Ameen Qudir

Published:
2019-08-31 06:12:23 BdST

জগৎখ্যাত 'অধ্যাপক পিএস রামানি লাইফ টাইম অ্যাওয়ার্ড' পেলেন অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া


 

বিএসএমএমইউ সংবাদদাতা/ বিজ্ঞপ্তি/ ডেস্ক
___________________

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও উপমহাদেশ খ্যাত নিউরো সার্জন অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়ার বর্নাঢ্য কর্মজীবনের স্বীকৃতি স্বরূপ তাঁর মুকুটে যুক্ত হল আরেকটি গৌরবজনক পালক।
মেডিকেল সায়েন্সসহ দেশ-বিদেশে নিউরোসার্জারি বিষয়ক চিকিৎসাসেবা, গবেষণা ও শিক্ষকতায় অসামান্য অবদানের জন্য জগৎখ্যাত অধ্যাপক পিএস রামানি লাইফ টাইম অ্যাওয়ার্ড পেলেন তিনি। শুক্রবার ৩০ আগস্ট ২০১৯ দক্ষিণ ভারতের কোচিনে নিউরো স্পাইনাল সার্জন্স অ্যাসোসিয়েশনের তিনদিনব্যাপী বার্ষিক সম্মেলনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তাঁকে এই পুরস্কার দেয়া হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রশান্ত কুমার মজুমদারের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মেডিকেল সায়েন্সসহ দেশ ও বিদেশে নিউরো সার্জারি বিষয়ক চিকিৎসাসেবা, গবেষণা ও শিক্ষকতায় অসামান্য অবদান রাখায় ও কর্মের স্বীকৃতি হিসেবে এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়কে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে তুলে ধরার প্রয়াস হিসেবে নিউরো স্পাইনাল সার্জন্স অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাহী কমিটি ও সাধারণ বডি হতে সর্বসম্মতিক্রমে তাকে এ অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়।

শুক্রবার থেকে দক্ষিণ ভারতের কোচিনে নিউরো স্পাইনাল সার্জন্স অ্যাসোসিয়েশনের তিনদিনব্যাপী বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে । সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া প্রফেসর পিএস রামানি লাইফ টাইম অ্যাওয়ার্ড গ্রহন করেন। আগামী ১ সেপ্টেম্বর তার দেশে ফেরার কথা রয়েছে।


গত ২৮ আগস্ট সন্ধ্যা ৭টা ৪৫ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি বিমানে তিনি ভারতের কোচিনের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেন।

কোচিনে পরিবারের সঙ্গে ড. বড়ুয়া। সঙ্গে স্ত্রী শিউলী বড়ুয়া ও কন্যা অনমা বড়ুয়া।

 

বর্নাঢ্য কর্মজীবন

উল্লেখ্য, দেশের বিশিষ্ট নিউরোসার্জন, বাংলাদেশ কলেজ অফ ফিজিশিয়ান্স এন্ড সার্জন্স (বিসিপিএস)-এর সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া গত ২০১৮ইং সালের ২৪ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় চ্যান্সেলর ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতি জনাব মোঃ আবদুল হামিদ কর্তৃক উপাচার্য হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হন। তিনি অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্জারি অনুষদের ডীন ও নিউরোসার্জারি বিভাগের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতিরও দায়িত্ব পালন করেছেন।

অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া ছাত্রজীবন থেকেই অত্যন্ত মেধাবী। তিনি ১৯৭৭ সালের এপ্রিল মাসে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাশ করেন। তিনি ১৯৯০ সালে এফসিপিএস, ২০০৩ সালে এমস (নিউরোসার্জারি), ২০০৪ সালে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি ১৯৯৩ সালে যুক্তরাষ্ট্র থেকে এফআইসিএস (এওয়ার্ডেড ফেলোশীপ অফ ইন্টারন্যাশনাল কলেজ অফ সার্জন্স) এওয়ার্ডে ভূষিত হন। অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া ২০১২ সালে শ্রীলঙ্কা থেকে অনারারী এফএসএলসিএস এবং কলেজ অফ ফিজিশিয়ান্স এন্ড সার্জন্স, পাকিস্তান থেকে অনারারী এফসিপিএস ডিগ্রি অর্জন করেন। ২০১৫ সালে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউরোসার্জারি বিভাগের চেয়ারম্যানের দায়িত্বভার গ্রহণ করে ২০১৮ সালের ৯ জুলাই পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন।



বর্ণাঢ্যময় শিক্ষাজীবনের অধিকারী অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া ২০১০ সাল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত তিন তিন বার ডীন নির্বাচিত হয়ে ২০১৮ সালের মে মাস পর্যন্ত সার্জারি অনুষদের ডীনের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি চট্টগ্রাম মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় এবং রাজশাহী মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়েরও সম্মানিত সিন্ডিকেট মেম্বার।

দেশের চিকিৎসা শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা গুণী এই শিক্ষকের ইতমধ্যে ৫৭টিরও বেশি গবেষণালব্ধ প্রবন্ধ, নিবন্ধ দেশী-বিদেশী জার্নাল ও আন্তর্জাতিক নিউরোসার্জিকাল জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। গাইড হিসেবে তাঁর তত্ত্বাবধানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন এমএস ইন নিউরোসার্জারি বিষয়ক ২০টি থিসিস পরিচালিত হয়েছে।

তিনি স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ), বিএসএমএমইউ-এর প্রাক্তন সভাপতি ছিলেন ও কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য ছিলেন এবং বর্তমানে তিনি স্বাচিপ, কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। বৈচিএ্যময় জীবনের অধিকারী অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া তিনি ১৯৭৯ সাল থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ মেডিক্যাল এ্যাসোসিয়েশন-এর বিভিন্ন পদে নির্বাচিত হয়েছেন। স্বাস্থ্যসেবায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখাসহ মানবসেবায় জীবন উৎসর্গকারী অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া বর্তমানে বাংলাদেশ এ্যাসোসিয়েশন অফ স্পোর্টস মেডিসিনের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

তিনি বাংলাদেশ মেডিক্যাল এ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) এবং স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপিত হিসেবে স্বাস্থ্যসেবাসহ চিকিৎসকদের অধিকার রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে যাচ্ছেন। তিনি ১৭ মার্চ ২০১৭ সাল থেকে ২০১৯ সালের ৬ এপ্রিল পর্যন্ত বাংলাদেশ কলেজ অফ ফিজিশিয়ান্স এ্যাস্ড সার্জন্স-এর সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি সাউথ এশিয়ান এ্যাসোসিয়েশন অফ নিউরোসার্জন্স-এর সভাপতি এবং বাংলাদেশ সোসাইটি অফ নিউরোসার্জন্স-এর সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি বাংলাদেশ মেডিক্যাল এ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ সোসাইটি অফ নিউরোসার্জন্স, বাংলাদেশ সোসাইটি অফ সার্জন্স, বাংলাদেশ ক্যান্সার সোসাইটি এবং স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের আজীবন সদস্য।

 

রয়্যাল কলেজ অফ ফিজিশিয়ান্স-এর ফেলোশীপে সম্মানিত

এবছরই তিনি রয়্যাল কলেজ অফ ফিজিশিয়ান্স-এর ফেলোশীপে সম্মানিত হন ।

দেশ ও বিদেশে নিউরোসার্জারি বিষয়ক চিকিৎসাসেবা, গবেষণা ও শিক্ষকতায় অসামান্য অবদান রাখায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য ও বাংলাদেশ কলেজ অফ ফিজিশিয়ান্স অফ সার্জন্স (বিসিপিএস)-এর সম্মানিত সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া (Prof. Kanak Kanti Barua) রয়্যাল কলেজ অফ ফিজিশিয়ান্স অফ লন্ডন কর্তৃক সম্মানসূচক ফেলোশীপ গ্রহণ করতে ১৯ জুলাই ২০১৯ শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টা ৪০ মিনিটে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর থেকে কাতার এয়ারওয়েজের একটি বিমানে লন্ডনে যান। ২৩ জুলাই ২০১৯ তারিখে সম্মানসূচক ফেলোশীপ ডিগ্রী গ্রহণ করেন তিনি।

গত বছর রয়্যাল কলেজ অফ ফিজিশিয়ান্স অফ লন্ডন-এর প্রেসিডেন্ট ইলেক্ট ডা. আন্দ্রে গুড্ডার্ড (Dr Andrew Goddard, FRCP), এফআরসিপি ইমেইলের মাধ্যমে প্রেরিত এক পত্রে অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়ার ফেলো হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার বিষয়টি জানানো হয়।

আপনার মতামত দিন:


বিএসএমএমইউ এর জনপ্রিয়