Ameen Qudir

Published:
2019-05-21 20:53:34 BdST

কেবল চেন্নাই, সিঙ্গাপুর নয়, হৃদরোগের সেরা চিকিৎসা এখন কুমিল্লাতেও



সংবাদদাতা
_______________________

হৃদরোগের সেরা চিকিৎসা দিতে অনন্য আয়োজন এখন বাংলাদেশের শহর কুমিল্লাতেই।


হার্ট অ্যাটাক হলে সিঙ্গাপুর , চেন্নাই কলকাতা , কুয়া লামপুর ছুটছে আনেকেই। সেখানে সেরা চিকিৎসা মিলছে। কিন্তু কুমিল্লার মানুষের অত দূর ছুটে যাওয়ার আর দরকার নেই। কুমিল্লাতেই আছে বিশ্বমানের চিকিৎসা।
এএফসি হেলথ ফরটিস হার্ট ইনস্টিটিউট। ভারতের বিখ্যাত ফরটিস এসকর্টস হার্ট ইনস্টিটিউট অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টারের সহযোগিতায় দুই বন্দরনগরী চট্টগ্রাম ও খুলনায় দু’টি ইউনিট স্থাপনের পর এবার কুমিল্লায় এই হার্ট ইনস্টিটিউট খুলেছে এএফসি (অ্যাকটিভ ফাইন কেমিক্যাল) হেলথ লিমিটেড।
গত বছরের নভেম্বরে ইনস্টিটিউটটি কুমিল্লায় সেবা দেওয়া শুরু করার পর প্রতিমাসেই তাদের ২০-২৫ শতাংশ হারে রোগী বাড়ছে। এমনকি ঢাকায় কোনো হাসপাতালে চাকরি করা কর্মকর্তাও তার অসুস্থ বাবাকে ভর্তি করাচ্ছেন এএফসি ফরটিস ইনস্টিটিউটে। বাংলাদেশের বাইরে যাওযায় এবার ছুটি। হাতের কাছে সেরা হাসপাতাল থাকতে দূরের যাত্রায় কে যায়।


চিকিৎসায় আন্তরিকতার কথা তুলে ধরে রোগীরা বলেন, এখানে সবাই এতো ভালো ব্যবহার করে, মনে হয় সবাই আপন লোক। সারাক্ষণ রোগীদের সেবার আওতায় রাখেন ডাক্তাররা। কোন বিরতি নেই। রোগীদের কোন অভিযোগও নেই। এখানে ডাক্তারদের কেউ কসাই বলে না। বলে ভগবানের সাক্ষাৎ দেখা।

খরচও কম। দূরের যাত্রার লাখ লাখ টাকা থাকা কাওয়ার খরচ লাগছেই না। ঢাকা , চট্টগ্রাম , আগরতলা, আইজল, ইটানগর থেকে হরদম আসছে রোগীরা। সুচিকিৎসা পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন।


হাসপাতালে সিনিয়র কনসালট্যান্ট-কার্ডিওলজি হিসেবে ডা. এস এম মামুন ইকবাল, ডা. এস চক্রবর্তী প্রিন্সিপাল কনসালট্যান্ট-কার্ডিওলজি হিসেবে আছেন । কার্ডিওলজির কনসালট্যান্ট ডা. সাঈদ আহমেদ এবং সিনিয়র কনসালট্যান্ট-মেডিসিন ডা. সাইফুদ্দিন এম এন আলম। সবাই দেবতাতুল্য সেবা দেন জানালেন রোগীরা।

বিশেষজ্ঞ ডা. মামুন ইকবাল প্রায় ৩০০০ হাজার এনজিওগ্রাম, ৫০০ এর অধিক এনজিওপ্লাস্টি, প্রায় ৫০০ প্রাইমারি পিসিআই (করোনারি এনজিওপ্লাস্টি) ও শতাধিক পেসমেকার স্থাপন করেছেন।

তার কথায়, এ দেশে ক্রমেই কার্ডিয়াক রোগী বাড়ছে। সাধারণত ম্যাসিভ হার্ট অ্যাটাকের পর শতকরা ২৫ জন প্রথম এক ঘণ্টার মধ্যে মারা যান। বাকিদের শতকরা ১৫ জন হাসপাতালে নেওয়ার পর মারা যান। হার্ট অ্যাটাকের পর প্রথম ৩-৪ ঘণ্টা সময়কে ‘গোল্ডেন আওয়ার’ ধরা হয়। এসময়টায় সময়োপযোগী ও আধুনিক সেবা দিতে পারলে অনেক রোগীই শঙ্কামুক্ত হয়ে যেতে পারেন। কিন্তু আমাদের দেশের রোগীদের, বিশেষ করে এই কুমিল্লা-নোয়াখালী অঞ্চলের রোগীরা ঢাকা-চট্টগ্রামে যেতে যেতেই ‘গোল্ডেন আওয়ার’ নষ্ট করে ফেলেন। এই সময়টা যেন নষ্ট না হয়।

সেজন্য কুমিল্লার এএফসি ফরটিস ইনস্টিটিউট এখন পরম ভরসা ।

এই ইনস্টিটিউট ৭ দিন ২৪ ঘণ্টা কার্ডিয়াক সেবা দিচ্ছে। হার্টের জটিল ও জন্মগত সমস্যা নির্ণয় এবং চিকিৎসা ব্যবস্থাপনার জন্য যেমন রয়েছে আন্তর্জাতিক মানের ক্যাথ ল্যাব (কার্ডিয়াক ক্যাথেটারাইজেশন ল্যাবরেটরি)। এর মাধ্যমে ৭ দিন ২৪ ঘণ্টাই প্রাইমারি ইনজিওপ্লাস্টি সেবা দেওয়া হয়। প্রয়োজনে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ফরটিস এসকর্টস দিল্লির চিকিৎসকদের কনাসলটেশনের ব্যবস্থা করা হয়। এছাড়া ২৪ ঘণ্টা কার্ডিয়াক ইমার্জেন্সির পাশাপাশি বিশ্বমানের ডায়াগনস্টিক সুবিধা এবং বিশ্বমানের ডায়ালাইসিস ইউনিটও আছে এখানে। সেবার জন্য জেনারেল ওয়ার্ডের পাশাপাশি আছে ভিআইপি কেবিন, ডুয়াল কেবিন, সিঙ্গেল কেবিন।
এনজিওগ্রাম ঢাকার ভালো হাসপাতালগুলোতে ২০-২৫ হাজার টাকা নিলেও ফরটিস কুমিল্লা নিচ্ছে ১৬ হাজার টাকা। পেসমেকার স্থাপনে ৬৫-৭০ হাজার টাকা নেওয়া হয় এখানে।

কোনো রোগী যদি মারা যান, তবে তার সবশেষ ২৪ ঘণ্টার চিকিৎসার কোনো খরচ না নেওয়ার নীতি মানছে এএফসি ফরটিস কুমিল্লা।

ইনস্টিটিউটের ফ্যাসিলিটি ডিরেক্টর রাকেশ কুমার জেয়সওয়াল বলেন, আপাতত ৮৫ হাজার বর্গফুটের ওপর যাত্রায় স্বল্পপরিসরে সেবা দেওয়া শুরু করেছি। ভবিষ্যতে আরও বিস্তৃত হবে এখানকার কার্যক্রম।


এএফসি হেলথ ফরটিস হার্ট ইনস্টিটিউট কুমিল্লা‘প্যাশেন্ট কেয়ার’ নীতিতে বিশ্বাসী এএফসি ফরটিসে এলে কারও প্রথমে মনেই হবে না এটি হাসপাতাল। পুরো হাসপাতাল সার্বক্ষণিক পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকে। এমনকি সিসিইউতে সপ্তাহে না হলেও প্রতি ১৫ দিন পরপর জীবাণুরোধী কার্যক্রম চালানো হয়। দু’জন নারী সবসময় রোগী বা তার স্বজনদের খোঁজখবর নেন কোনো সমস্যা আছে কি-না। আর প্রতি প্যাশেন্ট বেডে একজন করে নার্স ২৪ ঘণ্টা নিয়োজিত থাকেন। রোগী সেবা নিয়ে বেরিয়ে গেলে খোঁজ নেয়া হয় তার স্বাস্থ্যের। তারাই হাসপাতালের সেবার মান নিয়ে ইতিবাচকভাবে প্রচার করেন।

 

আপনার মতামত দিন:


ক্লিনিক-হাসপাতাল এর জনপ্রিয়