Dr.Liakat Ali

Published:
2023-05-16 22:13:27 BdST

হাত-পা বেঁধে রাখা শিশু তায়িবাকে সুস্থ করতে উদ্যোগ নিলেন ডাক্তাররা


 

ডেস্ক
__________________

নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলায় হাত-পা বেঁধে রাখা আট বছরের শিশু তায়িবার সুষ্ঠু চিকিৎসার উদ্যোগ নিয়েছেন চিকিৎসকরা। বর্তমানে শিশুটির চিকিৎসা হবে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মানসিক রোগ বিভাগে। প্রয়োজন অনুযায়ী তাকে ঢাকার মানসিক রোগ ইনস্টিটিউট বা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হবে। পূর্ব ধলা উপজেলা প্রশাসন এ বিষয়ে প্রশংসনীয় উদ্যোগ নিয়েছে।
তায়িবার বাড়ি উপজেলার ঘাগড়া ইউনিয়নের লেটিরকান্দা এলাকায়। সে ওই গ্রামের দিনমজুর মাহফুজুর রহমান ও আঁখি আক্তারের মেয়ে।

মিডিয়া থেকে জানা গেছে, , ২০১৫ সালের ১২ মে একজন ধাত্রীর মাধ্যমে তায়িবার জন্ম হয়। জন্মের কয়েক মাস পর শিশুটির অদ্ভুত আচরণ দেখে পরিবারের লোকজন তাকে পূর্বধলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানকার চিকিৎসকেরা তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। সেখানে কিছুদিন চিকিৎসা শেষে বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। কিন্তু বছরখানেক পর আবারও একই অবস্থা দেখা দেওয়ায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে চিকিৎসক তাকে ঢাকার পিজি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। কিন্তু হতদরিদ্র পরিবারটির সামর্থ্য না থাকায় আর ঢাকায় না নিয়ে বাড়িতে নিয়ে যায়। এর পর থেকে দিন দিন শিশুটির অস্বাভাবিক আচরণ বাড়তে থাকে। তাকে ছেড়ে দিলে নিজেই মাথা চাপড়ায় ও হাত কামড়ায়। যেদিকে খুশি চলে যেতে চায়। অন্যদের মারধর করে, রাতে না ঘুমিয়ে অস্বাভাবিক আচরণ করে। ফলে শিশুটির কখনো দুই হাত একসঙ্গে আবার কখনো দুই হাত দুই দিকে বেঁধে রাখতে হচ্ছে মা–বাবাকে। এমন পরিবেশেই বেড়ে উঠছে সে।
পরে চিকিৎসক বৃন্দ, উপজেলা প্রশাসন, কিছু সহৃদয় মানুষ এগিয়ে এসেছে। এবার শিশুর মানসিক রোগ চিকিৎসা হবে।

আঁখি আক্তার বলেন, ‘দুই ভাই এক বোনের মধ্যে তায়িবা সবার বড়। সে কথা কইতে পারে না। যখন যা মন চায় তাই করে। তারে বাইন্দা রাহন ছাড়া আর কোনো উপায় নাই। শক্ত কোনো কিছু সামনে পাইলেই নিজের মাথা ঠুকতে থাকে। ঘুমের ওষুধ ছাড়া কোনো সময় সে ঘুমায় না। মেয়েডারে লইয়া অনেক কষ্টে আছি। রাইত–দিন হাত বাইন্দা রাখতে হয়। মা হইয়া এই দৃশ্য দেখতে আর বালা লাগে না। এখন চিকিৎসার ব্যবস্থা অওনে খুবই খুশি লাগতাছে। মনে হইতাছে আমার মেয়ে বুধহয় বালা হইয়া যাইবো।’


বাবা মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘আমি একজন দিনমজুর। নিজেও অসুস্থ। সংসার চলে না। নিজের ঘর না থাকায় বড় ভাইয়ের এই চালা ঘরটাতে পরিবার নিয়া থাকি। অসুস্থ মেয়েডার চিকিৎসা করাইতে পারতাছিলাম না। অহন আপনাদের মাধ্যমে তার চিকিৎসার ব্যবস্থা হইতাছে বলে অামি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।

আপনার মতামত দিন:


ক্লিনিক-হাসপাতাল এর জনপ্রিয়