Ameen Qudir
Published:2016-12-05 05:45:01 BdST
এক ছেলে এমবিবিএস, দুই ছেলে বিসিএস : তিনি রিকশা অলা
ডা. জবিউল হোসেন খান
___________________________
এই মহান মুখটা চিনে রাখুন।
কে যে কার গৌরব; সেটা বলাই মুশকিল।
খুলনার রিকশাচালক আব্দুল খালেক শেখ । বয়স কম নয়। পচাত্তুর ছাড়িয়ে। তার গর্বের পেশা রিকশা চালনা। বললেন, এই রিকশাই আমার জীবিকা। এই শ্রমই আমাকে দিয়েছে সম্মান। কখনওই আমি রিকশা ছাড়তে পারব না।
প্রতিটি পয়সা আমি খেটে কামাই করেছি। কোন অসৎ উপায় করি নি। কারও কাছে টাকা ধারকর্জ করি নি। হাতও পাতি নি।
আপনি যদি খুলনা নগরীর বাসিন্দা হন; কিংবা যদি বেড়াতে যান সেখানে; তাহলে অবশ্যই ছবির এই মুখটা চিনে রাখুন।
সম্মান জানাতে তাকে ভুলবেন না।
অবশ্য তার অমায়িক ব্যবহারে তিনি যে আপনার শ্রদ্ধা ভালবাসা কেড়ে নেবেন; সেও বলা বাহুল্য।
এই পেশাজীবি খালেক শেখের বিশেষত্ব কি!
বিশেষত্ব এই যে, তিনি মাথা নত করেন নি। বুক চিতিয়ে রিকশা চালিয়েছেন। শ্রম দিয়েছেন অন্য পেশায়। এবং জীবনভার সামনে জীবনভর সংগ্রাম চালিয়ে মানুষ করেছেন তার সন্তানদের।
তার সন্তান একজন এম বি বি এস ডাক্তার। অন্য দুজন সরকারি পদস্থ চাকুরে। সর্বোচ্চ প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা বিসি এস দিয়ে তারা সেবা করছে রাষ্ট্রের।
খালেক শেখের বাড়ি বাগেরহাটে। থাকেন খুলনায় । তিন ছেলের বাবা। স্ত্রী ফাতেমা শেখ এক সময় খুলনার বন্ধ হয়ে যাওয়া দাদা ম্যাচ ফ্যাক্টরিতে কাজ করতেন।
বড় ছেলে টুটুল শেখ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইকনোমিক্সে পড়েছে। ৩৪তম বিসিএস দিয়ে গাইবান্ধা জেলায় এখন পোস্টিং।
মেজ ছেলে ইব্রাহিম শেখ খুলনার সরকারি বিএল কলেজে পড়েছে অনার্স, মাস্টার্স। অর্থনীতিতে। ৩৬তম বিসিএস পাস করে ঢাকায় ।ছোট ছেলে সোহরাব শেখ । খুলনা মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস শেষ করে ইন্টার্ন করছেন।
অবিশ্বাস্য মনে পারে পাঠকের। তাই নাম ভেঙেই বলালাম।
খালেক শেখ বলেন, নিজে শিক্ষিত হতে পারি নি। ছেলেদের পড়াশোনার ব্যাপারে কোন ছাড় দেই নি। গতরে খেটেছি। পড়িয়েছি। মাথা উচু করে চলেছি।
সন্তানদের পড়াশোনায় স্ত্রী আমাকে সহযোগিতা করেছে।
_____________________________
ডা. জবিউল হোসেন খান। খুলনা একটি হাসপাতালে কর্মরত।
আপনার মতামত দিন: