Ameen Qudir

Published:
2018-07-25 01:32:51 BdST

সাংবাদিকরা দল বেঁধে পেটালেন আরেক সাংবাদিককে


 

ডেস্ক
_________________________

একদল সাংবাদিকের হাতে আরেক সাংবাদিক মারপিটের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রহৃত সাংবাদিক এই বিপন্ন বাস্তবতার শিকার হয়েও তিনি দমেন নি। তার ফেসবুক একাউন্ট হ্যাক করে তার নামে ঘোষনা দেয়া হয়েছিল, " আজ থেকে সাংবাদিকতা থেকে বিদায় নিলাম।"
তিনি জানিয়েছেন, এসবই মিথ্যা প্রচার। বলেছেন ,এই লেখায় কেউ বিভ্রান্ত হবেন না। বিদায় নেয়ার স্টাটাস তার নয়।
প্রহৃত সাংবাদিকের নাম জীবন আহমেদ। অভিযোগ এসেছে ,পেশাগত ইর্ষার শিকার হয়ে তিনি একদল সহ পেশাদারের হাতেই মার খেলেন।

সিনিয়র সাংবাদিক পীর হাবিবুর রহমান তার এক লেখায় বলেছেন, এই ঘটনায় সাংবাদিকতার পেশাদারীত্ব কলঙ্কিত হল।

জীবন আহমেদ কাজ করেন পূর্ব পশ্চিম নামে আলোচিত নিউজ পোর্টালে । পূর্ব পশ্চিমের প্রতিষ্ঠা সম্পাদক ও আলোচিত কলামিস্ট পীর হাবীবুর রহমান এই প্রহারের প্রতিবাদে একটি প্রতিবাদী গদ্য লিখেছেন। সেটি এখানে লেখকের সৌজন্যে হুবহু কোনরকম সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশ করা হল।
পীর হাবিব __________________

জীবনের ক্যমেরা নির্মল প্রেমের জয়গান গেয়েছিল
তবু কেনো এই হামলা?

পূর্বপশ্চিম নিউজ পোর্টালের ফটো সাংবাদিক জীবন আহমেদ একজন সৃজনশীল পরিশ্রমী কর্মী। এই নিউজ পোর্টালের দায়িত্ব পালনকালে তাকে অনেক স্নেহ দিয়েছি। তার অনুসন্ধিৎস্যু মন দিয়ে চমৎকার ছবি তুলে নিয়ে আসে।

তারুণ্যের শক্তিই হলো প্রেম। যুগে যুগে কিশোর-কিশোরী, তরুন-তরুনী এককথায় দুই মানব মানবীর হƒদয় আকুল করা প্রেম জগতের চিরন্তনী সত্যে উদ্ভাসিত হয়েছে সৌন্দর্যের প্রতীক হিসেবে। প্রেমের আকুলতায় রাজ সিংহাসন পর্যন্ত ছেড়ে দেওয়ার ইতিহাস যুড়ে যুগে দেখা গেছে। বীর যোদ্ধা থেকে লেখক, কবি-শিল্পী-সাহিত্যিক রাজনীতিবিদ শুরু করে জগৎ শ্রেষ্ঠ দার্শনিক ও বিজ্ঞানীদের জীবনেও প্রেম এসেছে গভীর আবেগ অনুভূতি নিয়ে। প্রেমের জন্য রাজদন্ডও ভোগ করেছেন অনেকে। প্রেমের শক্তি এতটাই অপ্রতিরুদ্ধ যে, প্রেমিক যুগলের বন্ধন পরিবার-সমাজ কখনো ছিন্ন করতে পারেনি। প্রেমের কাছে নত হতে হয়েছে বারবার।

হƒদয় নিঃসৃত আবেগ অনুভূতি থেকে উৎসারিত প্রেমের তীব্রতা এতটাই বেশি যে, একালেও প্রিয়জনকে না পাবার বেদনায় আÍহননেন পথ বেছে নিতে দেখা যায় প্রেমিক-প্রেমিকাকে। প্রেমের সুন্দরের পূজারী সেই যে আপাদমস্তক মানবিক মানুষ। যৌন বিকারগ্রস্থ বিকৃত ধর্ষকদের কাছে প্রেম মূল্যহীন হলেও মানুষের কাছে মানবতার চোখে এক অপার সৌন্দর্যের মহিমা। প্রেমের বিরহ বেদনা আনন্দ ও নির্মল সৌন্দর্য মিলিয়ে মহাকাব্য রচিত হয়। চিত্রকর্ম থেকে সেলুলয়ের ফিতায় যুগে যুগে প্রেম ঐশ্বর্যমন্ডিত শোভা পেয়েছে। পৃথিবীতে কম মানুষই আছেন যার জীবনে বা মনের গভীরে বিপরিত লিঙ্গের প্রতি আকর্ষণ বোধ হয়নি। মনের গহিনে কারো ছায়া পড়েনি। আসেনি মধুর প্রেম। প্রেমহীন জীবন যেমন বর্ণাঢ়্য হয়না তেমনি বহমান জীবনে শক্তি ও গতির উৎসের সন্ধান পায় না।

