Ameen Qudir

Published:
2018-11-27 21:24:54 BdST

দেখে এলাম জাপান: দেখিয়ে এলাম লাল সবুজ পতাকা


 


ডা. মোহাম্মদ জোবায়ের মিয়া
______________________________

১৯ নভেম্বর ১৮ রেডিসন নারিতা হোটেলে এলাইড একাডেমী আয়োজিত "আন্তর্জাতিক সাইকিয়াট্রি এন্ড সাইকিয়াট্রিক ডিসওরডার "১৯ তম কংগ্রেসে কি নোট স্পিকার হিসেবে আমার প্রেজেন্টেশন এর সেই মাহেন্দ্রক্ষণে প্রথমে আমার বায়োগ্রাফি পড়ে শোনানো হলো। বাংলাদেশের লাল সবুজের জাতীয় পতাকার একটি এনিমেশন ওদের দিয়েছিলাম। সেটী ওয়াইড স্ক্রিনে পতপত করে উড়তে দেখে আমার এবং সাঈদ ভাইয়ের গর্বে বুক ভরে গেল। আমি প্রথমে আয়োজকদের এবং দেশ বিদেশের সম্মানিত স্কলারদের সাদর সম্ভাষন জানিয়ে আমার প্রেজেন্টেশন এর মূল থিম টি সংক্ষেপে জানালাম। আমার প্রেজেন্টেশন টি ছিল মূলত একটি কেস রিপোর্ট। একজন মধ্য বয়সি বাংলাদেশী এপিলেপ্সি রোগী যাকে ৩ বছর ধরে একটি মাত্র এন্টি এপিলেপ্টিক ড্রাগ প্রয়োগ করে খিঁচুনি বন্ধ করা গেছে তার সাফল্য গাঁথা। সেই রোগীটি কয়েকজন নিউরোলজিস্ট এবং সাইকিয়াট্রিস্ট এর কাছে বিভিন্ন এন্টি এপিলেপ্টিক মেডিসিন খেয়ে আসছিল। কিন্ত কোন মেডিসিনেই খিঁচুনি বন্ধ হচ্ছিল না। এর আগে সেই রোগী বিভিন্ন কবিরাজ, ফকির, ওঁঝা, হুজুরের শরনাপন্ন হয়ে অনেক টাকা পয়সা খুইয়ে প্রায় সব'শ্রান্ত হয়ে আমার প্রাইভেট চেম্বারে আসে
। আমি তারঁ এবং তাঁর স্ত্রীর কাছে যথা সম্ভব বিস্তারিত রোগের ইতিহাস নেই। রোগীর ক্লিনিক্যাল পরীক্ষা করে অন্য কোন শারিরীক রোগ পাওয়া যায় নি। পরবর্তীতে তাঁর স্ত্রীকে খিঁচুনি ওঠার সময়কার একটি ভিডিও মোবাইলে ধারণ করতে বলি। সাথে একটি ব্রেইনের সিটি স্ক্যান এবং ই ই জি পরীক্ষা করতে দেই। পরবর্তী সাক্ষাতে রোগী রিপোর্ট সহ আসেন। সিটি স্ক্যান এর রিপোর্ট স্বাভাবিক পাওয়া যায়। ই ই জি তে স্লো ওয়েভ পাওয়া যায়। খিঁচুনির সময়ের ভিডিও, রোগীর এবং অভিভাবকের ইতিহাস এবং ই ই জি রিপোর্ট এর ভিত্তিতে ডায়াগনোসিস করি এটি একটি ইডিয়পেথিক এপিলেপ্সি (Generalised Tonic Clonic Seizure)। রোগীকে পুরনো মেডিসিন গুলি ধীরে ধীরে কমিয়ে এনে শুধু মাত্র অক্সকারবামাজেপাইন ৩০০ মিঃ গ্রাঃ রাতে একটা করে খেতে বলি। কোন সমস্যা হয় কিনা অথবা আবারো খিঁচুনি উঠলে তা রেকর্ড করে রাখতে বলি। দুই সপ্তাহ পর ফলো আপে এসে বলে যে আগে সপ্তাহে ৩/৪ বার খিঁচুনি উঠতো। কিন্ত এই মেডিসিন খাওয়ার পরে দুই সপ্তাহে মাত্র ১ বার খিচুনী উঠেছে। আমি ডোজ বাড়িয়ে ৩০০ মিঃ গ্রাঃ সকালে ও সন্ধ্যায় দুই বারে মোট ৬০০ মিঃ গ্রাঃ খেতে বলি। একমাস পর রোগী কৃতজ্ঞ চিত্তে এসে বলে ডাক্তার সাহেব আমারতো আর খিঁচুনি উঠেনি। আমি কি এখন কাজে যেতে পারবো?আমি বেশ আনন্দিত হয়ে বললাম অবশ্যই যাবেন। তবে মেডিসিন খেতে একবেলাও ভুলবেন না। সাথে বাড়তি সতকতা' হিসেবে আগুন, পানি, যানবাহনে একা একা ভ্রমণ করবেন না। যে সাথে থাকবে তিনি যেন খিঁচুনি উঠলে তাকে বিছানা বা মেঝেতে শুইয়ে দেন। পানি দেওয়া যাবেনা। হাত, পা টেনে সোজা করার চেস্টা করবেন না। এমনিতেই কিছু ক্ষন পর খিঁচুনি বন্ধ হবে। অনেকে কুঃসংস্কার বসে সেন্ডেল / জুতা রোগীর নাকের কাছে চেপে ধরেন। এতে খিঁচুনীতো বন্ধ হবেইনা। উপরন্ত রোগীর শ্বাস প্রশ্বাস বন্ধ হয়ে মৃত্যু মুখে পতিত হতে পারে।এই পরিস্থিতিতে ঘাবড়াবেন না। রোগীর শারিরীক অবস্থার অবনতি হলে নিকটস্থ হাসপাতালে যোগাযোগ করবেন। রোগী এর আগে নিয়মিত মেডিসিন খেতোনা। নানান জনের নানা কথা শুনে হতাশায় বিভ্রান্ত হয়ে অনেক ভোগান্তি সহ্য করেছে। আমার কথায় আস্থা ফিরে পেয়ে রোগী ৩ মাস পর আবারো এসে তাঁর ভালো অবস্থার কথা জানালো। এখন সে নিয়মিত মাঠে যায়। ঠিক ভাবে সংসার করতে পারছে। আমি ৬ মাস পর পর ২ /৩ টি রক্তের পরীক্ষা করে আসতে বলি। তাঁর রক্ত কনিকা এবং লিভার ফাংশন ভালো আছে কিনা এটি চেক করি। এভাবে ৩ বছর ভালো থাকার গল্পই এই কেস রিপোর্টে উপস্থাপন করি। ৩ বছর পর রোগীর একটি প্রশ্ন আমাকে বেশ আলোড়িত করে। এই ভাবে আর কত দিন মেডিসিন খেতে হবে? উত্তরে আমি বলি যেদিন থেকে খিঁচুনি উঠেনা সেদিন থেকে অন্তত ৫ বছর ভালো থাকার পর ধীরে ধীরে মেডিসিন কমিয়ে ভালো সাফল্য পাওয়া যায়। অনেকে মেডিসিন বন্ধ করলে আবারো যদি খিঁচুনি উঠে তাহলে তাদের সারাজীবনও খেতে হয়। রোগী কে আশ্বস্ত করার জন্য বলি যদি মেডিসিন খেয়ে ভালো, স্বাভাবিক, খিঁচুনি মুক্ত জীবন যাপন করা যায় তবে মন্দ কি? যেমন ধরুন ডায়াবেটিস, হাইপারটেনশন এর রোগীরা সারা জীবন মেডিসিন খেয়ে অনেকে ভালো থাকে। না খেলে নানান জটিলতায় ভুগেন।তাহলে আপনার জন্য মেডিসিন খেয়ে যাওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ হবে। প্রচুর করতালির মাধ্যমে ১২ মিনিটে আমার প্রেজেন্টেশন শেষ হলো। ৩ মিনিটে ২ টি প্রশ্নের উত্তর দিলাম। প্রশ্ন এক, কেন অক্সকারবামাজেপাইন চয়েজ করলাম? আমার উত্তর ছিল যেহেতু রোগীর মেডিকেল হিস্ট্রিতে জানতে পারি সে এই মেডিসিন ৩০০ মিঃ গ্রাঃ খেয়ে কিছুদিন ভালো ছিল। কিন্ত আবারো খিঁচুনি উঠলে এটি বন্ধ করে অন্য ধরনের চিকিৎসা (কবিরাজি) গ্রহন করে। তাই আমি সঠিক এবং সহনীয় মাত্রায় এটি প্রয়োগ করি। আমরা জানি যে অক্সকারবামাজেপাইন Partial Seizure এবং Generalized Tonic Clonic Seizure দুটোতেই কাজ করে। প্রশ্ন ২, এটির কোন পাশ্ব' প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছিল কি না? আমার উত্তর ছিল। নাহ! এই রোগীর কোন বিশেষ পাশ' প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়নি। ডাঃ সাঈদ এনাম ভাই এর গবেশনা পত্রটি ছিল স্ট্রোক রোগীদের মানসিক সমস্যার প্রকোপের উপর। সেটিও ভূয়সী প্রশংসিত হয়। এর পর কনফারেন্স অরগানাইজিং কমিটির সেক্রেটারীর কাছে ক্রেস্ট গ্রহন করার মধ্য দিয়ে সেই দিনের অনুসঠানের সমাপ্তি হয়।

 

শেষ পর্ব ----------
ছোট ভাই(মামাতো) রাব্বি, যে গত প্রায় ৪ বছর আগে থেকে টোকিওতে একটি রেস্টুরেন্ট এর ম্যানেজার পদে চাকুরী করে, তার অনুরোধে ওর বাসায় ওর হাতে রান্না করা চিকন চালের ভাত, বিরিয়ানি, গরুর মাংস, ইলিশ মাছ ভাঁজা, আলু ভতা', ডাল,সবজি, সালাদ না খেয়ে পারলাম না।গত চার দিনে জাপানিজ মজাদার এটা সেটা খেয়েও কেন জানি একটা অতৃপ্তি অনুভব করছিলাম। রাব্বির হাতে খাঁটি বাংলা খাবার খেয়ে সেই তৃপ্তি পেলাম। বেলা ১ টার দিকে উদরপূর্তি করে আমরা রওয়ানা দিলাম আখিয়াবারা মাকে'টে। এটি মূলত ইলেক্ট্রনিক্স মার্কেট। সেখানেও দেখি চায়নাদের আধিপত্য। যেটি একটু দাম কম সেটিই দেখি মেড ইন চায়না। দোকানীকে জিজ্ঞেস করলাম তোমাদের মাকে'টে যে চায়না পন্য এটার মান কেমন? সে বললো নিঃশ্চিন্তে নিতে পারো। ভালো মানের পন্য ছাড়া এগুলি জাপানিজ মাকে'টে এলাউ করা হয়না। একটা মোবাইলের পাওয়ার ব্যাংক কিনলাম বাংলাদেশী ৩০০০ টাকায়। রাব্বী বল্লো ভাই ঘড়ি কিনতে চাইলে এয়ন শপিং মলে ভালো হবে। সপিং সেন্টারে ৫০০০ ইয়েন এর বেশী মূল্যের জিনিস কিনলে ৬.৫০% টোরিস্ট দের জন্য ডিস্কাউন্ট পাওয়া যায়। তাই বউ এবং বাচ্চাদের এর জন্য সাধ্যের মধ্যে একটা করে সূভেনুর হিসেবে জাপানিজ ঘড়ি কিনলাম। আর কিছু ছোট খাটো পছন্দের পন্য, চকলেটে কিনে টোকিও শহরে হাটতে থাকলাম। আগামীকাল ২১/১০/১৮ সকাল ১১ টায় সিংগাপুর এয়ারলাইন্স এ ঢাকায় ফেরার পালা। আজকের দিনটাই জাপানের শেষ দিন। হাটতে হাটতে বিখ্যাত স্টারবাক কফি শপ পেয়ে গেলাম। আমি প্রস্তাব দিলাম এখানে কফি খাওয়া যাক। রাব্বির বন্ধুসহ ৪ জনে ৪ মগ কফি খেলাম। জাপানিজ তরুণীর হাতে কফি বানানো একটা শিল্পের মতো মনে হলো। অনুমতি নিয়ে ছবি ও ভিডিও নিলাম। দাম প্রায় ১২০০ টাকার মত লাগলো। বাইরে তাকিয়ে দেখি ঝরঝরে বৃস্টি পড়ছে। টোকিও টাওয়ার সেখান থেকে হাটা পথ। বাজে বিকাল ৫ টা। ৭ টার পর টাওয়ারে উঠা যায়না। আমরা দেখলাম টোকিও শহরে বৃস্টিস্নাত বিকেলে আলো আঁধারির এক মায়াময় পরিবেশে একধরনের সাদা ছাতা নিয়ে লোকজন পথ চলছে। দেখে আমাদেরও আফসোস হলো! আহ! যদি ২ টা ছাতা থাকতো! রাব্বি ব্যাপারটা বুঝে ফেললো। কোথা থেকে চটকরে ২ টা সাদা ছাতা নিয়ে হাজির। সেই ছাতা দুটি আমি এবং সাঈদ ভাই বাংলাদেশে এনেছি। এবার আমরা ৪ জনে দুই ছাতা নিয়ে হাটা দিলাম টোকিও টাওয়ারের উদ্যেশ্যে। বৃস্টিতেও আমাদের মোবাইলে ছবি তোলা বন্ধ হলোনা। টাওয়ারের নীচে টিকিট কাউন্টারে যথারীতি লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট নিলাম। প্রতিজনে ৯০০ ইয়েন। টিকিট দেখিয়ে ভিতরে ঢুকতেই সুন্দরী তরুণী আমাদের গাইড করে টাওয়ারে উঠার লিফটে নিয়ে গেলেন। আমরা যথারীতি তার সাথে ছবি তুললাম। আমাদের বাংলাদেশী জেনে আনন্দের সাথে টাওয়ারের ইতিহাস বলতে লাগলো। মোটামুটি ২২ তলার উপরে এসে লিফট থামলো। সেখানে চার পাশে কাঁচের নিরাপত্তা প্রাচীর দেওয়া। অসংখ্য লোকজন সুউচ্চ টাওয়ার থেকে সন্ধার আলো ঝলমলে টোকিও শহর দেখছে। কেউ ভিডিও করছে কেউ ছবি তুলছে। সেখানে একটা ডিসপ্লে দেখলাম। সামনে দাড়ালে নিজের ছবি বিকৃত দেখায়। কিছুটা জম্বির মতো। ওরা নাম দিয়েছে লিভিং ডেড শো। টাওয়ার থেকে নামার সময় দেখলাম সূভেনুর মাকে'ট। সেখান থেকে ৫০০ ইয়েন দিয়ে একটি টোকিও টাওয়ারের রেপ্লিকা কিনলাম। এটা আমার একটা শখ। বিদেশ গেলেই সেই শহরের বিশেষ রেপ্লিকা কিনে আনি। যেমন সিংগাপুরের মারলিয়ন, কোয়ালালামপুরের টুইন টাওয়ার ইত্যাদি সংগ্রহে আছে। রাত ৮ টা বেজে গেছে। সাঈদ ভাই এর ব্যাচমেট ডাক্তার বান্ধবী তাঁর পরিবার নিয়ে টোকিও শহরের কাছেই চিবা এলাকায় থাকে।তাঁর বাসায় আজ রাতের খাবারের দাওয়াত দিয়েছে। আমার চিন্তা হলো দাওয়াত খেয়ে হোটেল রেডিসন নারিতায় কিভাবে ফিরবো। রাত ১০ টার পর সাটল বাস বন্ধ হয়ে যাবে। ট্যাক্সিতে ১ ঘন্টার রাস্তা ৫০০০ ইয়েন লাগবে। দেখা যাবে খাঁজনার চেয়ে বাজনা বেশী পড়ে গেছে। তাঁর বান্ধবী আশ্বস্ত করলো যত রাতই হউক তাঁর হাসবেন্ড তাদের গাড়ীতে আমাদের হোটেলে পৌছে দিবে। তাঁরা ভূরিভোজ খাইয়ে গাড়ীতে করে স্বামী -স্ত্রী, এক মেয়ে সহ হোটেলে রাত ১২.৩০ মিনিটে পৌছে দিয়ে এসেছিল। বিদায় বেলায় রাব্বির মতো তাঁদের চোখও ছলছল করছিল। বিদেশ থাকলে আপনজনদের দেখলে কি যে আনন্দ লাগে তা তাদের না দেখলে বোঝা যেতোনা। আমাদের ও বিষাদে মন ছেয়ে গেলো। চোখের কোনে পানি এলো।রাতেই লাগেজ গুছিয়ে এলার্ম দিয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম। আমার ফ্লাইট সকাল ১১ টায় এবং সাঈদ ভাই এর ফ্লাইট বিকাল ৫ টায়। তবুও সাঈদ ভাই বলেছিলো। এক সাথে নাস্তা করে আপনাকে বাসে তুলে দিবো। যথারীতি সাটল বাসে উঠে হাত নেড়ে সাঈদ ভাই এবং রেডিসন নারিতা হোটেলের লবিতে যিনি সাদা শুভ্র ড্রেসে আমাদের রিসিভ করেছিলেন সেই জাপানী ভদ্রলোক কে আরিগাতু গোজাইমাস্তা বলে বিদায় জানালাম। কেন জানি মনে হচ্ছিল খুব তাড়াতাড়ি সফরটা শেষ হলো। কেন যে আর ৩ দিন বেশী ছুটি মঞ্জুর হলোনা! সিংগাপুর এয়ারলাইন্স এ আবারো ৬ঘন্টা ৩০ মিনিট ফ্লাইটে উড়ে সিংগাপুর আসলাম। এবার কিন্ত ঢাকায় ফেরার তাড়া অনুভব করলাম। ৩ ঘন্টার ট্রাঞ্জিট আর সহ্য হচ্ছিল না। রাত ১২.৩০ মিনিটে হজরত শাহজালাল ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট, ঢাকায় নিরাপদে পৌছালাম। এর মধ্য দিয়েই স্বপ্নের জাপান সফর শেষ হলো।

 

______________________________

ডা. মোহাম্মদ জোবায়ের মিয়া
সহকারী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান
মনোরোগ বিভাগ
শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ, গাজীপুর।

আপনার মতামত দিন:


ভ্রমণ এর জনপ্রিয়