমি তখন ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার অফিসের সহকারি কমিশনার। পিএস টু কমিশনার স্যারের (বাঘের চেয়েও বেশি ভয় পেতাম) রুমের সামনে দিয়ে যেতেই স্যার একটা ফাইল (তাঁর কাজের) ধরিয়ে দিয়ে বললেন, কমিশনার স্যারের কাছে নিয়ে যেতে। এবার বাঘেরও বড় বাঘের সামনে গিয়ে হাজির হলাম।
আমার একটা রোগ ছিল। উপ সচিব থেকে সচিব স্যারদের সামনে গেলেই হাত পা কাঁপা শুরু হত। কোমর ছোট হয়ে প্যান্টের বেল্ট লুজ হয়ে প্যান্ট পড়ে পড়ে ভাব।
কমিশনার স্যার ফাইল দেখে হুঙ্কার দিয়ে আমাকে বকাবকি শুরু করলেন প্রায় পাঁচ মিনিট। রাগে তাঁর হাত পা কাঁপছে। সামনে দুই অতিরিক্ত কমিশনার স্যার বসা। ফাইল ছুড়ে দিলেন আমার দিকে। ফাইল নিয়ে বের হয়ে আসলাম। বলার সাহস পেলাম না যে, স্যার ফাইলটা আমার নয়।
মাথা নিচু আর মুখ অন্ধকার করে পিএস স্যারের হাতে ফাইল দিয়ে বের হয়ে আসলাম। বলার সাহস পেলাম না যে, স্যার আপনার ফাইল, অথচ বকা শুনতে হল আমাকে।
এর কয়েক ঘন্টা পর কমিশনার স্যার পিএস স্যার সহ সব অফিসারকে ডেকে বসালেন। সামনে সেই ফাইল। আবার আমার দিকে চেয়ে শুরু করলেন সেই বকাবকি। মাথা নিচু করে আবার সব শুনলাম। একবারও পিএস স্যারের দিকে তাকাবার সাহস পেলাম না।
সবাইকে বিদায় দিয়ে আমাকে থাকতে বললেন। এবার যা বললেন, আমি হা হয়ে তাকিয়ে থাকলাম স্যারের দিকে। "আমি জানি ফাইলটা তোমার নয়, যার ফাইল, সে ঠিকই জানে ভুলোটা তাঁর এবং বকাবকিও তাঁর উদ্দেশ্যে। তুমি মন খারাপ করবে না।
জীবনে সিনিয়রদের নিয়ে বা তাঁদের আচার আচরণ ভুলভ্রান্তি কারো সামনে তো দূরের কথা, নিজে নিজে বিড়বিড় করে তা বলিনি।
এখন সিনিয়রদের কাজ নিয়ে ক্লোজ গ্রুপ খোলা হয়। চলে গালাগালি , চামড়া পর্যন্ত ছেলা হয় সেখানে। অংশ গ্রহণকারীদের কারো কারো চাকুরির বয়স দুই এক বছর। তাল মেলায় আরও কিছু সিনিয়র।
দুঃখিত, সামনে আরও খারাপ সময় আসছে। ভয়াবহ দুঃসময়। এখন বলব না। বলব অবসরের পরে। যদি আল্লাহ বাঁচিয়ে রাখেন।
এ দায় আমার। একান্ত আমার। প্লিজ আমার মেয়েটিকে আর লজ্জিত এবং অপমানিত করবেন না আপনারা।
আপনার মতামত দিন: