ডেস্ক

Published:
2021-04-29 03:59:33 BdST

অধ্যাপক শামসুল আলমের মহাপ্রয়াণ : "অবশেষে জ্যেষ্ঠতম জুটি  ভাঙল"


 

ডেস্ক
--------------------
পাবনা এডওয়ার্ড কলেজের সাবেক উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক শামসুল আলম ২৮ এপ্রিল ভোর ৩.২০ মিনিটে মৃত্যু বরণ করেন । এই মর্মান্তিক শোকাবহ ঘটনা বাংলা দেশের সবচেয়ে প্রবীণ বিবাহিত জুটির প্রবীণাকে একা করে দিল। তিনি ও তাঁর স্ত্রী রওশন আরা পাবনা তথা বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রবীণ বিবাহিত সুখীতম জুটি হিসেবে পরিচিত ছিলেন। 

জীবন মৃত্যুর অমোঘ নিঠুর নিয়ম রঙ্গে পৃথিবীর রঙ্গ মঞ্চে অবশেষে সেই জুটি ভাঙলো।

মিডিয়া প্রতিবেদনে জানা যায়,
পাবনা শহরের এখানে-সেখানে মাঝেমধ্যেই দেখা মিলত এক দম্পতির। কখনো পত্রিকার দোকানে পত্রিকা কিনতেন, কখনো–বা মিষ্টির দোকানে বসে মিষ্টি খেতেন। আবার কখনো বাজারের ব্যাগ হাতে হাঁটতে থাকতেন। প্রতিক্ষণ দুজন একসঙ্গে। চলার পথে কখনো হাত ছাড়তেন না একজন অন্যজনের।

ভালোবাসার অনুকরণীয় এই যুগল হচ্ছেন পাবনা জেলা শহরের শালগাড়িয়া মহল্লার এতিমখানা পাড়ার শামসুল আলম (৮০) ও রওশন আরা (৭২)। যাঁরা ভালোবাসার বন্ধনে একে অপরকে আঁকড়ে ধরে কাটিয়ে দিচ্ছিলেন যুগের পর যুগ। সংসারের দৈনন্দিন কাজ থেকে ডাক্তার দেখানো, বাজার করা, প্রাতর্ভ্রমণ, বেড়ানোসহ সব ক্ষেত্রেই চলেছেন একসঙ্গে।


তবে তাঁদের আর একসঙ্গে দেখা যাবে না। দীর্ঘ পথচলার অবসান ঘটিয়ে এই যুগলের একজন শামসুল আলম আজ বুধবার ভোরে চিরবিদায় নিয়েছেন।

এই দম্পতির একমাত্র নাতনি সুরঞ্জনা আহম্মেদ বুধবার সন্ধ্যায় তাঁর নানার মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেছেন। তিনি  জানান, তাঁর নানার মৃত্যুতে নানি খুব একা হয়ে পড়েছেন। তিনি নিজেও বয়সের ভারে নুয়ে পড়েছেন। বর্তমানে চুপচাপ আছেন।

শামসুল আলমের জন্ম ১৯৪১ সালে। পড়াশোনা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ১৯৭৩ সালে প্রথম বিসিএসে উত্তীর্ণ। কলেজে শিক্ষকতা করেছেন। আর রওশন আরা এসএসসি পাস করা গৃহিণী। দুজনেরই বাড়ি পাবনা সদর উপজেলার ভাঁড়ারা ইউনিয়নের ভাঁড়ারা গ্রামে। ১৯৬২ সালে তাঁদের পরিচয়। তখন থেকেই ভালোবাসার শুরু, ১৯৬৩ সালে বিয়ে। এরপর থেকে কেউ কাউকে ছেড়ে থাকেননি কখনো। কোনো ক্লান্তিও স্পর্শ করেনি দুজনের মনে।

১৯৯৮ সালে কর্মজীবন শেষ করে পাবনার এতিমখানা পাড়ায় নিজের বাড়িটি তৈরি করেন শামসুল আলম। কিছুদিন পর মেয়ের বিয়ে দেন। কিছুটা একা হয়ে পড়েন রওশন আরা। তখন থেকে আর একটি বেলার জন্যও আলাদা হননি দুজন। ঘরে-বাইরের প্রতিটি কাজে দুজন দুজনের সঙ্গে ছিলেন। চলার পথে একে অপরকে ধরে রেখেছিলেন শক্ত করে। আগলে রেখেছিলেন ভালোবাসার বন্ধনে।
জীবন মৃত্যুর অমোঘ নিঠুর নিয়ম রঙ্গে পৃথিবীর রঙ্গ মঞ্চে অবশেষে সেই জুটি ভাঙলো।

আপনার মতামত দিন:


ক্যাম্পাস এর জনপ্রিয়