Ameen Qudir
Published:2016-11-15 16:12:04 BdST
নারী ডাক্তারদের জীবনসংগ্রামএফসিপিএস করায় ডিভোর্স
ডা. ফাতেমা জোহরা
____________________________
ইঞ্জিনিয়ার ছেলের পরিবার কেবল বাচ্চার মা চেয়েছিলো, ঘরের কাজ করা ছেলের বউ চেয়েছিলো। বলতো সংসার করো পড়তে হবে না। বউ শাশুড়ি যুদ্ধ হয়েছিলো পোস্টগ্রাজুয়েশন করা নিয়ে। ডিগ্রি কমপ্লিট হয়ে গেলো, শাশুড়ি মা তার বউ সাজিয়ে ঘরে আনা পরের মেয়েকেও ঘরহীন করে দিলো।
প্রতিটা মেডিকেলে মেয়েদের সংখ্যা ছেলেদের চেয়ে বেশি থাকে। পাশ করার সাথে সাথে কিংবা আগেই অধিকাংশের বিয়ে হয়ে যায়। এরপর অধিকাংশই ঘর সংসার বাচ্চাকাচ্চা নিয়ে ব্যতিব্যস্ত হয়ে যায়। খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে পড়াশোনা চালায়। যে স্বপ্ন নিয়ে সাদা এপ্রন গায়ে দিয়েছিলো, সে স্বপ্ন অনেক ক্ষেত্রেই কেবল লেকচারার কিংবা বউ শাশুড়ি আত্নীয় স্বজনের ব্লাড প্রেশার মেপে কাটিয়ে দেয়। যে ষোল আনা সংখ্যক মেডিকেলে পড়ে তার চার আনা পোস্ট গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করে।
কারন সমাজ খুব আহ্লাদে ডাক্তার বউ ঘরে তুলতে চায়। কারন আত্নীয় কূলে গল্প করে গলাটা উঁচু করা যায়। শেষ বয়সে সার্বক্ষণিক সেবা পাওয়া যায়। কিন্তু পরবর্তীতে পড়তে দিতে যত আপত্তি। প্র্যাকটিস করতে যেতে দিতে যত আপত্তি। অথচ মেয়ে মানুষের জন্য ডাক্তারের কাছে গেলে মেয়ে ডাক্তার না পেলে ছেলে ডাক্তার দেখলেও অনেক আপত্তি।
অর্থের আভিজাত্য দেখে বিয়ে হয়, ছেলের কাগুজে সার্টিফিকেট দেখে মন সায় দেয়। কিন্তু মেয়েকে ঘরের ত্রিসীমানায় মাছের ঘেরের মাঝে আটকে রাখার সমাজের মানসিকতা এখনো কত ঘরে বেঁচে রয়।
বিয়ের বাজারে চেহারা যেমনই হোক, ডাক্তার পাত্রীরা ভালো দামে বিক্রি হয়। সাথে সাথে স্বপ্ন গুলোও অনেকেরই পুরোনো খবরের কাগজের মত কেজি দরে বিক্রি হয়ে ঠোঙা হয়ে রয়। একটি সাদা এপ্রন, আর একটি স্টেথোস্কোপ এর হাহাকার চারদেয়ালের বদ্ধ রুমে দীর্ঘশ্বাসে ভারী হয়ে সেলফের তাকে পড়ে রয়।
_______________________
লেখক : ডা. ফাতেমা জোহরা
সুলেখক। পেশায় চিকিৎসক।
MD psychiatry ,National Institute of Mental Health
প্রাক্তনী : National Institute of Mental Health and USTC, Chittagong
আপনার মতামত দিন: