Ameen Qudir

Published:
2020-03-20 00:53:51 BdST

করোনায় প্রতিরোধ এবং সামাজিক নিরাপদ দূরত্বই উত্তম



ডা. অসিত মজুমদার
____________________

করোনা ভাইরাস (কোভিড ১৯) নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই। এতক্ষণে আমরা সবাই জেনে গেছি ভাইরাসের ভয়াবহতা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাব অনুযায়ী বিশ্বব্যাপী আক্রান্ত হয়েছে দুই লক্ষ। মারা গেছে আট হাজার। আরো কত মারা যাবে কে জানে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা করোনা ভাইরাসকে বিশ্বব্যাপী মহামারী হিসেবে ঘোষনা করেছে।
প্রসঙ্গত, গত ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর কথা জানায় জাতীয় রোগ তত্ত্ব ও গবেষণা ইন্সটিটিউট (আইইডিসিআর)। বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত এই রোগে আক্রান্ত হয়েছে ১৪ জন। তাদের মধ্যে মঙ্গলবার একজনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানায় আইইডিসিআর।

আমাদের মনে রাখতে হবে চিকিৎসা বা রোগ নির্ণয় নিয়ে আমরা যত বেশি চিন্তা করি তারচেয়ে বেশী ভাবা প্রয়োজন রোগ না হওয়া নিয়ে। এজন্যই আক্রমণ ছড়ানো ঠেকানোটাই খুব বেশী জরুরী হয়ে পড়েছে। করোনার বিস্তার ঠেকাতে আমাদের যা যা মানা উচিতঃ
১) সামাজিক নিরাপদ দূরত্বঃ এর জন্য কোন খরচ নেই। শুধু পাঁচ ফুট দূরত্ব মেনে আমরা চলাফেরা করব। বাইরে গেলে মাস্ক পরব। যেখানেই যাই এই দূরত্ব সবাই মেনে চলব। কিন্তু পথে ঘাটে চলাফেরায় কাউকে মনে হয় না কেউ নিয়মটা জানে। প্লিজ আমরা সবাই সতর্ক হই।
২) হাত ধোয়াঃ বাইরে থেকে এলে বা কোন কিছু স্পর্শ করলে সাবান পানি দিয়ে বা যে কোন ডিজইনফেক্টেন্ট দিয়ে নিয়ম মেনে বিশ সেকেন্ড হাত ধুইবো। সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল এর মতে চোখ, নাক, মুখ ধরার আগে অবশ্যই হাত ধুইবো। স্পর্শ করা হয় এমন জায়গা প্রতিদিন জীবাণুমুক্ত করতে হবে। যেমন চেয়ার, টেবিল, বই, মোবাইল, দরজা-জানালার ছিটকিনি, কম্পিউটার কি বোর্ড, লাইট সূঁইচ বোর্ড ইত্যাদি। ধরার পর অবশ্যই হাত ধুইবো।

৩) পারত পক্ষে ঘর থেকে বের হব না। বের হলে অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করব। জনসমাগম এলাকা এড়িয়ে যাব। সপ্তাহে একদিন বাজার করি। এলাকা ভিত্তিক লক ডাউন হই।
৪) খাবার যথেষ্ট সিদ্ধ করে খাব। কিছুক্ষণ পরপর গরম পানি খাব।
৫)পুষ্টিকর খাবার খাব। নিয়মিত ব্যায়াম করব। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এমন খাবার বেশী করে খাব।
৬) হাঁচি কাশি দেয়ার সময় কনুই, রুমাল বা কিছু দিয়ে মুখ ঢেকে রাখি।
৭) কোয়ারেন্টাইন বাধ্য হবার বিষয় নয়, নিজেকে এবং দেশকে রক্ষা করার আকুতি মাত্র। নিজেকে সন্দেহ হলে বা করোনাপ্রবণ এলাকা হতে এলে স্বেচ্ছায় কোয়ারাইন্টেইন এ যাব। এটা কোন অসম্মান বা ইগোর বিষয় নয়। নিজেকে, নিজের আত্মীয়স্বজন এবং সর্বোপরি পুরোজাতিকে করোনামুক্ত রাখার সবচেয়ে সহজ উপায়। নিজেকে, আপনজনদেরকে এবং পুরোজাতিকে ভালবাসার এটা খুবই সাধারণ মনে হলেও বড় বেশী প্রয়োজন।
৮) এই সময় সম্ভব হলে মোবাইল, ফেসবুক, হোয়াটসএপ বা টেলিফোনে চিকিৎসা নেব। পিপিই নাই এমন কোন চিকিৎসকের কাছে যাওয়াটাও কম ঝুঁকিপূর্ণ নয়। সুতরাং চিকিৎসকের পিপিই চেয়ে আপনিও বলুন। চিকিৎসকের নিরাপত্তাই আপনার নিরাপত্তা।

এদিকে নভেল পুরস্কারজয়ী আমেরিকান - বৃটিশ- ইসরায়েলী বায়োফিজিসিস্ট, স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মাইকেল ল্যাভিট একটি আশার বাণী শুনিয়েছেন। গত তেরই মার্চ এক সাক্ষাৎকালে এই বিজ্ঞানী একটি গবেষণা রিপোর্টের বরাত দিয়ে বলেন মানবতার জয় হবে, করোনা (কোভিড১৯) ধীরে ধীরে নিয়ন্ত্রণে যাবেই। আমরাও আশাবাদী।
সবাই সর্বোচ্চ সতর্ক হই। সৃষ্টিকর্তা আমাদের সহায় হোন।

আপনার মতামত দিন:


কলাম এর জনপ্রিয়