Ameen Qudir
Published:2017-06-11 17:14:56 BdST
চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্ন দেখতেই পারে বাংলাদেশ
ডা. আশীষ দেবনাথ
___________________________________
আমরা যারা ৮০'র দশকের শুরুতে রেডিওতে ক্রিকেট শুনতে শুনতে বড় হয়েছি তাদের কাছে বাংলাদেশ ক্রিকেট টিমের এই সাফল্য আসলে সেদিনের কথা ভাবলে রুপকথার মতোই লাগে।
বাংলাদেশ তখন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলতো না বলে সেসময় এদেশের সমর্থকরা মূলত তিনভাগে বিভক্ত ছিল। অধিকাংশই পাকিস্তানের সমর্থক ছিল। বাকিরা মোটাদাগে দুইভাগে মানে ভারত এবং ওয়েষ্ট ইন্ডিজ। ওয়েষ্ট ইন্ডিজ তখন দৌর্দন্ড প্রতাপশালী দল।
তাদের সমর্থন করা এসব মধ্যপন্থীদের ওয়েস্ট ইন্ডিজ সমর্থনের পক্ষে যুক্তিও ছিল, তারা কালো, দাস, নিপীড়িত.......।
বাংলাদেশ ১৯৮৬ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলা শুরু করে পাকিস্তানের সাথে ম্যাচ খেলে। সেই ম্যাচে পাকি কাপ্তান ইমরানের অবজ্ঞার কথা টাইগার কাপ্তান গাজী আশরাফ লিপুর কখনো ভুলায় নয়। ১৯৮৮ এর এশিয়া কাপের কথা স্পষ্ট মনে পড়ে। আকরাম, আমিনুলের অভিষেকও ছিল সেটি। ভারতের সাথে বাংলাদেশ শুরুতে ব্যাট করে ৫০ ওভারে ৮ উইকেটে ৯৯ রান করে। সিধু একাই ৭৬ করেছিল। ১০ উইকেটে হার। আমরা তবু খুশী মনে টিভি হলরুম ছেড়েছিলাম কারন বাংলাদেশ সব উইকেট হারায়নি, পুরো ৫০ ওভার খেলেছিল। এই তৃপ্তি নিয়েই হোষ্টেল রুমে ফিরেছিলাম। আজ ভাবতে গেলে অদ্ভুত লাগে।
এরপর ১৯৯৭ সালে আইসিসি ট্রফিতে আকরাম খানের ৬৭ রানের মহাকাব্যিক ইনিংসে ভর করে ১৯৯৯ বিশ্বকাপেরর টিকেট। ক্রিকেট বিধাতা ইমরানের অপমানের প্রতিশোধ নিতে দেরী করেন নি। পাকিস্তান বধ দিয়ে টাইগারদের বিজয় নিশান উড়ানো শুরু। এদেশের মানুষের ক্রিকেটের জোয়ার এবং পারফরম্যান্স মিলিয়ে ২০০০ সালের টেষ্ট স্ট্যাটাস হয়ে ওয়ানডেতে একে একে সব দলকেই হারালো বাংলাদেশ। আজকে বাংলাদেশ ওয়ানডে র্যানকিং এ ৬ষ্ট। আসলে আমাদের খেলাপাগল ৮০ দশকের প্রজন্ম টাইগারদের বর্তমান সাফল্যে আবেগে আপ্লুতই শুধু নয় রোমাঞ্চিত, উত্তেজিতও। কারন ইতিহাসের বাঁকে বাঁকে কত গঞ্জনা যে সইতে হয়েছিল এই টাইগারদের।
শেষ মূহুর্তে একটা কথা বলি যারা এই টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন হবে ফেসবুকারদের এমন আশাবাদী স্ট্যাটাস দেখে চোখ কপালে তুলছেন, তারা শুনে রাখুন ১৯৮৩ সালের টুর্নামেন্টে সে সময়ের ক্রিকেট ডাইনোসর লয়েডের ওয়েষ্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে ভারতের বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হওযাটা এর থেকে বড় মিরাকল ছিল।
ক্রিকেট মনস্তাত্ত্বিক গেম মূলত। এই টুর্নামেন্টেই অস্ট্রেলিয়াকে সিংহ ভেবে টাইগাররা গুটিয়ে গিয়েছিল। আমাদের হারাবার কিছু নেই। নিঃশঙ্কচিত্তে বুদ্ধিমত্তার সহিত খেলোয়াড়ী কৌশলের প্রয়োগই জয়ের মূলমন্ত্র। থ্রি চিয়ার্স ফর মাশরাফী বাহিনী। শুভকামনা।।
____________________________
লেখক ডা. আশীষ দেবনাথ
বিশেষজ্ঞ এনেসথেসিওলজিষ্ট, নোয়াখালী। সিএমসি ২৮।
আপনার মতামত দিন: