Ameen Qudir

Published:
2020-01-12 20:55:02 BdST

জরায়ুমুখের ক্যান্সার : সচেতনতার অভাবে প্রতি বছর মারা যান ৫,২১৪জন


ডেস্ক
___________________

ডাঃ মোঃ হাবিবুল্লাহ তালুকদার রাসকিন জানাচ্ছেন,

দেশে চতুর্থ বারের মতো পালিত হচ্ছে জরায়ুমুখের ক্যান্সার সচেতনতা দিবস। জানুয়ারি মাসের দ্বিতীয় শনিবার ‘মার্চ ফর মাদার’ নামের মোর্চার উদ্যোগে এই দিবসটি পালিত হয়। এ ছাড়া পুরো জানুয়ারি মাস বিশ্বে জরায়ু মুখের ক্যান্সার সচেতনতা মাস হিসে উদযাপিত হয়।
এ বছর এ উপ লক্ষে মাসব্যাপি কর্মসূচী নেয়া হয়েছে যার উদ্বোধন হলো ১১ জানুয়ারি শনিবার সকাল ১১টায় ঢাকা রিপোর্টারস ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে ‘জরায়ুমুখের ক্যান্সার প্রতিরোধে চাই সামাজিক আন্দোলন’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনার মাধ্যমে। দেশের খ্যাতনামা স্ত্রীরোগ, ক্যান্সার ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞগণ এই আলোচনায় অংশ নেন।
এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্যঃ আপনার কিশোরী কণ্যাসন্তানকে এইচপিভি টিকা দিন।
ইন্টারন্যাশনাল এজেন্সি ফর রিসার্চ অন ক্যান্সার- আইএআরসি’র সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী বাংলাদেশে নারী ক্যান্সার রোগীদের মধ্যে স্তন ক্যান্সারের পরেই জরায়ুমুখের ক্যান্সারের অবস্থান। প্রতি বছর এই ক্যান্সারে ৮,০৬৮ জন নারী নতুন করে এই ক্যান্সারে আক্রান্ত হন, নারী ক্যান্সার রোগীর প্রায় ১২%। মারা যান ৫,২১৪ জন।

আলোচনায় বক্তারা দুটি বিষয়ে জোর দেন ও এ বিষয়ে সরকারের আশু উদ্যোগ কামনা করেন-
১। প্রাথমিক প্রতিরোধের জন্য জরুরি হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস (এইচপিভি) ভ্যাকসিন দেশের বাজারে পাওয়া যাচ্ছে না। আমদানিকারক একটি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ থেকে কার্যক্রম গুটিয়ে নিয়েছে , অন্যটির আমদানি বেশকিছুদিন ধরে বন্ধ রয়েছে । একাধিক কোম্পানির মাধ্যমে এই ভ্যাকসিন সহজল্ভ্য করার ব্যাপারে সরকারের উদ্যোগ কামনা করছি। সরকার আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থা (GAVI) এর সহযোগিতায় গাজীপুর জেলার ৩৩০০০ কিশোরীকে বিনামূল্যে এই ভ্যাক্সিন প্রদান করেছেন । এই পাইলট প্রজেক্টটির মূল্যায়নের পর , পর্যায়ক্রমে সারাদেশে সম্প্রসারিত করার কথা – এ বিষয়ে অগ্রগতি দৃশ্যমান নয়।

২। ক্যান্সার স্ক্রিনিং কর্মসূচী যা প্রায় বিভিন্ন পর্যায়ের ৪০০ সরকারি হাসপাতলের ভায়া সেন্টারে চালু আছে, তা অসংগঠিত, হাসপাতালকেন্দ্রিক । একে সমাজভিত্তিক সংগঠিত রূপ না দিলে ঝুঁকিপূর্ণ নারীদের এর আওতায় আনা সুদূরপরাহত। এর বাইরে সরকারি- বেসরকারি কিছু উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে, এটা আশার কথা। তবে সঠিক পরিকল্পনা, বাস্তবায়ন, মূল্যায়নের উপর গুরুত্ব দিয়ে একটি জাতীয় ক্যান্সার নিয়ন্ত্রণ পরিকল্পনার আওতায় জাতীয় ক্যান্সার স্ক্রিনিং প্রোগ্রাম এখন সময়ের দাবী, যা হবে সমাজভিত্তিক, সংগঠিত ও সম্পূর্ণ।
সভায় বক্তারা মত প্রকাশ করেন, কেবল সরকারের দায়িত্ব নয়, চিকিৎসকসমাজ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার অন্যান্য অংশীজন, সকল শ্রেণী-পেশার মানুষের অংশগ্রহণে সমন্বিত প্রচেষ্টায় ক্যান্সার পরিস্থিতির সার্বিক উন্নতি সম্ভব।

জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইন্সটিটিউটের ক্যান্সার ইপিডেমিওলোজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান ডাঃ মোঃ হাবিবুল্লাহ তালুকদারের সঞ্চালনায় আলোচনায় অংশ নেন বিশিষ্ট স্বাস্থ্য বিষয়ক লেখক জ্যেষ্ঠ অধ্যাপক অধ্যাপক শুভাগত চৌধুরী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের গাইনি অনকোলজি বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান অধ্যাপক সাবেরা খাতুন, শহীদ সহরোওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের গাইনি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ফাতেমা আশরাফ, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের গাইনি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডাঃ মালা বনিক, ঢাকা মেডিকেল কলেজের গাইনি বিভাগের ডাঃ দিলরুবা দেরদৌস, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ইপিআই এর সাবেক প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডাঃ তাজুল বারী, এটিএন বাংলার নিউজ এডিটর ও ক্মিউনিটি অনকোলজি ফাউন্ডেশনের যুগ্ম সম্পাদক নাদিরা কিরণ ও মার্চ ফর মাদার মোর্চার বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দের মধ্যে মোসাররত জাহান সৌরভ, ফেরদৌস মোবারক, হোসনে আরা পলি, মেরি মার্গারেট রোজারিও, রোটারিয়ান সৈয়দ আফতাবুজ্জামান, রোকেয়া রুমি, জেবুন্নেসা, সুদীপ্ত, কাজী সদরুল ইসলাম প্রমুখ।

মার্চ ফর মাদার
ক্যান্সার রোগতত্ত, প্রতিরোধ ও গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (সিসিইপিআরবি)। সমাজভিত্তিক ক্যান্সার সেবা কেন্দ্র ট্রাস্ট (সিওসি)। ইয়াং ওমেন্স ক্রিশ্চিয়ান্স এসোসিয়েশন (ওয়াইডাব্লিওসিএ)। কমিউনিটি অনকোলজি ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ (সিওএফবি)। রোটারি ক্লাব অব ঢাকা গোল্ডেন সিটি। মেডিসিন ক্লাব। ইএইচআরডি ক্যান্সার সাপোর্ট সেন্টার। হেলথি, এনারজেটিক এক্টিভ লাইভ ( হীল)

আপনার মতামত দিন:


ক্যাম্পাস এর জনপ্রিয়