বর্ষায় বা শ্রাবন আষাড়ে বৃস্টির ধারা নেমে এলে প্রকৃতি মানব মনকে আকুল করে দেয়। প্রেমিক হƒদয়ের চিত্ত ব্যকুল করে তোলে। কবি গুরুর ভাষায় ‘এমন দিনে তারে বলা যায়, এমন ঘন ঘোর বরিষায়’। প্রেমিক প্রেমিকা একে-অপরকে গভীর আবেগে কাছে পেতে চায়। মন খুলে খুনসুটি গল্পে মেতে উঠকে চায়। সমাজ অনেক বদলেছে। অভিভাবকদের দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টেছে। প্রেমিক যুগল সাহসী হয়েছে। তারুণ্য জানে চির সুন্দরের প্রেমে কোনো পাপ নেই। নির্মল ভালবাসার আবেগ নির্ভর বন্ধনে, একে-অপরকে চাওয়া ও পাওয়ার মধ্যে অহংকারের গৌরব লুকিয়ে আছে। লজ্জা গ্লানি প্রেমিক নর-নারীর জন্য নয়। যৌন বিকৃত ধর্ষকদের জন্য। সমাজের নষ্ট মানুষ দেখলে লজ্জিত হতে হয়। ঘৃনা জাগে মনে। নির্মল ভালবাসায় সিক্ত প্রেমিক যুগলকে দেখলে অপার সুন্দরের আহবানে মুগ্ধ হতে হয়। একটি সুন্দর বাগান, সবুজ পাহাড় গোধূলী লগ্নের বহমান নদী কিংবা অস্তমিত সূর্যের সামনে দাড়িয়ে সমুদ্র দর্শন যে আনন্দ দেয় তার চেয়ে কম আনন্দ নেই প্রেমিক যুগলের হেটে যাওয়া দৃশ্যে।

সোমবার কাকভেজা বৃস্টিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে টিএসসির ফুটপাতে এক প্রেমিক যুগল কাছাকাছি হয়েছিল বৃস্টিতে ভিজতে ভিজতে। এখনো মুষলধারে বৃস্টি নামলে ভিজতে ইচ্ছে করে। বৃস্টি ভেজা পথে হেটে যেতে ইচ্ছে করে। সেখানে প্রিয়জনকে নিয়ে বৃস্টিতে ভিজতে বা হেটে যেতে কার না মন টানে? টিএসসির প্রেমিক যুগল প্রেমে মগ্ন হয়ে তাবৎ জগৎ সংসারের সবমোহ ভুলে নিশ্বাপ নিস্বকাম মন নিয়ে পরস্পরকে চুমু খেয়েছিলেন। পূর্বপশ্চিমের ফটো সাংবাদিক জীবন আহমেদ সেই তরুন প্রেমিক যুগলের মন আনন্দ করা চুমু খাওয়ার সুন্দর ছবি ক্যমেরা বন্দি করেছিলেন। সেই ছবি ভার্চুয়াল জগতে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। পক্ষে-বিপক্ষে মন্তবের ঝড় উঠে। যাদের মুখে দুর্গন্ধ, চুমু ভাগ্য জুটেনি, হƒদয় প্রেমহীন, জীবনে আসেনি প্রেমের সুখ, হিংসার অনলে পুড়ে তারা বিরুপ মন্তব্য করেছেন। প্রেমের শ¡াসত সৌন্দর্য প্রবন মানবিক প্রেমিক হƒদয়ের মানুষেরা একে অভিনন্দিত করেছেন। মুগ্ধ হয়েছেন। জীবনের ক্যমেরা প্রেমের জয়গান গেয়েছে।

যুগলের চুমু খাওয়ার ছবিটি বারবার আমি দেখেছি। বারবার মুগ্ধ হয়েছি। এখানে কোনো অন্যায় বা পাপ দেখিনি। মনে হয়েছে কতদিন এমন সুন্দর ছবি যেমন দেখিনি তেমনি দেখিনি নির্মল প্রেমিক যুগলের এমন আবেগ ঘন ছবি। মঙ্গলবার জীবন টিএসসি এলাকায় গেলে এ নিয়ে কেউ কথা বলেনি। কিন্তু তার দু’তিন জন ফটো সাংবাদিক সহকর্মী নিজেদের ব্যর্থতার গ্লানিতে লজ্জায় ডুবে গিয়ে আক্রোশে ফেটে পড়েছেন। জীবনের উপর হামলা করেছেন। পেশাদারিত্বের জায়গা কলংকিতই করেননি নিজেদের কাপুরোষিত নগ্ন চরিত্রকে উšে§াচিত করেছেন। এই ঘটনার নিন্দা জানাই। এই হামলার বিচার চাই। আর চাই তারুণ্যের প্রেমের জয় হোক। প্রেমের জয় অনিবার্য। পৃথিবী জুড়ে প্রেমের সৌন্দর্য ছড়িয়ে পড়–ক। প্রেম সবার মনের কালিমা দূর করুক। প্রেমে প্রেমে সকল নারী-পুরুষ সুখী হোক।________পীর হাবিব

 


অন্যদিকে সারা বাংলা পোর্টাল এই অঘটন নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করেছে। তার া জানাচ্ছে _____
‘ভাইরাল সাহস’ ছবির চিত্রগ্রাহককে মারধরের অভিযোগ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) এলাকায় সোমবার (২২ জুলাই) দুপুরে বৃষ্টিভেজা যুগলের একটি ছবি তুলে আলোচনায় এসেছিলেন আলোকচিত্রী জীবন আহমেদ। ছবিটি তুমুল সাড়া ফেলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। মঙ্গলবারও চলছিল ভাইরাল ওই ‘সাহসের ছবিটি’ নিয়ে নানা আলোচনা। ছবিটি তুলে প্রশংসার পাশাপাশি পেশাদার আলোকচিত্রী জীবন পেয়েছেন হুমকিও!

নানামুখী এই আলোচনার মধ্যেই মঙ্গলবার দুপুরে অভিযোগ আসে, টিএসসির যে জায়গায় ছবিটি তোলা হয়েছে সেখানেই তাকে প্রকাশ্যে মারধর করা হয়েছে। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে চিত্রগ্রাহককে ডেকে নিয়ে একদল দুর্বৃত্ত টিএসসিতে সবার সামনে মারধর করেছে বলে সারাবাংলা’কে জানান আলোকচিত্রী স্বয়ং।


মোবাইল ফোনে সারাবাংলা’র প্রতিবেদকের কাছে জীবন আহমেদ বলেন, ‘লজ্জার বিষয় হচ্ছে আমার নিজের পেশার মানুষরাই ডেকে লাঞ্ছিত করেছেন আমাকে।’ কারা মেরেছেন— এর জবাবে তিনি বলেন, ‘সবাইকে তো আর চিনতে পারিনি। তবে কয়েকজনকে চিনি। এদের মধ্যে আমার নিজের পেশার লোকেরাও আছেন। আর সেটাই আমার কাছে চরম লজ্জার।’

কী কারণে তারা মারধর করে— জানতে চাইলে জীবন বলেন, ‘তারা বলেছেন, ছবিটি তুলে নাকি আমি সবাইকে লজ্জায় ফেলেছি। এতে ফটোগ্রাফারদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে।’


জীবন আহমেদ বলেন, ফটোগ্রাফার বড় ভাইদের কেউ যদি আমাকে আড়ালে নিয়ে কিছু বলতেন, তাহলে বলার কিছু ছিল না। কিন্তু সবাই মিলে আমাকে প্রকাশ্যে মেরেছেন, কেউ বাঁচাতে আসেনি। এই মারধরের বিষয়ে আইনি পদক্ষেপ নেবেন কিনা— সে প্রশ্নের জবাবে জীবন জানান, আমি যে হাউজে কাজ করি তারা এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। শাহবাগ থানায় একটি মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানান তিনি।

জীবন আহমেদের বন্ধু মানবাধিকারকর্মী অপরাজিতা সঙ্গিতা জানান, জীবন আহমেদকে যারা মেরেছেন তারা একই পেশায় যুক্ত। মারধরের সময় তাকে বলা হয়েছে, এই পেশাকে নাকি জীবন কলঙ্কিত করেছে। নিজ পেশার মানুষের আচরণে জীবন মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে বলেও জানান অপরাজিতা সঙ্গিতা।

আপনার মতামত দিন:


কলাম এর জনপ্রিয়